পাহাড়ের হাসিও ম্লান,সেখানেও খেসারত দিলেন দিদি

0
647

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃপাহাড়ে ক্ষমতাসীন বিনয়পন্থী মোর্চা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এ বার। তা সত্ত্বেও রোখা গেল না বিজেপির প্রার্থী রাজু বিস্তকে। প্রায় তিন লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে তিনি হারিয়ে দিলেন দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অমর সিং রাইকে। একই সঙ্গে রাজ্যের শাসকদলের হার হল দার্জিলিং বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনেও। বিনয়পন্থী মোর্চার প্রার্থী খোদ বিনয় তামাং এই আসনে হেরে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী নীরজ জিম্বার কাছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাহাড়ের নাড়ি বুঝতে না পেরেই নাকি মুখ থুবড়ে পড়ল তৃণমূল ও বিনয়পন্থী মোর্চার জোট। ২০১৭ সালে পাহাড়ে অশান্তির শেষ লগ্নে বিমল গুরুঙ, রোশন গিরিরা পাহাড় ছাড়তেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তা নিয়েছিলেন বিনয় তামাং ও অনিত থাপারা। অভিযোগ, উন্নয়নের মন্ত্রে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা হয় জাতিসত্তা, পুলিশ ও প্রশাসনিক হয়রানি, আন্দোলন চলাকালীন পাহাড়ে মৃত্যুর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোকে। যা কিনা পাহাড়ের মানুষ মেনে নেয়নি। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাহাড়ের প্রধান দলের আত্মসমর্পণকে ভাল চোখে দেখেনি পাহাড়বাসী।

রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতার পর যেভাবে বিনয় তামাং অনিত থাপারা সমতলের বাঙালি নেতাদের কাছে নিজেদের সঁপে দিয়েছিলেন, তাও না পসন্দ ছিল পাহাড়ের মানুষের। তার উপরে বিমল গুরুংকে পাহাড় ছাড়া রাখতে একের পর এক মামলায় জড়িয়ে দেওয়া, প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিমলপন্থীদের যেনতেন প্রকারেণ গ্রেফতার করার মতো বিষয়গুলি নিয়েও মনে ক্ষোভ পুষে রেখেছিলেন পাহাড়বাসী। তাই উন্নয়নের কথা বলে সেই ক্ষোভকে সামাল দিতে পারলেন না বিনয় তামাং-‌তৃণমূল জোট।

২০০৯ থেকে বিজেপির দু’‌দুজন সাংসদ যশবন্ত সিনহা ও সুরিন্দর সিংহ আলুওয়ালিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ থাকলেও তা ভোটের বাক্সে প্রতিফলিত হল না। গোর্খাল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি পরপর দু’‌বার দার্জিলিং আসনে জিতলেও সেই দাবি পূরণ হয়নি। আগের সাংসদ সুরিন্দর সিংহ আলুওয়ালিয়া নিজে তো শেষ দু’‌বছর পাহাড়ে পা পর্যন্ত রাখেননি। এবারের নির্বাচনে পৃথক রাজ্যের প্রতিশ্রুতিও দেয়নি বিজেপি। তাই পরিস্থিতি আপাত ভাবে অনূকুলে থাকা সত্ত্বেও তা কাজে লাগাতে পারল না বিনয় শিবির।

বিরোধী রাজনীতিকদের একটা অংশ মনে করছে বিমল গুরুঙ যেখানেই থাকুন তিনিই যে পাহাড়ের অবিসংবাদি নেতা তা বুঝিয়ে দিয়েছেন পাহাড়বাসী। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জিএনএলএফের সাংগঠনিক শক্তি। বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত গুরুং অনুগামীরা বিজেপির হয়ে প্রচারে নামতে না পারলেও জিএনএলফ তার সাংগঠনিক শক্তিতে প্রচারের কাজ চালিয়েছে। মানুষের কাছে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছে। এই ভোট যতটা না বিজেপির প্রতি আস্থা তার থেকে ঢের বেশি বিনয় তামাং ও তৃণমূলের রাজনীতির প্রতি অনাস্থা।

ভোটের ট্রেন্ড বোঝা যেতেই ভিডিও বার্তায় পাহাড়ের জনগনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিমল গুরুঙ। তাই ফের পাহাড়ে জল্পনা, এ বার কি তাঁর ঘরে ফেরার পালা?

Previous articleবনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর
Next articleকোন জাদুতে সফল চৌকিদার মোদী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here