দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশজুড়ে সাপের ছোবল খাইয়ে খুনের প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। বুধবার একটি মামলায় এই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। খাবারে বিষ মিশিয়ে খুন করার কৌশল নতুন কিছু নয়। কিন্তু জ্যান্ত সাপ ছেড়ে দিয়ে তার ছোবল খাইয়ে হত্যার ঘটনা হতবাক করেছে দেশের শীর্ষ আদালতকে । খুনের এমন অস্ত্র দেখে উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
রাজস্থানের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, সাপের ছোপল খাইয়ে খুন করা নতুন ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশে। প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা, বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি হিমা কোহলির এজলাসে এই মামলা চলছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্জ জানিয়েছে, দেশজুড়ে এমন ঘটনা বেড়ে চলেছে যা রীতিমতো চিন্তার কারণ। বিশেষ করে রাজস্থানে সাপের কামড় খাইয়ে খুনের ঘটনা বাড়ছে। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘‘এটা আজকাল নতুন প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাপুড়ের কাছ থেকে বিষধর সাপ জোগাড় করে তার ছোবল খাইয়ে খুন করানো হচ্ছে।“
কী মামলার প্রেক্ষিতে এমন পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের? ২০১৯ সালে রাজস্থানের ঝুনঝুনু জেলায় এক মহিলা তাঁর শাশুড়িকে সাপের কাপড় খাইয়ে খুন করেন বলে অভিযোগ। মৃতার নাম সুবোধ দেবী। অভিযোগ, তাঁর পুত্রবধূ আল্পনা মণীষ নামে এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। আল্পনার স্বামী সেনাবাহিনীতে রয়েছেন। তিনি কর্মসূত্রে বাইরে থাকায় অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন আল্পনা। সেটা জানতে পেরে যান তাঁর শাশুড়ি সুবোধ দেবী। এর পরেই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে খুনের পরিকল্পনা করেন আল্পনা।
অভিযোগ, আল্পনার প্রেমিক এক সাপুড়ের থেকে ১০ হাজার টাকায় একটি বিষধর সাপ কেনেন। সেই সাপ ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁর শাশুড়ি সুবোধ দেবীর ঘরে। সাপের ছোবল খেয়ে মৃত্যু হলে প্রথমে তা স্বাভাবিক বলেই মনে করা হয়। পরে সন্দেহ হয় পরিবারের লোকজনের। খুনের মামলা দায়ের করা হয়। আল্পনা ও তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সেই মামলারই শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। ধৃতের আইনজীবী আদিত্য চৌধুরী বলছেন, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তাঁর মক্কেল কোনও সাপ কেনেননি বা সাপের ছোবল খাইয়ে খুন করা হয়নি। কিন্তু আদালতের বক্তব্য, রাজস্থানে এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। শুধু রাজস্থান নয়, দেশজুড়েই খুন করার এমন মারাত্মক হাতিয়ার বেছে নেওয়া হচ্ছে যা উদ্বেগের কারণ।