দেশের সময়: করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসার ভিসা বন্ধের নির্দেশ জারি হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক থেকে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ভিসা নিয়ে রাখা যাত্রীরা ভারতে আসতে পেরেছেন। এরপর সীমান্ত সিল করা হয়েছে।
বনগাঁ হরিদাসপুর অভিবাসন দফতরের আধিকারিক জয়ন্ত বিশ্বাস জানান,বাংলাদেশের থেকে কোনও পর্যটক ১৫ এপ্রিলের আগে ভারতে আসতে পারবেন না। তবে বাংলাদেশে গিয়ে যে সমস্ত ভারতীয় আটকে রয়েছেন তাঁরা ফিরতে পারবেন।
শুধু কূটনীতিক, সরকারি অফিসার, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রকল্পের বিশেষ ভিসাধারীদের ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে। তাঁরা আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে ঢুকতে পারবেন। এই নির্দেশিকা দিল্লির ব্যুরো অফ ইমিগ্রেশন থেকেও সীমান্তের অভিবাসনকেন্দ্রগুলিতে পাঠানো হয়েছে।
পেট্রাপোল সীমান্তে চলছে যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং -ছবি- পার্থ সারথি নন্দী।
শিলিগুড়ির কাছে ফুলবাড়ি সীমান্তেও এই নির্দেশিকা এদিন থেকেই কার্যকরী হয়েছে। একইভাবে নির্দেশিকা উত্তরবঙ্গের আরও তিনটি সীমান্ত অভিবাসনকেন্দ্র কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা, মালদার মহদিপুর, বালুরঘাটের হিলিতেও কার্যকরী হয়েছে। এছাড়া বসিরহাটের ঘোজাডাঙ্গা, উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রোপোল ও নদিয়ার গেদেতেও এই নির্দেশিকা কার্যকরী হয়েছে।
উত্তরবঙ্গে আরও দুই দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। ভুটান সীমান্তের জয়গাঁ ও নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কিতে চেকপোস্ট রয়েছে। ইতিমধ্যে জয়গাঁ দিয়ে ভুটানে বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নেপালেও শুক্রবার থেকে আবার সেদেশের সরকার ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়া আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে উত্তরবঙ্গের সাতটি আন্তর্জাতিক সীমান্তেই একরকম অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ যাত্রী ও পর্যটক যাতায়াত করতেন। এখন বাংলাদেশ থেকে আসা বন্ধ হওয়ার পর এদিকে চিকিৎসার জন্য কিংবা বেড়াতে আসা মানুষজন দেশে ফিরে যেতে তৎপর হয়েছেন। ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকেও বাংলাদেশেও যাত্রীরা কম সংখ্যায় যাচ্ছেন। বাণিজ্য নিয়ে কোনও নির্দেশিকা না আসায় তা চলছে। তবে যে কোনও মুহর্তে নির্দেশিকা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারীরা।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের চিত্রও একই। বিদেশ মন্ত্রকের নির্দেশে এদিন সকাল থেকেই বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য উপচে পড়ে ভিড়। এই অচলাবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোশিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে এখনও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশিকা আসেনি।
তবে হঠাৎ করে এভাবে আমদানি রপ্তানির কাজ বন্ধ হয়ে গেলে দু’দেশের ব্যাবসায়ীরাই চরম ভাবে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
এদিকে শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটে দুই ইউক্রেনের নাগরিককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তাঁরা কোথা থেকে এসেছেন, কোথায় গিয়েছিলেন, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন বাসিন্দারা। জানতে পারেন, দুই বিদেশি ভুটান হয়ে নেপাল গিয়েছিলেন। নেপালে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং আইসোলেশনে রাখার কথা বলা হলে তাঁরা ভারতে চলে আসেন। পরে পুলিশের তৎপরতায় ওই দম্পতির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌছে দেওয়া হয়। করোনা ভাইরাস নিয়ে খড়িবাড়ি পুলিশের তরফে বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক অভিযান শুরু হয়েছে।