দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে? করোনার কোপে পিছিয়ে যাবে রাজ্যের আসন্ন পুরভোট? সেই সম্ভাবনা আরও জোরালো হল। বিজেপি আগেই জানিয়েছিল, তারা করোনার সংকটজনক পরিস্থিতিতে পুরভোট পিছনোর জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানাবে। এ বার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে তৃণমূলও। তারা জানিয়েছে, কমিশনের কাছে তারা পুরভোট পিছনোর আর্জি জানাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সব দলকে একজোট হয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে তৃণমূল।
কলকাতা ও হাওড়া-সহ রাজ্যের সব পুরসভায় নির্বাচনের আগে সোমবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তার প্রাক সন্ধ্যায় রবিবার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস রীতিমতো প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিল, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেভাবে বিশ্বজোড়া মহামারীর আকার নিয়েছে, তাতে ভোট পিছোনো হোক। তৃণমূলের বক্তব্য, ভোট আসবে যাবে। কিন্তু মানুষ ও সাধারণ জনজীবন যখন বিপন্ন তখন রাজনীতিকে পিছনের আসনে রাখা উচিত বলেই তাদের মত।
নবান্ন সূত্রে খবর, কলকাতা ও হাওড়া কর্পোরেশনে ভোটের নির্ঘণ্ট এক প্রকার প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ঠিক ছিল যে আগামী ১৮ তারিখ সাংবাদিক বৈঠক করে ভোটের দিন ঘোষণা করা হবে। তার আগে ১৬ মার্চ সোমবার সর্বদল বৈঠক হবে। ভোট হবে ১৫ এপ্রিল।
কিন্তু এরই মধ্যে গতকাল থেকে রাজ্যে অন্যতম বিরোধী দল বিজেপির নেতারা বলতে শুরু করেন যে করোনাভাইরাসের প্রকোপ যেরকম ছড়িয়েছে তাতে ভোট হবে কী করে? বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় রাজ্যের সব স্কুলে ছুটি দিয়ে দিয়েছে সরকার। বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভাও স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ভোট করানো মুশকিল। কারণ, ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েও সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো আন্দাজ করতে পারছিলেন যে শুধু বিজেপি নয় বিরোধীরা সমষ্টিগত ভাবে ভোট পিছোনোর দাবি জানাবে। সেই পরিস্থিতি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছেও কোনও সঙ্গত জবাব থাকবে না। তা ছাড়া তৃণমূলের একার পক্ষে ভোট করানোর দাবি জানালে তাতেও নেতিবাচক বার্তা যাবে। বরং রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ভোট পিছনোর বার্তা দিলে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া যেতে পারে।
এও বোঝানো যেতে পারে এই সংকটের পরিস্থিতিতে সরকার ও দল মানুষের পাশে রয়েছে।
দেখুন তৃণমূলের টুইট।
Statement by All India Trinamool Congress #COVID19 pic.twitter.com/4CCzu4HWIs
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) March 15, 2020
এখন প্রশ্ন হল, তা হলে পুরভোট কবে হবে?
নবান্নে সূত্রে খবর, আগে ঠিক হয়েছিল ১৫ এপ্রিল শুধু কলকাতা ও হাওড়া পুরসভায় ভোট হবে। বাকি পুরসভাগুলোয় ভোট হবে রমজান মাসের পর, অর্থাৎ জুন মাসে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার ভোটও রমজান মাসের পরই হবে। তবে সেক্ষেত্রে একটা সমস্যা রয়েছে। এমনিতে হাওড়া পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এক বছর আগেই সেখানে প্রশাসক বসানো হয়েছে। কলকাতা পুরসভার মেয়াদও এপ্রিলে শেষ হয়ে যাবে। সেই পরিস্থিতিতে এক মাসের জন্য হলেও প্রশাসক বসানো হতে পারে কলকাতা পুরসভায়।