পুরভোটের আগেই কি তৃণমূলে ফিরছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়?

0
831

দেশেরসময়:-রাজ্য রাজনীতিতে আবারও আলোচনার শিরোনামে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও প্রাক্তন দমকল মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় ওরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক সময়কার স্নেহের কানন।কয়েক মাসের ব্যবধানে আবার তিনি দল বদল করতে যাচ্ছেন বলে রাজ্য জুড়ে প্রবল গুঞ্জন।

তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়েছিলেন এবার আবার বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়,আপাতাত এটাই রাজ্যের বড় খবর।বিজেপিতে গিয়ে তিনি যোগ্য সম্মান পান নি বার বার গত কয়েকমাস ধরে সেই অভিযোগ করে গেছেন শোভন ও তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে এগিয়ে এসেছিলেন মুকুল রায়ও কিন্তু তিনিও শোভনবাবুকে বিজেপিতে সক্রিয় করতে পারেন

নি।শোভন ও বৈশাখী কার্যত গত কয়েক মাস ধরে বিজেপিতে একেবারে নন এ্যক্টিভ মেম্বার হয়েই থেকে গেছিলেন।রাজ্য বিজেপির একাংশ চায় নি শোভন বিজেপিতে সক্রিয় হয়ে উঠুন।কার্যত শোভন ও তাঁর বান্ধবীকে কোন কাজে ব্যবহারই করেনি বিজেপি।এভাবে বসে থাকলে তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার যে একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে তা বুঝতে পেরে পুরভোটের আগেই একটা হেস্ত নেস্ত করে ফেলার জন্য বার্তা দিতে থাকেন শোভন বাবু।শোনা যাচ্ছে প্রথমে তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন যে তাকে যোগ্য মর্যাদা না দিলে তিনি তার ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে শুরু করবেন।

কয়েক মাস আগে বিজেপি নেতাদের এই বার্তা দিয়েও কোন সরাহা বা ফল না পেয়ে একরকম মরিয়া হয়েই শোভন তাঁর বান্ধবীকে কাজে লাগান তৃমমূলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য।সূত্র বলছে প্রথম দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও পুরভোটের মুখে আচমকা ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেন৷

প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ হল পুরভোটের আগে শোভনকে দলে ফিরিয়ে নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বকে এই বার্তা দিয়ে দেওয়া যে এ রাজ্যে বিজেপি দল ভাঙিয়ে কিছু করতে পারবে না।বিজেপি দল ভাঙালেও আবার সবাই দলে ফিরে আসছে শুরু করেছে।শোভন চট্টোপাধ্যায় হেভিওয়েট নেতা,তাকে নিয়ে ধরে না রাখতে পারা বিজেপির চরম ব্যর্থতা বলে চিহ্নিত হবে রাজ্যে।একই সঙ্গে বিজেপিতে যাবেন বলে যারা ভাবছেন তারাও এর ফলে গুটিয়ে যাবে।সব ভেবে চিন্তেই মমতা শোভনকে ফিরিয়ে নিতে চাওয়ার প্রয়াসে সাড়া দিয়েছেন।

শোনা যাচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্তে কথা বলে বৈশাখীদেবী সবটাই পাকা করে ফেলেছেন তারপর মমতা নিজে বৈশাখীকে নবান্নে ডেকে বিষয়চি চুড়ান্ত করে ফেলেছেন।তৃণমূলের অন্দর মোহলের খবর বিষয়টিতে একটু মুষড়ে পড়েছেন শোভনের স্ত্রী রত্নাদেবী।রত্নাদেবীর অভিযোগ ছিল শোভন তার বিশ্বাস নিয়ে খেলা করেছেন।রত্নাদেবীর অভিযোগ ছিল মূলত শোভনের বান্ধবী বৈশাখীর বিরুদ্ধেই।

সেই বৈশাখী এখন শোভনকে নিয়ে আবার তৃণমূলে এলে রত্নাদেবীর আক্ষেপ হবারই কথা।শোনা যাচ্ছে মমতা স্বয়ং রত্নাকে আশ্বস্ত করেছেন তার কোন অমার্যাদা হবে না বলে।শোনা যাচ্ছে শোভন তৃণমূলে ফিরলেও এবার পুরভোটে শোভনের ওয়ার্ডে রত্নাদেবীই তৃণমুলের প্রর্থী হবেন সেই শর্তেই শোভনকে আবার দলে ফেরাচ্ছে তৃণমূল।

এখন প্রশ্ন হল তাই যদি হয় তবে তৃণমূলে ফিরেও শোভনের রাজনৈতিক ভবিষ্যত যে উজ্জ্বল হবে তার নিশ্চয়তা কোথায়?এর উত্তর হিসেবে যা শোনা যাচ্ছে তা হল শোভনবাবু নিজেই আর ভোট যুদ্ধে না থেকে সংগঠক হিসেবে আবার কাজ শুরু করতে চান,তিনি মনে করেন তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা তাকে আবার মমতার কাছের মানুষ করে তুলবে।আবার নতুন করে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করতে চান শোভন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে মমতা শোভনকে দলে ফিরিয়ে নিয়ে অনেককেই একটা বার্তা দিতে চাইছেন যে বিজেপি যে তৃণমূল থেকে লোক নিয়ে ব্যবহার না করে তার রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করতে শুরু করেছে সেটা সবার কাছে পরিষ্কার করে দেওয়া।এর ফলে পরে কেউ আর বিজেপিতে যাওয়ার সাহস করবে না।

কেউ কেউ এমনটাও বলছে এ রাজ্যে বিজেপির যে কোন সম্ভাবনা নেই তা পরিষ্কার করে দিতেই শোভনকে আবারও দলে ফিরিয়ে নিতে চলেছেন মমতা।প্রসঙ্গক্রমে কেউ কেউ আবার মকুল রায়ের উদাহরণ টেনে বলছেন রাজ্য বিজেপিতে মকুল রায়ের মাপের বুদ্ধিমান ও কৌশলী একজন নেতাও না থাকা সত্ত্বেও যেভাবে মুকুল রায়কে এখনও পর্যন্ত কোন পদ না দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে তাতে পরিষ্কার এ রাজ্যে বিজেপি কিছু করতে চাইছে না,তাই শোভনবাবুদের ফিরে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।সবটাই বোঝাপড়ার খেলা।

তবে রাজনৈতিক ব্যাখ্যা যে যেরকমই দিক না কেন এটা পরিষ্কার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

Previous articleসোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর মন্তব্য করায় বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের মহিলার
Next articleYour Shot 📷 Spider hunter

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here