দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আমফানের বর্ষপূর্তিতেই ফের চোখ রাঙাচ্ছে আরেক ঘূর্ণিঝড় যশ। আগের বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আগে থেকেই তৎপর প্রশাসন। আশঙ্কা মতোই ঝড় যদি আছড়ে পড়ে তাহলে যেন এই প্রস্তুতির কারণে সেরকম অসুবিধেয় না পড়েন মানুষ। রাজ্যবাসীকে সুরক্ষিত রাখতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। বিপর্যয় মোকাবিলায় একাধিক হেল্পলাইনও চালু করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি নিচ্ছে নবান্ন। ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের যাবতীয় ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় যশ আছড়ে পড়ার আগেই বিপর্যয় মোকাবিলায় তৎপর সমস্ত দফতর। বিদ্যুৎ থেকে খাবার-পানীয় জল সমস্ত কিছুরই বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি। যেকোনও বিপদে পড়লে সাহায্যের জন্য তৈরি দক্ষিণ ২৪ পরগণা কোঅর্ডিনেশন হেল্পলাইন নম্বর-033 -2448-8051 এবং 033-2448-8052 ।
যশ সাইক্লোন নিয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে সেই নিয়ে বক্তব্য রাখলেন DM উলগা নাথান। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ 24 পরগনা জুড়ে যত দ্বীপ আছে কোস্টাল এরিয়া আছে সেখানে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং যত ট্রান্সফরমার রয়েছে হাইভোল্টেজ লাইন রয়েছে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
২৬ তারিখ যদি সাইক্লোন ঢোকে তার জন্য আমরা পুরোপুরি তৈরি রয়েছি.দক্ষিণ ২৪ পরগনা গ্রাম পঞ্চায়েতের যত কমজোরি ব্রিজ রয়েছে, সেই ব্রিজ গুলোকে সারাইয়ের কাজ চলছে।’ এখানেই শেষ নয়, জেলা শাসক আশ্বস্ত করেছেন,’পিডব্লুডিএর জেসিপি উড কাটার মেশিন সমস্ত ব্যবস্থা রয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিতে চাষের জমির খুব ক্ষতি হয় ইতিমধ্যেই চাষীরা তাদের ফসল কাটতে শুরু করেছে. নোনা জল ঢুকলে প্রচুর মাছ মরে যায় তার জন্য আমরা পাম্পের ব্যবস্থা রাখছি, যাতে নোনা জল ঢুকলে সাথে সাথে যাতে ওই পাম্পের মাধ্যমে নোনাজল তুলে নেওয়া যায়.সমস্ত কাজই কোভিড প্রোটোকল মেনে করা হচ্ছে, সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে।
অ্যাম্বুলেন্স থাকছে মেডিকেল ক্যাম্প করা হচ্ছে। কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হচ্ছে. সেই সময় যদি কেউ কোভিডে আক্রান্ত হয় তাকে সঙ্গে সঙ্গে কোয়ারেন্টাইন করা হবে। ফুড ড্রাই ফুড সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় যশের মোকাবিলায় যা পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন:
সাগর, কাকদ্বীপ, গোসাবা, ডায়মন্ডহারবার, মথুরাপুর অঞ্চলে ক্যুইক রেসপন্স টিমকে, এনডিআরএফ টিমকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।
পুলিশ, কোস্টগার্ড, এনডিআরএফ, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, এসডিও, বিডিওদের ঝড় মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই উপকূলের ৩ লাখ মানুষের ১১৫ টি আয়লা সেন্টার ও ২৫০টি আইসিডিএস সেন্টার ছাড়াও স্কুল কলেজে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নজর রাখার জন্য তৈরি রাখা হয়েছে ২৫টি ড্রোনকে।
পিএইচই-কে ২ লাখ জলের পাউচ রেডি রাখতে বলা হয়েছে।
নবান্ন থেকে ত্রিপল,সাবান, চাল, ডাল, বেবিফুড পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে
টেলিফোন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হলে বিকল্প হিসেবে তৈরি ২০ স্যাটেলাইট ফোন। মোবাইল নেটওয়ার্ক সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক সারা।
ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মোকাবিলায় ৫০০০ খুঁটি মজুত
শুক্রবার যশের মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি বৈঠক করেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা। এদিনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে সমস্ত জেলাগুলিতে যশের আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, অর্থাৎ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাগুলিতে ২৫ তারিখ থেকে একটি জেলাগুলিতে নজরদারি চালাবে বিদ্যুৎকর্মীদের কয়েকটি নির্দিষ্ট দল। প্রত্যেকটি দলে ৬ থেকে ৭ জন সদস্য থাকবে। এছাড়া জেলাগুলির জন্য পাঠানো হয়েছে ১৮৩০৫টি ইলেট্রিক পোল। এছাড়াও কন্ট্ফোন করে চাওয়া যাবে সাহায্য। ২৫ তারিখ থেকে 8900793503 ও 8900793504 নম্বরে ফোন করতে সাহায্যের জন্য আবেদন করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।