দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গোয়া বিধানসভা ভোটের অনেক আগেই বড় ঘোষণা করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারে এলে প্রতিটি পরিবার পিছু গৃহকর্ত্রীকে মাসে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এ জন্য গৃহকর্ত্রীকে দেওয়া হবে একটি স্মার্ট কার্ড। যার নাম গৃহলক্ষ্মী কার্ড।
লক্ষ্মীর ভান্ডারের আদলেই তৃণমূল ক্ষমতায় এলেই গোয়াতেও চালু হবে একই গৃহলক্ষ্মী স্কিম ৷ এ দিন তৃণমূলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবেই এই ঘোষণা করে দেওয়া হল৷ তবে বাংলার তুলনায় পরিবার পিছু মহিলারা দশগুণ বেশি ভাতা পাবেন এই প্রকল্পে৷ তৃণমূলের ঘোষণা অনুযায়ী, তারা ক্ষমতায় এলে গোয়ায় পরিবার পিছু একজন করে মহিলা মাসিক পাঁচ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন৷ ক্ষমতায় আসার একশো দিনের মধ্যে তৃণমূল এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করবে বলে প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে৷
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গে পাঁচশো টাকা করে পান মহিলারা৷ এক্ষেত্রে অবশ্য একই পরিবারের একাধিক সদস্য এই ভাতা পেতে পারেন৷ তফশিলি জাতি, উপজাতি তালিকাভুক্তদের ক্ষেত্রে মাসিক এক হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়৷
Goa TMC launches the #GrihaLaxmiCard, to provide assured monthly income support to every household in the state.
— AITC Goa (@AITC4Goa) December 11, 2021
Under this scheme, a direct transfer of ₹5,000 per month (₹60,000 yearly) will be made to a woman of every household as guaranteed income support. pic.twitter.com/v0YztdVKE1
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল৷ মূল লক্ষ্য ছিল রাজ্যের বিপুল সংখ্যক মহিলা ভোটারদের মন জয়৷ ভোট বাক্সে এর সুফলও পেয়েছিল শাসক দল৷
পশ্চিমবঙ্গের মতো গোয়াতেও বড় সংখ্যক মহিলা ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে৷ গোয়ায় মোট ভোটারদের ৫১ শতাংশই মহিলা৷ তাঁদের মন জয়েই এবার গৃহলক্ষ্মী প্রকল্পকেই অস্ত্র করছে তৃণমূল৷
I am delighted to announce the #GrihaLaxmiCard, our solemn promise to financially empower the women of every Goan household.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 11, 2021
Under this, an assured monthly income support of ₹5,000/month (₹60,000 yearly) will be provided to every family in Goa.
তৃণমূলের এই ঘোষণার পরক্ষণেই পাল্টা দাবি তুললেন বাংলার বামেরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, “বাংলাতেও পরিবার পিছু মাসে ৬ হাজার টাকা করে দিতে হবে। আগে বাংলায় হোক তার পর না হয় গোয়ায় করবেন”।
বিধানসভা ভোটে বাংলায় এক মাত্র কংগ্রেসই তাদের ইস্তেহারে জানিয়েছিল যে ভোটে জিতলে তারা প্রতিটি পরিবারকে মাসে ৬ হাজার টাকা করে দেবে। এই প্রস্তাবের প্রবক্তা আসলে রাহুল গান্ধী। উনিশের লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের ইস্তেহারে এ কথা বলেছিলেন তিনি। যে প্রকল্পের নাম দিয়েছিলেন ‘ন্যায়’ তথা ন্যূনতম আয় যোজনা। এই তত্বকে সমর্থন করেন অনেক অর্থনীতিবিদও। তাঁরা বলেন, ভারতের মতো দেশে সরকারের উচিত একটি সার্বজনীন ন্যূনতম আয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া। যাকে বলা যেতে পারে ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম।
অনেকের মতে কংগ্রেসের সেই প্রকল্পকেই গোয়া ভোটের আগে ব্যবহার করতে চেয়েছে তৃণমূল। বাংলায় ভোটে জিতে ইতিমধ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেছেন মমতা। তাতে রাজ্যের রাজকোষের যা বেসামাল অবস্থা হোক না কেন তিনি তাঁর ভোট ইস্তেহারের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। এ বার সেটারই বিপণন করতে চাইছেন গোয়ায়।
গোয়ায় সবে নতুন শাখা খুলেছে তৃণমূল। কংগ্রেস বা অন্য ছোট দল থেকে লোক এনে একটা ভিত গড়ার চেষ্টা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, সেই সঙ্গে এমনটি একটি প্রস্তাব দিলেন মমতা যাতে ভোটারদের সহজে লুব্ধ করা যায়।
এ দিন গোয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ট্যুইটারে জানানো হয়েছে, ‘প্রতি মাসে গোয়ার প্রত্যেক পরিবারকে নিশ্চিত আর্থিক সমর্থনের জন্য গৃহলক্ষ্মী কার্ড নিয়ে আসা হল৷ এই প্রকল্পে প্রত্যেক পরিবারের একজন করে মহিলার অ্যাকাউন্টে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা (বছরে ৬০ হাজার) সরাসরি পাঠিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে৷’
কীভাবে গৃহলক্ষ্মী কার্ড সংগ্রহ করে গৃহলক্ষ্মী প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করতে হবে, ট্যুইটে তাও বিশদে জানানো হয়েছে৷ নিছক প্রতিশ্রুতি নয়, তৃণমূল যে সত্যিই এই প্রকল্প কার্যকর করবে, তার জন্য এখন থেকেই দলীয় কর্মীদের মাধ্যমে গৃহলক্ষ্মী কার্ড বিলি করে নাম নথিভুক্তির কাজও শুরু করে দিচ্ছে গোয়া তৃণমূল৷
গোয়া তৃণমূল জানিয়েছে, গৃহলক্ষ্মী প্রকল্পের আওতায় গোয়ার সাড়ে তিন লক্ষ পরিবারকে আনা হবে। এর জন্য বছরে খরচ হবে দেড় থেকে দু’হাজার কোটি টাকা। যা দেশের ক্ষুদ্রতম (আয়তনের নিরিখে) রাজ্যের বার্ষিক বাজেটের ৬ থেকে ৮ শতাংশ।
গোয়ার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত নভেম্বর মাস থেকেই সে রাজ্যে ‘সরকার তুমচ্চা দারি’ প্রকল্প চালু করেছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, সরকারি সুযোগ০সুবিধা সরাসরি মানুষের দরজায় পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে চালু করা প্রকল্প আদতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ‘দুয়ারে সরকার ‘কর্মসূচির নকল।
কীভাবে গৃহলক্ষ্মী কার্ড সংগ্রহ করে গৃহলক্ষ্মী প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করতে হবে, ট্যুইটে তাও বিশদে জানানো হয়েছে৷ নিছক প্রতিশ্রুতি নয়, তৃণমূল যে সত্যিই এই প্রকল্প কার্যকর করবে, তার জন্য এখন থেকেই দলীয় কর্মীদের মাধ্যমে গৃহলক্ষ্মী কার্ড বিলি করে নাম নথিভুক্তির কাজও শুরু করে দিচ্ছে গোয়া তৃণমূল৷
ইতিমধ্যেই একবার গোয়া সফরে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আগামী ১৩ তারিখ ফের তাঁর গোয়ায় যাওয়ার কথা৷ মমতার এই সফরের সময়ই লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় প্রকল্পগুলিকে গোয়ার মানুষের সামনে তুলে ধরবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী৷