দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নন্দীগ্রামের তেখালিতে ৭ জানুয়ারি সভা করতে যাবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুদিন আগে কাঁথির সভা থেকে শুভেন্দু বলেছিলেন, “৭ তারিখে মাননীয়া যা বলে যাবেন, ৮ তারিখে ধরে ধরে সব জবাব দিয়ে দেব।”
শনিবার জানা গেল, “৮ তারিখে নন্দীগ্রামে বিজেপির সভায় শুভেন্দুর সঙ্গে থাকবেন মুকুল রায়ও।” ইতিমধ্যেই সৌগত রায়, ফিরহাদ হাকিমদের মতো তৃণমূলের নেতারা বলতে শুরু করেছেন, শুভেন্দু মীরজাফর, জগৎ শেঠ ইত্যাদি প্রভৃতি। এও বলা হচ্ছে নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ছিলেন সব। শুভেন্দু কেউ নন। ৭ তারিখে শুভেন্দুর খাসতালুকে দিদি আরও আক্রমণের মাত্রা বাড়াতে পারেন নব্য বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে।
অনেকের মতে, মুকুল রায় হয়তো নন্দীগ্রামে গিয়ে তারই জবাব দেবেন। কারণ নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় মুকুলবাবু ছিলেন তৃণমূলের নম্বর টু। তিনিই মাইক হাতে বলবেন, সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুভেন্দু কী ভূমিকা নিয়েছিলেন। এও বলতে পারেন, সেই সময়ে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের ভূমিকা কী ছিল। আসলে কারা দিনে রাত মাথায় করে আলপথ, ক্ষেত পেরিয়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
শুভেন্দু মন্ত্রিসভা ছাড়ার পর থেকেই মুকুল রায় বলছিলেন, “শুভেন্দু গণ আন্দোলন থেকে উঠে আসা নেতা। তিনি এলে বাংলায় পরিবর্তনের আন্দোলন জোরদার হবে।” এদিন মুকুল রায় বলেন, “নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা ছিলেন শুভেন্দুই। সেটা শুধু জমি রক্ষা বা সংখ্যালঘুদের উপর সিপিএমের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল না। বাংলায় পরিবর্তনের জন্য তার একটা বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রভাব ছিল। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পরপরেই ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল দুটি জেলা পরিষদ দখল করেছিল।
এক হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দুই দক্ষিণ ২৪ পরগনা। পূর্ব মেদিনীপুরে জয়ের জন্য যেমন শুভেন্দুর ভূমিকা অনস্বীকার্য তেমন নন্দীগ্রামে জমি কেড়ে নেওয়া, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, কৃষকদের উপর অত্যাচারের প্রভাব পড়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।” মুকুলবাবুর কথায়, “সেবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ দখল নন্দীগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল না।”
তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই বলা শুরু হয়েছে শুভেন্দু ২০০১-এর বিধানসভায় ও ২০০৪-এর লোকসভায় দাঁড়িয়ে হেরেছিলেন। বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে, এতই যদি জোর তাহলে তখন জিতলে না কেন। পাল্টা শুভেন্দু বলেছেন, কী ভাবে ২০০১ সালে মুগবেড়িয়ায় কিরণময়নন্দের ভাই চৈতন্যময় নন্দ শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্র্ত্যাহার করে নেন। ১৫ দিন আগে প্রার্থী হয়ে তখন দলের সম্মান বাঁচিয়েছিলেন তিনি। তা ছাড়া ২০০৪-এও লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী হতে চাননি। ফলে সব মিলিয়ে ৭ এবং ৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের মাটি দেখতে চলেছে নজিরবিহীন রাজনৈতিক বাকযুদ্ধ ৷