নাগরিকত্ব বিল বিক্ষোভে অসমে তীব্র প্রতিবাদ, পুলিশের গুলিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে তিন, জারি কার্ফু

0
321

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নাগরিকত্ব বিল বিক্ষোভে এবার গুলি চলল অসমের গুয়াহাটিতে। পুলিশের গুলিতে বৃহস্পতিবার তিন জন আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

গুয়াহাটির লাসিতনগরে গুলি চালানোয় মৃত্যু হয় দীপাজ্জ্বল দাসের। তিনি গুয়াহাটির সৈনিক ভবনের ক্যান্টিনের কর্মী। নিহত যুবকের বাড়ি অসমের ছয়গ্রামে।

গুয়াহাটিরই হাতিগাঁও এলাকার শঙ্করপথে পুলিশকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীরা টানা পাথর ছু়ড়তে শুরু করলে এক সময় গুলি চালায় পুলিশ। তাতে আরও এক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়। তৃতীয় বার গুলি চালানো হয়েছে গুয়াহাটিরই বৈশিষ্ট্যের নতুন বাজারে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘটনায় মৃতদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।গুয়াহাটিতে ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে কার্ফু।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিদ্ধান্ত হয়, অসমের অন্তত ১০টি জেলায় আরও ৪৮ ঘণ্টা ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। গুজব রুখতে বুধবার ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তপ্ত অসমে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব দেওয়া হয় সেনাবাহিনীকে। গুয়াহাটির ইউনিফাইড কমান্ডারের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে ওদালগুড়ি, শোণিতপুর , ডিব্রুগড়, ডিমহাস-সহ বেশ কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপারদের সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অসমের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তারা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্য পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আর নেই গোটা পরিস্থিতি। তাই আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব দেওয়া হোক সেনাবাহিনীকেই।

তিনসুকিয়ায় ১২ ঘণ্টার জন্য জারি হয়েছে কার্ফু। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৫টা থেকে শুক্রবার ভোর ৫টা পর্যন্ত তা জারি থাকবে।

গুয়াহাটির গণেশগুড়িতে বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশকের গাড়িতে হামলা হয়েছে। ইট, পাথর দিয়ে ডিজিপির কনভয়ে হামলা করে আন্দোলনকারীরা।

অসমের কামপুরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নতুন করে শুরু বিক্ষোভ শুরু হয়। দুপুরের দিকে একটি ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়েও চলে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। রুক্মিণী গ্রামে একটি সেতুর উপর সেনার কনভয়কে দু’দিক থেকে অবরুদ্ধ করেন একদল প্রতিবাদী। আটকে যায় সেনার কনভয় ।

বুধবার রাত থেকেই গুয়াহাটির রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন অন্তত দশ হাজার মানুষ। হাত কেটে রক্ত দিয়ে পোস্টার লিখে স্লোগান তোলেন ছাত্রছাত্রীরা। রাজধানী দিসপুরের সচিবালয়ের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে ফেলেন প্রতিবাদীরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বঙ্গাইগাঁও ও ডিব্রুগড়ে দু’কলাম সেনা মোতায়েন করা হয়। জোরহাটেও সেনা মোতায়েন করা হয়। ডিব্রুগড়ে জারি হয় ১৪৪ ধারা। সেখানে যে কোনও ধরনের জমায়েত, মিটিং, মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষোভের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ত্রিপুরাতও গুলি চালিয়েছে পুলিশ। ত্রিপুরায় নেমেছে আধাসেনা।

Previous articleনাগরিকত্ব বিল পাশ হতেই জরুরি বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী
Next articleনাগরিকত্ব বিল: সই করলেন রাষ্ট্রপতি,নতুন আইন কার্যকর বৃহস্পতিবার থেকেই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here