“পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের ভাইরোলজিস্ট লুইস ফালো,গবেষক-অধ্যাপক অ্যান্দ্রেয়া গ্যামবোট্টো,”
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভ্যাকসিন ক্যানডিডেটের ক্লিনিকাল ট্রায়াল ইঁদুরের উপর সফল। দাবি করলেন ইউনির্ভাসিটি অব পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা। এই ভ্যাকসিন ইঁদুরের শরীরে সার্স-কভ-২ প্রতিরোধী শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে। এর আগে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট বানিয়ে ট্রায়ালের কথা বলেছিলেন গবেষকরা। পিটসবার্গের ভাইরোলজিস্টদের দাবি, শুধু ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট তৈরিই নয় এবং ক্লিনিকাল ট্রায়ালেও ভাল ফল মিলতে শুরু করেছে। মানুষের শরীরে এই প্রয়োগ আর সময়ের অপেক্ষামাত্র।
ইবায়োমেডিসিন (eBiomedicine) পেপারে এই রিসার্চ আর্টিকল ছাপা হয় যা সামনে আনে ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নাল (The Lancet) । গবেষকরা বলেছেন, খুব দ্রুত এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট থেকে দীর্ঘমেয়াদী ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে। ইঁদুরের শরীরে এর কার্যকারিতা দেখে দাবি করা হয়েছে, করোনা আক্রান্ত মানুষের শরীরেও একইভাবে অ্যান্টিবডি তৈরি করবে এই ভ্যাকসিন।
পিট স্কুল অব মেডিসিনের সার্জারি বিভাগের গবেষক-অধ্যাপক অ্যান্দ্রেয়া গ্যামবোট্টো বলেছেন, ২০০৩ সালে সার্স (SARS-CoV) ও ২০১৪ সালে মার্স (MERS-CoV) ভাইরাসের প্রতিরোধী ভ্যাকসিনও তৈরি হয়েছিল পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিনে। তাঁর কথায়, “আগের দুটো মহামারীর ভয়াবহতা আমরা দেখেছি। তখনও ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা হয়েছিল। সার্স-কভ-২ ভাইরাসের সঙ্গে সার্স ও মার্স ভাইরাসের মিল রয়েছে। তাই এই নতুন ভাইরাসের ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট কেমন হবে সেটা অনুমান করা গেছে।” আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই মানুষের উপর (Human Trial)এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভ্যাকসিন বানানো হয় এইভাবে যেখানে হয় গোটা ভাইরাস (Inactive) অথবা ভাইরাল প্রোটিনগুলোকে (Surface Protein)বিশুদ্ধ করে (Purified)মানুষের শরীরে ইনজেক্ট করা হয়। এর কাজ হল, এই ভাইরাল প্রোটিনগুলো শরীরে ‘মেমরি বি সেল’ Memory B cells তৈরি করে। এই মেমরি বি সেল ভাইরাল প্রোটিনগুলোকে ভাল করে দেখেশুনে, চিনে রাখে। আর তার বিরুদ্ধে বেশ কড়া রকম অ্যান্টিবডি তৈরি করে রাখে। এই প্রক্রিয়াকে বলে অ্যান্টিবডি বেসড ইমিউন রেসপন্স বা অ্যাডাপটিভ ইমিউন রেসপন্স তৈরি করা।
অর্থাৎ বাইরে থেকে প্যাথোজেন বা ভাইরাল প্রোটিন ঢুকিয়ে দেহকোষকে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে উদ্দীপিত করা। পাশাপাশি এমন ক্ষতিকর ভাইরাল প্রোটিনগুলোকে চিনিয়ে রাখা, যাতে ভবিষ্যতে এমন মারণ ভাইরাসের প্রোটিন দেখলে দেহকোষ নিজে থেকেই সতর্ক হয়ে যেতে পারে। আর তাকে আটকানোর জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে।
“Our ability to rapidly develop this vaccine was a result of scientists with expertise in diverse areas of research working together with a common goal.”
Read more about Dr. Louis Falo and his team’s work on a potential #COVID19 vaccine: https://t.co/UCNXpd4dDv pic.twitter.com/OlHrnxDXnR
— University of Pittsburgh (@PittTweet) April 2, 2020
PittCoVacc বা পিটসবার্গ করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক এমআরএনএ ভ্যাকসিন ক্যানডিডেটের (mRNA VaccineCandidate )থেকেও বেশি উপযোগী হবে বলে দাবি করেছেন, পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিনেরই ভাইরোলজিস্ট লুইস ফালো। তিনি বলেছেন, সার্স-কভ-২ ভাইরাল প্রোটিনগুলোকে শনাক্ত করে ল্যাবেই এমন ভাইরাল প্রোটিন বানানো হয়েছে যা দেহকোষে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। শুধু কোভিড-১৯ নয়, আগামী দিনে এমনই কোনও সংক্রামক ভাইরাসঘটিত রোগকে রুখতেও এই ভ্যাকসিন কাজে আসতে পারে।
লুইস ফালো বলেছেন, ৪০০টা সুঁচের মতো অংশ দিয়ে (Microneedle Array) এই ভাইরাল প্রোটিন ত্বকের কোষে ইনজেক্ট করা হয়েছে। দেখা গেছে ইঁদুরের শরীরে এই প্রোটিন অ্যান্টিবডি তৈরির প্রক্রিয়াকে জোরালো করেছে। বিজ্ঞানী বলেছেন, ভাইরাল প্রোটিন ইনজেক্ট করার দু’সপ্তাহের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, যার থেকে আশা করা যায় মানুষের শরীরে ট্রায়াল সফল হলে খুব দ্রুত সংক্রমণ আটকাতে পারবে এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট।