দেশেরসময় ওয়েবডেস্ক: শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হল। দীর্ঘদিনের মিথ্যাচারের পরে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে নিল পাকিস্তান। ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধী তথা সন্ত্রাসবাদী দাউদ ইব্রাহিম যে করাচিতেই থাকে অবশেষে তা মেনে নিল পাক সরকার।
ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে থাকা দাউদ করাচিতে ঘাঁটি গেড়ে আছে বলে শনিবার ইসলামাবাদ ঘোষণা করেছে। পড়শি দেশের এই স্বীকারোক্তিতে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের বড় জয় হল বলে মত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের।
এদিন ৮৮ টি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসলামাবাদ। সেই সূত্রেই পাক প্রশাসন স্বীকার করে নিয়েছে যে দাউদ করাচিতেই থাকে।
৯৩ সালে মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্যান্য সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে অন্যতম অভিযুক্ত ছিল দাউদ ইব্রাহিম। তখন থেকেই ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায় সে। পরবর্তী কালে তাকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলেও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান কখনওই স্বীকার করেনি যে দাউদকে তারা আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। বরং ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে নয়াদিল্লি অতীতে যতবার দাউদের প্রসঙ্গ তুলেছে, ততবারই ইসলামাবাদ জানিয়েছে এই তথ্য ভ্রান্ত। দাউদ পাকিস্তানে থাকেই না।
কিন্তু এখন পাক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নিয়েছে যে দাউদ ইব্রাহিমের বাড়ি করাচির ক্লিফটন এলাকায়। সৌদি মসজিদ এলাকার ‘হোয়াইট হাউজে’ সে থাকে।
ইমরান খান প্রশাসন শনিবার জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের নেতাদের উপর কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তারা। এর মধ্যে রয়েছে লস্কর ই তৈবার হাফিজ সঈদ, জইশ ই মহম্মদের মাসুদ আজহার এবং দাউদ ইব্রাহিম। তাদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ।
২০১৮ সালের জুন মাসেই প্যারিস স্থিত ফাইনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স তথা (এফএটিএফ) পাকিস্তানকে ধূসর তালিকায় ( গ্রে লিস্ট) রেখে স্পষ্ট জানিয়েছিল যে ২০১৯ সালের মধ্যে ইসলামাবাদকে জানাতে হবে সন্ত্রাস দমনের জন্য তারা কী কী পদক্ষেপ করেছে। কোভিডের কারণে সেই ডেডলাইন কিছুটা বাড়ানো হয়। ফলে কিছুটা প্যাঁচে পড়েই ইসলামাবাদ এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে।
যদিও কূটনৈতিক মহলের অনেকের মতে, এ ব্যাপারে পাকিস্তানের বিশ্বাসযোগ্যতা খুবই কম। ওরা অনেক সময়েই এ ধরনের লোক দেখানো পদক্ষেপ করে থাকে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় কিছুই হয়নি। এখনও পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য। শুধু তা নয়, সরকারি মদতেই ভারত বিরোধী সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে তারা।
নয়াদিল্লির কূটনীতিকদের আরও বক্তব্য, কেবল আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বসে থাকতে পারে না ইসলামাবাদ। অপরাধীদের আইনি বিচার করতে হবে। তবে বোঝা যাবে সন্ত্রাসবাদ দমনে ওরা কতটা আন্তরিক।