দেশের সময় রবিবার বিকেল ৫টা নাগাদ নন্দীগ্রামে ১৭ রাউন্ড গণনা শেষ হতে না হতেই সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়ে দিয়েছিল, হাইভোল্টেজ সেই লড়াইয়ে জিতেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারীকে তিনি পরাস্ত করেছেন ১২০০ ভোটে।
কিন্তু এক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মহানাটকীয় পরিবর্তন ঘটে গেল। শুভেন্দুর তরফে পুনর্গণনার দাবি জানানো হয়। নতুন করে গণনার পর দেখা যায় ১৬২২ ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অর্থাৎ সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেনি। তবে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে কঠিন লড়াই করেও নন্দীগ্রামে পরাস্ত হয়েছেন মমতা।
এ ব্যাপারে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দিদি। তাঁর কথায়, আমরা ২০০-র বেশি আসনে জিতেছি। একটা আসনে হারা জেতা বড় ব্যাপার নয়। ওরা একবার ঘোষণা করে দিয়েছিল যে আমি জিতে গেছি। এখন বলছে হেরে গেছি। এটা কী করে হয় জানি না। তবে ওখানকার মানুষ যে রায় দিয়েছেন তা মেনে নিচ্ছি। ওখানে ভোট গণনা যাতে রিভিউ করা হয় সেই দাবি জানাব। দরকার হলে আদালতেও যাব।
এদিন নন্দীগ্রামে ভোট গণনায় সকাল থেকে এগিয়ে ছিলেন শুভেন্দু। গোড়ায় একের পর এক রাউণ্ডে তার জয়ের ব্যবধান বাড়ছিল। এক সময়ে তা ১০ হাজার পেরিয়ে যায়। কিন্তু পরের রাউন্ডগুলিতে ব্যবধান কমতে থাকে। এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এগিয়ে যান। ফের তাঁকে পিছনে ফেলে ৬ ভোটে এগিয়ে যান শুভেন্দু। তার পর বিকেল পাঁচটা নাগাদ হঠাৎই সংবাদসংস্থার একটি খবর রটে যায়। বলা হয়, দিদি ১২০০ ভোটে জিতে গিয়েছেন।
কিন্তু সেই খবর যখন রটে যায়, তখনও দেখা যায় দুর্গ আগলে বসে রয়েছেন শুভেন্দু। তার কিছু পরই জানা যায় যে ১৬২২ ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামে জিতেছেন তিনিই। নন্দীগ্রামে এবার গোড়া থেকেই ভোট ছিল রোমহর্ষক। শেষটাও সে ভাবেই হল।
বাংলায় হ্যাটট্রিকের পর প্রথমবার জয় নিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কালীঘাটে বাড়ির সামনে মাইক হাতে মমতা বললেন, ‘সকলকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সকলে ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। করোনা সুরক্ষাবিধি মেনে চলুন। বিজয় মিছিল এখন করবেন না। ৬টার পর সাংবাদিক বৈঠক করব। কোভিডের জন্য যত্ন নিন। প্রথম কাজ কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করা। বাংলার জয়। বাংলাই পারে।’
উল্লেখ্য, বিজেপি-কে রুখে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার ক্ষমতায় ফিরছে তৃণমূল। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয় পেয়েছে জোড়াফুল শিবির। রাজ্যে জয় নিশ্চিত হতেই কালীঘাটে বাড়ির সামনে অনুগামীদের উদ্দেশে প্রথম প্রতিক্রিয়া দেন মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জয়ের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, অখিলেশ যাদব, ওমর আবদুল্লারা।