দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আন্দোলন চলবেই। যতদিন না দাবি মানছে সরকার, ততদিন মাটি কামড়ে পড়েই থাকবেন তাঁরা। এমনকি চাপ দিলেও আর তাঁরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিতর্কিত কৃষি আইন নিয়ে সরকারকে সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর সময়ও বেঁধে দিলেন তাঁরা। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত জানিয়ে দিলেন, আগামী ২ অক্টোবর, গান্ধী জয়ন্তীর মধ্যেই কৃষি আইন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে কেন্দ্রকে।
শনিবার, সারা দেশ জুড়ে তিন ঘণ্টার চাক্কাজ্যাম পালন করেন কৃষকরা। আশঙ্কা ছিল, এদিনও প্রজাতন্ত্র দিবসের মতো কোনও বিশৃঙ্খলা না হয়। পুলিশ-প্রশাসনের বেড়াজালও ছিল অনেক কঠোর। যদিও শান্তিপূর্ণ ভাবেই সারা হয় সব। এর পরেই সংবাদমাধ্যমের কাছে রাকেশ টিকায়েত বিবৃতি দেন, ‘‘দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরব না আমরা। আইন প্রত্যাহার করতে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছি কেন্দ্রীয় সরকারকে। তার পর পরবর্তী পরিকল্পনা করব। চাপ সৃষ্টি করে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসানো যাবে না আমাদের।’’
কয়েক দিন আগে কেন্দ্রের তরফে ১৮ মাসের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তাতে রাজি হননি কৃষকরা। বারবারই বলেছেন একটাই কথা, আইন প্রত্যাহার করা ছাড়া অন্য কোনও রকম আপসে রাজি নন তাঁরা।
আজ সকাল থেকে ৫০ হাজার পুলিশ, আধা সামরিক বাহিনী নামিয়ে রাজধানী দিল্লিকে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয় চাক্কাজ্যামের আগে। এর পরে দিল্লির শহিদ পার্কে কৃষকদের সমর্থনে সাধারণ মানুষ জড়ো হলে তাও ভেঙে দেয় পুলিশ। অনেক জনকে আটকও করা হয়। এমনকি আইটিও এবং লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় আগে থেকে মোতায়েন রাখা হয় জলকামানও। বন্ধ রাখা হয় মেট্রোও। এমনকি বেঙ্গালুরুতেও ৩০ জনকে আটক করে পুলিশ।
এদিনের চাক্কাজ্যামের আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছিল উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং দিল্লিকে। এর কারণ হিসেবে রাকেশ টিকায়েত জানান, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের কৃষকদের এই মুহূর্তে দিল্লি নিয়ে আসে সম্ভব নয়। তাঁদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করতে হবে। তবে এদিন পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, জম্মু ও কাশ্মীর, মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন রাজ্যে চাক্কাজ্যাম পালিত হয়েছে।
এদিন সকাল থেকে দিল্লি-হরিয়ানা সীমানায় কুণ্ডলী থেকে পালওয়াল যাওয়ার সড়ক অবরোধ করেন কৃষকরা। কাশ্মীরেও পাঠানকোট-জম্মু সড়ক অবরোধ করা হয়। এসবের শেষে কৃষকদের তরফে একটাই কতা জানিয়ে দেওয়া হল, আন্দোলন থেকে পিছু হঠার প্রশ্ন নেই।