নারদ কাণ্ডে জামিন মঞ্জুর নিয়ে জট: ৪ নেতা-মন্ত্রীকে থাকতে হবে সিবিআই নজরে গৃহবন্দি

0
679

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নারদ মামলায় খানিকটা স্বস্তি পেলেন চার হেভিওয়েট। জামিন পেলেন ফিরহাদ হাকিম,মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়। শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন চারজন। তবে তাঁদের গৃহবন্দি থাকতে হবে। চারজনকেই সিবিআই-এর নজরে গৃহবন্দি থাকতে হবে।

নারদ কাণ্ডের পরতে পরতে যেন নাটকীয়তা। শুক্রবার হাইকোর্টের রায়ের পরেও সেই নাটকীয়তা যেন অব্যাহত রইল।

আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, এদিন হাইকোর্টের শুনানির পর চূড়ান্ত রায়ে দুই বিচারপতির মধ্যে মতান্তর তৈরি হয়েছে। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ববি হাকিম ও দুই নেতা মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করার পক্ষে রায় দিয়েছেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের তাতে সায় নেই। ফলে আপাতত এই রায় ঘোষণা হয়েছে যে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হলেও এই চার নেতার জামিন মঞ্জুর হবে। তবে তাঁদের গৃহবন্দী হয়ে থাকতে হবে।

তা হলে কী ভাবে মামলার নিষ্পত্তি হবে ?
এই মামলার শুনানি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চে হচ্ছিল। ফলে মামলার নিষ্পত্তির জন্য এখন তিন সদস্যের বা পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হতে পারে।
কবে সেই বেঞ্চ গঠন করা হবে তা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জানাবেন।

এই অন্তবর্তী রায়ের অর্থ পরিষ্কার। তা হল সুব্রত, ববি সহ চার নেতাকে জেল হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। তাঁরা বাড়ি যেতে পারবেন। কিন্তু তাঁদের হাউস অ্যারেস্টে থাকতে হবে। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেই নিয়ম বহাল থাকবেন। চার জনের মধ্যে তিন জনই এখন হাসপাতালে রয়েছেন। হাসপাতালে থাকা মানেও এক প্রকার গৃহবন্দিই থাকা।

একমাত্র পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। সেখান থেকে আপাতত জামিন পেয়ে বাড়িতে যেতে পারবেন পরিবহণ মন্ত্রী। তবে তাঁকে গৃহবন্দি থাকতে হবে।

বস্তুত করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় চার নেতার জামিন মঞ্জুর করার পক্ষে রায় দিয়েছেন। শুনানির সময়েও তিনি সিবিআইয়ের আইনজীবীকে বারবার এই সংক্রান্ত প্রশ্নই করেছিলেন। তা হল, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গ্রেফতার কি খুব জরুরি ছিল? কারণ নারদ কাণ্ডের তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে। তার চার্জশিট পেশ হচ্ছে। তদন্ত যখন শেষ হয়ে গিয়েছে, তখন গ্রেফতারের কি প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে নারদ মামলায় ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও মদন মিত্রকে গ্রেফতার করে সিবিআই। চারজনকে সকালে বাড়ি থেকে নিজাম প্যালেসে তুলে নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে নিজাম প্যালেসে অবস্থানে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘আমাকেও গ্রেফতার করুন’, এই কথাই সিবিআই আধিকারিকদের বলেন মমতা। সেদিন প্রায় ৬ ঘণ্টা পর নিজাম প্যালেস ছাড়েন মুখ্যমন্ত্রী। রাতে নিম্ন আদালতে চার হেভিওয়েটের জামিন মঞ্জুর হয়ে যায়। কিন্তু, রাতে এই ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয়। নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যায় সিবিআই। নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। সেদিন রাতে চারজনকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

কিন্তু এ নিয়েই মতভেদ তৈরি হয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের সঙ্গে। এখন দেখা যাক কতদিনে থার্ড বেঞ্চ তৈরি হয় ও মামলার পরবর্তী শুনানি কবে হয়।

Previous articleনারদ মামলা : জামিন পেলেন ৪ নেতা-মন্ত্রী, তবে থাকতে হবে গৃহবন্দি
Next articleভবানীপুর আসন থেকে পদত্যাগ করছেন বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, উপনির্বাচনে মমতাই কি প্রার্থী হবেন সেখানে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here