দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ উৎসবের মরশুমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে কীরকম ভয়াবহ ভাবে ছড়াতে পারে তা হাতেনাতে প্রমাণিত হয়েছে কেরলে। বাংলায় দুর্গোৎসব নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে শুরু করে কলকাতার চিকিৎসক মহলের একটা বড় অংশের উদ্বেগ ছিলই।
সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে সোমবার ঐতিহাসিক রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। দুর্গাপূজার প্যান্ডেলগুলিতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না দর্শনার্থীদের। তাঁদের জন্য ‘নো এন্ট্রি জোন’ হিসেবে চিহ্নিত হবে। নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের।বাংলার সবথেকে বড় উৎসবের আর মাত্র তিন দিন বাকি। ইতিমধ্যেই দ্বিতীয়াতে যে পরিমাণ ভিড় হয়েছে কলকাতার কিছু প্যান্ডেলে, তা সত্যিই ভয়াবহ।
এ ব্যাপারে মামলার রায়ে হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, বাংলায় সব পুজো মণ্ডপ দর্শকশূণ্য রাখতে হবে। ছোট মণ্ডপ হলে তার ৫ মিটারের মধ্যে এবং বড় মণ্ডপ হলে তার ১০ মিটারের মধ্যে কোনও দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবে না।
হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মণ্ডপের শেষ প্রান্ত থেকে ফিতে মেপে ওই বলয় তৈরি করতে হবে। কোনও বড় মণ্ডপের বাইরে কোনও গেট তৈরি হলে সেটাকেই মণ্ডপের শেষ প্রান্ত বলে বিবেচনা করতে হবে। উচ্চ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ সব পুজো মণ্ডপকে কনটেইনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করতে হবে।
পুজো মণ্ডপকে কেন কনটেইনমেন্ট বলে বিচারপতিরা বিবেচনা করেছেন?
এই মামলার অন্যতম আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য রায় ঘোষণার পরে বলেছেন, যে হেতু বহু মানুষ কোথাও একসঙ্গে জড়ো হলে ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি, তাই আদালত এই রায় দিয়েছে। কারণ, যত কম সংখ্যক মানুষ পুজো দেখতে বেরোবে ততই সবার জন্য মঙ্গল।
সন্দেহ নেই এই রায় ঐতিহাসিক। সরকার যখন পুজো পার্বণে উৎসাহ দিচ্ছে, সে জন্য সরকারি কোষাগারের অর্থ বিলি বন্টন করছে তখন আদালত রাশ টেনে ধরেছে।
হাইকোর্টের বিচারপতিরা আরও বলেছেন, আদালত যে রায় দিল তা বড় বড় করে লিখে প্রতিটি পুজো মণ্ডপের বাইরে ঝোলাতে হবে। প্যান্ডেলের মধ্যে পুজো কমিটির লোকও বেশি ঢুকতে পারবে না। সর্বোচ্চ ২৫ জন ঢুকতে পারবেন। সেই তালিকা রোজ বদল করা যাবে না। এই তালিকাও মণ্ডপের বাইরে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। তাছাড়া প্রতিটি মণ্ডপের বাইরে নো এন্ট্রি বোর্ড ঝুলিয়ে রাখতে হবে বলেও জানিয়েছে আদালত।
এদিন পুজো নিয়ে হাইকোর্ট যেসব নির্দেশ দিয়েছে তা ঠিকভাবে পালন করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে লক্ষ্মীপুজোর পরে ডিজি ও কমিশনারকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা।