তৃণমূলের সব কাউন্সিলর পুনরায় টিকিট নাও পেতে পারেন,বৈঠকে ইঙ্গিত মমতার

0
645

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ তৃণমূলের বর্তমান কাউন্সিলর হলেও পুরভোটে তিনি যে ফের প্রার্থী হবেন এমন কোনও নিশ্চয়তাই সম্ভবত রইল না। শুক্রবার সব জেলা সভাপতিদের নিয়ে তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে তিনি প্রকারান্তরে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন।

দিদি কী বলেছেন?

জানা গিয়েছে, বৈঠকে দিদি বলেছেন, পুরভোটে কে প্রার্থী হল আর কে হল না তা নিয়ে দলের মধ্যে যেন কোনও ঝগড়া না হয়। এ ব্যাপারে জেলা সভাপতি ও জেলার পর্যবেক্ষকদের সতর্ক করে দিয়েছেন দিদি। তিনি পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দিয়েছেন, পুর ভোটে দল প্রার্থী ঠিক করবে। যোগ্য লোককেই প্রার্থী করা হবে। এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে কেউ ঝগড়া-ঝামেলা না করে তা জেলা নেতৃত্বকে সুনিশ্চিত করতে হবে।

দলের উপরের সারির নেতাদের কথায়, দিদি-র এই ‘মেসেজের’ মানে পরিষ্কার। এক, বর্তমানে কাউন্সিলর হলেও অনেকে টিকিট পাবেন না। দুই, জেলা সভাপতি ও জেলার পর্যবেক্ষকদের হাতেও টিকিট দেওয়ার সরাসরি কোনও ক্ষমতা থাকছে না। সবটাই ‘সেন্ট্রালি’ (পড়ুন কেন্দ্রীয় ভাবে) হবে। মানে প্রশান্ত কিশোরের টিম পুর এলাকায় সমীক্ষার পর যাঁদের পাশ মার্ক দেবে, তাঁরা ফের টিকিট পাবেন। আর যাঁরা টিকিট পাবেন না, সেখানেও প্রার্থী বাছাইয়ে টিম-পিকের ভূমিকা থাকবে।

  • পুরভোটের বাদ্যি বেজে গিয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে এই ভোটই কার্যত সেমিফাইনাল।
  • আর তার আগে শুক্রবার তৃণমূল ভবনে দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
  • আর সেখান থেকেই তিনি বলে দিলেন, পুরভোটে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলই শেষ কথা বলবে।


প্রশ্ন উঠতে পারে, যাঁরা টিকিট পাবেন না তাঁরা কি দলের সিদ্ধান্ত চুপচাপ মেনে নেবেন?

তা যে নাও হতে পারে এদিন দিদির কথায় সেই আশঙ্কার কথাও ধরা পড়েছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে মমতা বলেছেন, প্রার্থী নিয়ে বিজেপি তৃণমূলের মধ্যে চিড় ধরানোর চেষ্টা করতে পারে। ওই ফাঁদে যেন কেউ পা না দেয়। দিদি এও বলেছেন, বিজেপি অনেক চেষ্টা করবে তৃণমূলের মধ্যে ঝগড়া লাগানোর। ওদের কথায় লাফাবেন না। আমরা সবাই দলের কর্মী। সবাই দলকে ভালবাসি। তাই দলের সিদ্ধান্ত সকলকেই মানতে হবে।

বাংলায় বিরোধীদের বহুদিনের অভিযোগ, অধিকাংশ পুরসভায় তৃণমূলের অনেক নেতার কাছে কাউন্সিলর বা কমিশনার পদে থাকাটাই পেশায় পরিণত হয়েছে। তা দিয়েই তাদের রুটি, রুজি, দোকান ও দল চলে। পদ চলে গেলে তাঁরা তৃণমূলে থাকবে কেন! শাসক দলে ঝগড়ার কারণের মূলেও রয়েছে অর্থ—টাকার ভাগাভাগি। সেই লড়াইয়ে রক্তও ঝরেছে কোথাও কোথাও।

তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, সে জন্যই তো প্রার্থী বদলের কথা বলা হচ্ছে। যাঁদের বিরুদ্ধে স্থানীয় ভাবে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা রয়েছে, তথা কাটমানি নেওয়া, তোলাবাজি, অত্যাচারের অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের টিকিট দেওয়া হবে না।
মজার ব্যাপার হল, সাম্প্রতিক অতীতে এই ফর্মুলার প্রথম প্রয়োগ গুজরাতে করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ২০০৭ সালে গুজরাতে পুর ভোটের সময় বহু পুরসভায় তিনি প্রায় ৬০ শতাংশ কাউন্সিলরকে টিকিট দেননি। পরে সে বছর বিধানসভা ভোটেও সেই ফর্মুলা প্রয়োগ করেছিলেন। তার হাতে নাতে ফল পেয়েছিল বিজেপি।

তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপি ফল পাওয়ার কারণও ছিল। কেন না, বিজেপির টিকিট না পাওয়া কাউন্সিলর বা বিধায়করা রাতারাতি কংগ্রেসে যোগ দেন। কংগ্রেস তাঁদের প্রার্থী করে এবং তাঁদের মধ্যে নব্বই শতাংশই ডাহা হারেন। ফলে তৃণমূলে টিকিট না পাওয়াদের বিজেপি বাংলায় প্রার্থী করবেন কিনা সে প্রশ্নও থাকছে।

সব মিলিয়ে এটা পরিষ্কার যে বাংলায় পুরভোটের দামামা বেজে গেল। বলা ভাল, একুশের মহারণের আগে গা ঘামানোর ম্যাচের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ল তৃণমূল।

Previous articleমোদীকে আক্রমণ মার্কিন ধনকুবেরের, হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছেন প্রধানমন্ত্রী
Next articleদোলের দিনই শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব,সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here