দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: মাস দেড়েক আগে জলপাইগুড়ির জনসভাতে গিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনগণের উদ্দেশে তাঁর অনুযোগ জানিয়েছিলেন। লোকসভায় তৃণমূল উত্তরবঙ্গে শূন্য পেয়েছে। একটিও আসন জেতেনি। তাই নিয়ে অভিমান ছিল দিদির।
কিন্তু সোমবার উত্তরবঙ্গে দিদির গলায় যেন কাতর আর্জি! আকুতিও বলা যায়।
এদিন উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চে বাজেট নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সমালোচনা শানাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও নানা কথা বলতে বলতেই তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গে আমরা গো হারা হেরেছি, তাও আমার কোনও লজ্জা নেই। কেন বলুন তো? কারণ আমরা জানি এবার আপনারা পুষিয়ে দেবেন। প্লিজ পুষিয়ে দেবেন তো?”
কোচবিহার থেকে মালদহ পর্যন্ত ৫৪টি বিধানসভা আসন রয়েছে। বিজেপির হিসেব, উনিশের লোকসভার মতোই একুশের বিধানসভায় উত্তরবঙ্গে তাঁদের দুর্ধর্ষ ফলাফল হবে। বিজেপি রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ গত পরশু দিন খড়দহের চা চক্রে যোগ দিয়ে বলেছিলেন, “উত্তরবঙ্গ আর জঙ্গলমহলে তৃণমূলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর দিদিমণি যে জেলাকে নিজের জেলা বলে ভাবছেন সেখানেও এবার পদ্মফুল ফুটবে।”
পর্যবেক্ষকদের মতে, উত্তর বাংলার আসনগুলি নিয়ে যে তৃণমূলের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে তা মমতার কথাতেই বারবার বেরিয়ে আসছে। জলপাইগুড়ির জনসভার বক্তৃতার কথা তুলে ধরছেন তাঁরা। সেই জনসভায় আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মিম এবং বিজেপি নিয়ে বলতে গিয়ে মমতা বলেছিলেন, “বিজেপি হিন্দুদের ভোট নিয়ে চলে যাবে আর ওরা (পড়ুন মিম) মুসলমানদের ভোট নিয়ে চলে যাবে তাহলে আমি কি বসে বসে কাঁচকলা খাব?”
বিধানসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গ পুনরুদ্ধারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে তৃণমূল। ৪০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার সেখানে গেলেন মমতা। এর মাঝে চার দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দিদিকে কি এবার পুষিয়ে দেবেন উত্তরবঙ্গের জনগণ? তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ভোট গণনা পর্যন্ত।
এ দিন উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চ থেকে তিনটি সেতু সহ একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের তরুণ প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের আশ্বাসও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে অনেক শিল্প এখানে আসছে৷ নিজেরা তৈরি হন৷ কখনও হতাশায় ভুগবেন না৷ আগামী দিনে আমার পরিকল্পনা ছাত্র যৌবনকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো৷ আগামী পাঁচ বছরে এই কাজটা আমি করব কারণ অন্যান্য কাজ আমার হয়ে গিয়েছে৷’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, আগে উত্তরবঙ্গ অবহেলিত ছিল৷ কেউ আসত না৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে করোনা অতিমারির আগে পর্যন্ত প্রতি মাসে তিনি উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷