চাল-ত্রিপলের পর ভ্যাকসিনেও ভাগ বসাচ্ছে তৃণমূল, ধর্মতলার চা চক্রে বললেন দিলীপ

0
807

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শনিবার গোটা দেশজুড়ে কোভিড টিকাকরণ শুরু হয়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় দেখা গিয়েছে প্রথম দিনই তৃণমূলের বিধায়করা বাহু বাড়িয়ে টিকা নিয়ে নিয়েছেন। রবিবার ধর্মতলার চা চক্র থেকে তা নিয়েই শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “চাল, আমফানের টাকার মতো ভ্যাকসিনেও ভাগ বসাচ্ছেন তৃণমূলের বিধায়ক-নেতারা। সেই জন্যই প্রয়োজনের তুলনায় কম পড়েছে ভ্যাকসিন।”

জানা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি জেলাশাসকদের বলেছেন, যা দরকার তার চেয়ে কম ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে কেন্দ্র। গতকাল এ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ক্রেডিট নিতে পারেননি বলে এখন বলছেন কেন্দ্র কম পাঠিয়েছে। ওটা আপনাকে ভাবতে হবে না!
দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “নেহাত ভ্যাকসিন বাড়ির গ্যারাজে রাখা যায় না! না হলে দেখতেন তাই করতো। তৃণমূল এমনই।”

সরকারি নীতি অনুযায়ী, করোনার টিকা এখন পাবেন কেবল চিকিৎসাকর্মীরা। অর্থাৎ, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী-সহ যাঁরা চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। অথচ দুই বিধায়ক-সহ কয়েক জন জনপ্রতিনিধি শনিবার, প্রথম দিন টিকা পেয়েছেন। জনপ্রতিনিধিদের একাংশ অবশ্য পেশায় চিকিৎসক। কিন্তু এঁরা সেই তালিকাতেও পড়েন না।

ফলে, বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে এবং ঘটনাচক্রে এই টিকা প্রাপকরা সবাই শাসকদল তৃণমূলের হওয়ায় বিরোধী দল বিজেপি এই বিষয়টাকে হাতিয়ার করতে ছাড়েনি। প্রশ্ন উঠেছে, বাগদার বিডিও জ্যোতিপ্রকাশ হালদার কেন করোনা-টিকা পেলেন, তা নিয়েও। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীর নাম শনিবারের টিকা প্রাপকদের তালিকায় ছিল। তবে বিতর্ক এড়াতে শেষমেশ সৌরভ টিকা নিতে যাননি।

রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা করোনা-ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেন, ‘আমি জানি না, নিয়েছে (বিধায়ক-সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা) কি না। নিয়ে থাকলে ভুল করেছে। টিকা নেওয়ার কথা ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের। আমি যতদূর জানি, তাঁরাই টিকা নিয়েছেন।’ তবে, বিজেপিকে পালটা নিশানা করেছেন ফিরহাদ। বলেন, ‘কৈলাস বিজয়বর্গীয় নিজের পিতৃভিটে থেকে এই টিকা নিয়ে আসেননি। এই টিকা মানুষের। এই টিকা দেশের।’

স্বাস্থ্য দপ্তরের এক শীর্ষকর্তা অবশ্য বলছেন, ‘নথিভুক্তিকরণের গোটা প্রক্রিয়া অনলাইনে হয়নি। হলে প্রথম পর্যায়ে চিকিৎসাকর্মী নন, এমন কারও নাম তালিকাভুক্ত হওয়া মুশকিল ছিল। হয়তো অফলাইনে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ স্থানীয় স্তরে প্রভাব খাটিয়ে তালিকায় নাম ঢুকিয়ে ফেলতেও পারেন।’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘তৃণমূল বিধায়করা লাইনে দাঁড়ালে ভ্যাকসিন তো কম পড়বেই।’

অন্যদিকে নিয়ম মেনে সব প্রস্তুতি নিয়ে ভ্যাক্সিন নিতে এসেছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁরা প্রত্যেকেই ফ্রন্টলাইন কোভিড ওয়ারিয়র। তাঁরা জানান, করোনা রোগীদের প্রথমদিন থেকেই পরিষেবা দিয়েছেন তাঁরা। একেবারে বেড সাইড কেয়ার দিয়ে এসেছেন। সামনে থেকে কাজ করে গেছেন। তারপরেও তালিকায় নাম থাকলেও শেষমুহূর্তে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘এটা আমার জানা নেই। এই বিষয়ে বলতে পারবেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’’ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বলেন, ‘‘ওঁদের ডাকা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তালিকায় নাম না থাকায় ওঁদের টিকা দেওয়া হয়নি। ওঁরা পরের দিন টিকা পাবেন।’’

Previous articleঝোড়ো ব্যাটিং শুরু করেছে শীত,একাধিক জেলায় শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি
Next articleবিজেপিতে যাওয়া সিরাজের ২২ দিনেই মানভঞ্জন হল, তৃণমূলে ফিরে বললেন ‘নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here