দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শুক্রবার কোভিড-১৯ রোগে দিল্লিতে মারা গেলেন এক মহিলা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। এই নিয়ে করোনাভাইরাসের মহামারীতে ভারতে মারা গেলেন দু’জন। মৃত মহিলাকে নিয়ে রাজধানীতে মোট ছ’জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে।
মৃত মহিলা আগে থেকেই হাই ব্লাড প্রেসার ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। তাঁর বাড়ি ছিল পশ্চিম দিল্লিতে। তাঁর ছেলে গত মাসে সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হন। তাঁর সংস্পর্শে এসে মহিলার ওই রোগ হয়েছিল।
মৃতের ছেলে গত ৭ মার্চ জ্বর ও কাশি নিয়ে রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান। পরীক্ষায় তাঁর দেহে কোভিড-১৯ রোগ ধরা পড়ে। নিয়মমতো তাঁর পুরো পরিবারকে ডাক্তাররা পরীক্ষা করেন। তখন দেখা যায়, তাঁর মা-ও ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সরকার প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৯ মার্চ থেকে মহিলার অবস্থার অবনতি হয়। কোভিড-১৯ এর পাশাপাশি তাঁর নিউমোনিয়া হয়েছিল। তাঁকে আই সি ইউতে রাখা হয়। ১৩ মার্চ তিনি মারা যান। এদিনই ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁয়েছে ৮৫। বৃহস্পতিবার কর্নাটকে ৭৬ বছরের এক বৃদ্ধ ওই রোগে মারা যান।
করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। দিল্লি সরকার কোথাও ২০০ জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে। বিসিসিআই ঘোষণা করেছে, ১৫ এপ্রিল অবধি আইপিএলের ক্রিকেট ম্যাচও স্থগিত থাকবে।
শুক্রবার সকালে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়া বলেন, “ক্রিকেট খেলা দেখতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। কে কোথা থেকে আসছেন জানার উপায় নেই। মাত্র একজনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ হলেই অনেকের দেহে ছড়িয়ে পড়বে।”
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে উত্তরপ্রদেশ সরকার আগামী ২২ মার্চ অবধি সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর টুইট করে জানিয়েছেন, শুক্রবার ইরান থেকে দেশে পৌঁছেছেন ৪৪ জন তীর্থযাত্রী।
অর্থনীতিবিদরা অনেকেই নিশ্চিত, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে শীঘ্রই মন্দা শুরু হবে। কতদিন তা স্থায়ী হবে, সেই নিয়ে এখন চলছে বিতর্ক। সারা বিশ্বে বৃহস্পতিবার ধস নেমেছে শেয়ার বাজারে। বাদ যায়নি ভারতও। জে পি মর্গান চেজ অ্যান্ড কোম্পানির অর্থনীতিবিদরা বলেন, মন্দা শুরু হতে বেশি দেরি নেই। তাঁদের মতে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ যদি শীঘ্র কমে যায় এবং বিভিন্ন দেশের সরকার যদি বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়, তাহলে মন্দা এড়ানো যেতে পারে। একইসঙ্গে তাঁরা বলেন, তেলের দাম কমার ফলে মন্দার শক কম লাগবে।