দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ফের উনিশের লোকসভার আগে ঠাকুরনগরের মতুয়া মেলার কথা মনে পড়ছে সকলের? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসেছিলেন বক্তৃতা দিতে। বড়মা বীণাপানিদেবীর পা ছুঁয়ে আশীর্বাদও নিয়েছিলেন মোদী। তারপর ঠাকুর পরিবারের রাজনীতিতে অনেক জল গড়িয়েছে।
তৃণমূলী মমতাবালা ঠাকুরকে হারিয়ে সংসদে গিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের আশঙ্কায় মতুয়া মেলা হবে কি হবে না তাই নিয়েও চরম কোন্দল শুরু হল ঠাকুরবাড়িতে।
মমতা ঠাকুর বলেন, সরকারি নির্দেশিকা মানা উচিত। পাল্টা শান্তনু হুঁশিয়ারির সুরে বলে দিলেন, কোনও সরকার কোনও প্রশাসন এই মেলা ঠেকাতে পারবে না। এটা বিশ্বাসের ব্যাপার।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষলক্ষ মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ এই মেলা উপলক্ষে ঠাকুরনগরে আসেন।
কিন্তু এবার কী হবে? ঠাকুরনগরেরই নাগরিকদের একটি অংশ এদিন সকাল থেকে স্টেশন, বাজার-সহ জনবহুল এলাকায় মেলা বন্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করেছেন। বিকেলে স্মারকলিপি আকারে সমস্ত স্বাক্ষর জমা দেওয়া হয়৷ঠাকুরবাড়ির দু’পক্ষের কাছেই। দেওয়া হয়েছে পুলিশ প্রশাসনকেও।
কিন্তু তার আগেই বিপরীত অবস্থান নিয়ে নিলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ ও বর্তমান বিজেপি সাংসদ।
মমতাবালা ঠাকুর বলেন, “করোনা ভাইরাস সারা পৃথিবীতে ত্রাসের সঞ্চার করেছে। এই পরিস্থিতিতে মেলা করা যায় কিনা আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেব। কিন্তু আমার মনে হয় সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে তা বন্ধ করাই উচিত।”
এদিকে শান্তনু সেসব মানতে রাজি নন। তাঁর সাফ কথা, “এখানে মানুষ বিশ্বাস নিয়ে আসেন যে, কাম সাগরে স্নান করলে সমস্ত রোগ সেরে যাবে। কেউ বিশ্বাসে আঘাত করতে পারে না। সারা বছর মতুয়ারা এই মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন।” তিনি আরও বলেন, “এখন যদি গঙ্গাসাগর মেলা থাকত তাহলে কি তা বন্ধ হতো? কুম্ভ মেলা থাকলে কি বলা হতো মেলা হবে না? তাহলে মতুয়ামেলার ক্ষেত্রে তা হবে কেন?”
বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত স্পোর্টস ইভেন্ট।
পুরভোট হবে কিনা তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে মতুয়াদের বারুণী মেলা কী করে সম্ভব বা অনুমতি দেওয়া হবে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার মাঝেই জোর দ্বন্দ শুরু হয়ে গেল ঠাকুরবাড়িতে।
অন্যদিকে ঠাকুরনগর সামাজিক নাগরিক সচেতন মঞ্চের এক প্রতিনিধি লিটন মৈত্র বলেন, নাগরিক বৃন্দের দাবি, বারুণী মেলায় দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান ধরনের লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত হন প্রতিবছর। দলবদ্ধভাবে সেই সমস্ত ভক্তরা ঠাকুর বাড়ির কামনা সাগরে স্নান করেন।
সেখানে যদি একজনের মধ্যে কোন ভাবে করোনা ভাইরাস থাকে ,তাহলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে অন্যের শরীরেও এমনই আশঙ্কার করছেন তাঁরা। ফলে এই বছর বারুনী মেলা বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে প্রশাসনের কাছে এই মর্মে স্মারকলিপি জমাদেন৷