কর্মবিরতিতে বন্ধ পেট্রাপোল সীমান্ত বাণিজ্য, সমাধান সূত্র খুঁজতে বৈঠক বন্দরে

0
551

দেশের সময়,পেট্রাপোল: লকডাউনে দীর্ঘদিন ব্যাহত হয়েছিল পেট্রাপোল বন্দরের সঙ্গে জড়িত বহু মানুষের জীবিকা।তারপর সীমান্ত বাণিজ্য এবং দু’দেশের মধ্যে যাত্রী পরিবহণ স্বাভাবিক হয়ে এলেও বন্দরের কাজের সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই অভিযোগ, এখনও আর্থিক সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে ট্রাক চালক, খালাসি, শ্রমিক-সহ নানা পেশার মানুষ আছেন। তাঁরা ‘পেট্রাপোল  স্থলবন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও কমিটি’ গড়ে নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন।

সোমবার কর্মবিরতি পালন করেন। তারজেরে এদিন পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে পণ্য রফতানি, আমদানির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দোকানপাট মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, হোটেল রেস্তরাঁ সব বন্ধ ছিল। কার্যত অলিখিত বন্‌ধের চেহারা নেয় বন্দর এলাকা। যানবাহনের অভাবে সমস্যায় পড়েন দু’দেশের যাত্রীরাও। 

কমিটির আহ্বায়ক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বনগাঁয় কোনও শিল্প নেই। কয়েক হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা বন্দরের উপরে নির্ভরশীল। অভিবাসন ও বিএসএফের অসহযোগিতার ফলে অনেকেই এখনও কর্মহীন। আমাদের আবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সম্ভব সমস্যার সুরাহা করুক। মঙ্গলবার সকালে কমিটির সদস্যরা প্রশাসনের সঙ্গেে আলোচনার টেবিলে বসেছেন, আলোচনার মাধ্যমে কোন সুরাহা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন চলবে।’’ 

পেট্রাপোল অভিবাসন দফতরের এক কর্তার কথায় , ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকা আমরা মেনে চলছি। এ বিষয়ে আমাদের করণীয় তেমন কিছু নেই। বিএসএফ এখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। ট্রাক চালকদের সমস্যার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আইনের বাইরে গিয়ে কিছু বলা বা কোন কাজ করা সম্ভব নয়’৷

কার্তিক বাবুর জানান,সমস্যায় ভুগছেন ট্রাকের টালক, খালাসিরা। বাংলাদেশে পণ্য খালি হতে দেরি হলে চালক-খালাসিরা বেনাপোলে ট্রাক রেখে এ দেশে চলে আসতেন। কারণ, বেনাপোলে খাওয়া-থাকা, ওষুধ, শৌচাগারের অভাব আছে। কিন্তু এখন সেটাও হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে থাকতে  হচ্ছে বেনাপোলে। ট্রাক চালকেরা  বলেন, ‘‘বেনাপোলে গিয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে ওখানে ডাক্তার দেখানোর সুযোগ নেই। আমরা চাই, আগের মতো ট্রাক চালকদের এ দেশে আসতে দেওয়া হোক। না হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পণ্যখালি করার ব্যবস্থা করা হোক।’’

পেট্রাপোল বন্দর শ্রমিকদের কথায়, দু’দেশের অসংখ্য যাত্রী যাতায়াত করেন এই পথেই, তাঁদের মালপত্র বহনের কাজে যুক্ত আছেন তাঁরা প্রায় শ’চারেক শ্রমিক। করোনা পরিস্থিতিতে কয়েক মাস কার্যত বন্ধ ছিল দু’দেশের মধ্যে মানুষজনের যাতায়াত,বন্ধ ছিল কাজকর্মও সম্প্রতি ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে যাত্রী চলাচল। কিন্তু অভিযোগ, কুলিদের মালপত্র বহনের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁদের দাবি, মূলত বিএসএফ, অভিবাসন ও ‘ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি’ তাঁদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন শ্রমিকদের অভিবাসন ও শুল্ক দফতরের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ পর্যন্ত যেতে দিচ্ছে না বিএসএফ।এই মত অবস্থায় তাঁরা এক রকম উপার্জনের. পথ হারিয়েছেন, সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না তাই বাধ্য হ’য়েই কর্মবিরতির পথে হেঁটেছেন৷

দু’দেশের সীমান্ত বাণিজ্য মহল যদিও বিষয়টি ভালভাবে নিচ্ছেন না,তাঁদের কথায় একেই দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সীমান্ত বাণিজ্য চরম ক্ষতির মুখে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে, অর্থ নীতি, সবে কাজ শুরু হয়েছে, উপার্জন বন্ধ রেখে কোন সমাধান হবে বলে মনে হয়না,তাঁদের দাবি দেশের নিরাপত্তা ব্যাবস্থাকে রক্ষা করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ্যের সেখানে কোন বিরোধিতা করা মুর্খের পরিচয়৷তবে শ্রমিকদের কথাও ভাবতে হবে, কারণ তাঁরা ছাড়া চলবে না৷এদিকে রাজস্ব ক্ষতির কথাও ভেবে আন্দোলন চালালে বাঁচবে দু’দেশের অর্থনীতি এবং সাধারন মানুষ বলে তাঁদের ধারনা ।

আজ দুপুর পর্যন্ত পেট্রাপোল স্থলবন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বিএসএফ এবং পেট্রাপোল অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তাদের দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা চলার পর বিএসএফ এর তরফে শ্রমিকদেরকে জানানো হয়েছে কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁদের সমস্যার কথা দিল্লিতে জানিয়ে তার সমাধান সূত্র বার করা হবে৷

এদিন সকাল থেকে ফের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে পণ্য রফতানি, আমদানির কাজ শুরু করা হয় বলে জানিয়েছেন পেট্রাপোল স্থলবন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক কার্তিক চক্রবর্তী৷

Previous articleআজ বিজেপির সভা,নজর কাড়ছে কেতুগ্রাম
Next articleমধ্যমগ্রামে শ্যুট আউট! দিনেদুপুরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক থেকে পরপর গুলি, খুন প্রোমোটার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here