দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মালাবার ত্রিদেশীয় নৌমহড়ায় এবার যোগ দেবে অস্ট্রেলিয়াও। তৈরি হবে চার শক্তির কোয়াড। ভারত, জাপান ও আমেরিকার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার জোট ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের আগ্রাসন কমাতে বিশেষভাবে কাজে দেবে এতে কোনও সন্দেহই নেই। এমনটাই বক্তব্য মার্কিন কূটনীতিক স্টিভেন বিয়েগানের। জলপথে চিনকে চাপে রাখতে এই চার শক্তিকে সক্রিয় তোলার দরকার ছিল বলেই জানিয়েছেন তিনি।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘাতের আবহেই ভারত মহাসাগরে যৌথ নৌসেনা মহড়া করেছে ভারত ও জাপান। চিনকে চাপে রাখতে ভারতের সঙ্গে জাপান, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া এই চার শক্তির কোয়াডকে সামরিক চেহারা দেওয়ার লক্ষ্যে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল আগেই। সীমান্ত উত্তেজনার এই টানটান পরিস্থিতে এবার সেই লক্ষ্যেই এগোতে চলেছে ভারত। মালাবারে বার্ষিক নৌসেনা মহড়ায় আমেরিকা ও জাপানের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াকেও আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে নয়া দিল্লি। সূত্রের খবর, গত মাসে মালাবার বার্ষিক নৌমহড়া নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, দুই দেশই তাদের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে সমন্বয় আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মালাবারে এই বার্ষিক নৌসেনা মহড়া তথা মালাবার এক্সারসাইজ আগে ছিল ভারত ও আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক নৌসেনা মহড়া। পরে জাপানও যোগ দেয় এই মহড়ায়। ২০১৭ সালে ভারত, জাপান ও আমেরিকা ত্রিপাক্ষিক নৌমহড়া হয় বঙ্গোপসাগরে। এই নৌসেনা মহড়ার পোশাকি নাম ছিল ‘মালাবার ২০১৭।’ ভারত মহাসাগর শুধু নয় চিনের নৌসেনার তৎপরতা লক্ষণীয় বঙ্গোপসাগরেও। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলযুদ্ধে চিনা ডুবোজাহাজের ক্ষমতা চিন্তার কারণ। চোরাগোপ্তা হামলা চালাতেই বেশি অভ্যস্ত তারা। সূত্রের খবর, এবারে মালাবার মহড়ায় ডুবোজাহাজের যুদ্ধকৌশল বিশেষভাবে অনুশীলন করা হতে পারে।
গিয়েছে। গালওয়ানে চিনা সেনার তৎপরতা বাড়ার পরেই ভারত মহাসাগরে জাপানের সঙ্গে যৌথ নৌমহড়া করে ভারত। কৌশলগত বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনের বিরুদ্ধে এই স্নায়ুযুদ্ধের পরিস্থিতিতে জাপানকে পাশে নিয়ে সামরিক মহড়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের যুদ্ধজাহাজ আইএনএস রানা ও আইএনএস কুলুশ এবং জাপানের যুদ্ধজাহাজ জেএস শিমায়ুকি এবং জেএস কাশিমা ওই মহড়ায় যোগ দিয়েছিল বলে খবর।
মালাবার নৌমহড়ার আগেই বঙ্গোপসাগরে মার্কিন রণতরীর সঙ্গে ‘পাসেক্স’ নৌমহড়ায় যোগ দিয়েছিল ভারতীয় নৌসেনা। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে বঙ্গোসাগরে মার্কিন রণতরী ইউএসএস নিমিটিজ়ের সঙ্গে নৌমহড়ায় অংশ নেয় ভারতের নৌবাহিনী। ইউএসএস নিমিটিজ় এবং ইউএসএস রোনাল্ড রেগান পরমাণু অস্ত্রবাহী রণতরী। দক্ষিণ চিন সাগরে এতদিন মোতায়েন ছিল। এবার বঙ্গোপসাগর হয়ে পশ্চিম এশিয়ায় ফেরার পথে ভারতীয় নৌবাহিনীর সঙ্গে ‘পাসেক্স’ (পাসিং এক্সারসাইজ) নৌমহড়ায় অংশ নেয়। পূর্ব লাদাখে সীমান্ত উত্তেজনার টানটান পরিস্থিতিতে মার্কিন রণতরীর সঙ্গে এই নৌমহড়াকে চিনের প্রতি কৌশলী বার্তা বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা।