দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর পর তাঁর নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশ অনবদ্য কাজ করেছে। প্রবীণ নাগরিকদের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে শহরবাসীর। সেই তিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা এ বার নিজেই কোভিড আক্রান্ত হয়ে পড়লেন।
পুলিশ সূত্রে জানাগিয়েছে, আজই কোভিড টেস্টের রেজাল্ট পেয়েছেন তিনি। তবে তাঁর শরীরে উপসর্গ মৃদু। বাড়ি থেকেই কাজ করছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কমিশনারের সংস্পর্শে আসা অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শেষ পাওয়া সরকারি তথ্য অনুযায়ী করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতা পুলিশে ৭ জন ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে ৯ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এভাবে পুলিশমহলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় চিন্তায় প্রশাসন।
রাজ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের তীব্রতা গোড়া থেকে কলকাতাতেই সবচেয়ে বেশি। একে তো কিছু মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব ছিল। তা ছাড়া এই রোগের তীব্রতা ও সংক্রমণ প্রবণতা কতটা তা শুরুতে অনেকেই বুঝে উঠতে পারেননি। ফলে প্রতিদিনিই নতুন কনটেইনমেন্ট জোন জুড়ছিল। তাই শহরে পুরোদস্তুর লকডাউন বাস্তবায়ণ কলকাতা পুলিশের জন্যও ছিল চ্যালেঞ্জ।
এমনকী এক সময়ে কলকাতার বিভিন্ন থানার ওসি-কনস্টেবলরা পর্যন্ত কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পড়ছিলেন। তাতে গোটা থানার কর্মীদের কোয়ারেন্টাইনে বা আইসোলেশনে পাঠাতে হচ্ছিল। সেই পরিস্থিতি পুলিশ কমিশনার রীতিমতো মাঠে নেমেই মহানগরের পুলিশ বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
কলকাতা পুলিশের অন্দরে করোনার থাবা ক্রমেই যেন বেড়ে চলেছে। বৃহস্পতিবারই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের। তাঁর নাম গৌতম মাহাতো। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চে কর্মরত ছিলেন তিনি। গৌতম বাবুকে নিয়ে কলকাতা পুলিশে মোট ১২ জন আধিকারিকের মৃত্যু হল। গৌতম বাবু সামনে থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া দিয়েছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
তবে ইদানীং পুলিশ বেশ কড়া ভাবে লকডাউন বাস্তবায়ণ করছে। লকডাউনের দিনগুলিতে প্রায় বনধের চেহারা নিচ্ছে মহানগর। তাতে ফলও দিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, কলকাতায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। যে কলকাতায় দিনে সাতশ-আটশ জন করে মানুষ রোজ করোনা আক্রান্ত হচ্ছিলেন এখন তা বেশ নেমে এসেছে। বরং এখন উদ্বেগ বাড়াচ্ছে উত্তর চব্বিশ পরগনা।
স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গতকাল কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৫৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেই সংখ্যা আরও কমেছে। বৃহস্পতিবারের বুলেটিন অনুযায়ী কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮১ জন। কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা এভাবে কমার একটা বড় কৃতিত্ব প্রাপ্য কলকাতা পুলিশের। আর তারই নেতৃত্ব দিয়েছেন অনুজ শর্মা। এই কাজ করতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হলেন তিনি।