দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কোভিডের প্রথম পর্যায়ের টিকাকরণ চলছে দেশজুড়ে। গত ১৬ জানুয়ারি এই টিকাকরণ শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় কারা টিকা পাবেন তার গাইডলাইন চূড়ান্ত করার কাজ শুরু করে দিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সরকারের শীর্ষ সূত্রে খবর, দ্বিতীয় দফায় টিকা নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও দ্বিতীয় দফায় কোভিড ভ্যাকসিন নিতে পারেন।
প্রথম পর্বের টিকাকরণ শুরুর আগে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মোদী বলেছিলেন, “রাজনৈতিক নেতারা টিকা দেওয়া শুরু হওয়ার পরই ঝাঁপিয়ে পড়বেন না, সবার মতো আপনাদেরও অপেক্ষা করতে হবে।’’ বিহার, হরিয়ানা, ওডিশার মতো রাজ্যগুলি সাংসদ, বিধায়ক এবং অন্য জনপ্রতিনিধিদের ‘প্রথমর সারির কোভিড যোদ্ধা’ হিসেবে চিহ্নিত করে টিকা পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্যে কিছু জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে প্রথম দফাতেই টিকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
প্রথম দফায় কোভিড যোদ্ধাদের টিকা দেওয়ার কথা বলেছিল কেন্দ্র। দ্বিতীয় দফায় ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের টিকাকরণ হবে বলে ঠিক হয়েছে। সেই হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সহ অধিকাংশ মুখ্যমন্ত্রী টিকা নিতে পারবেন। যদিও এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও নির্দেশিকা ঘোষণা হয়নি।
অক্সফোর্ডের তৈরি টিকা ‘কোভিশিল্ড’ ভারতে উৎপাদন করছে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। অন্য দিকে হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে। এই দুই টিকা জরুরি ভিত্তিতে সাধারণের উপর প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে ডিসিজিআই।
টিকাকরণের পর কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনায় নানা মহল থেকে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, টিকার জন্য মৃত্যু নয়। দুটি টিকাই নিরাপদ। হতে পারে দ্বিতীয়া দফায় টিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীরা জনগণের আস্থা বাড়াতে চাইবেন।
প্রসঙ্গত, করোনার টিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে গুজব রটছে বলে খবর মিলেছে। এই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা নিয়ে গুজব ছড়ানো ঠিক নয়’। এই পরিস্থিতিতে নিজে যেভাবে করোনার টিকা নিতে এগিয়ে এলেন নমো, তাতে ভ্যাকসিনের বিষয়ে দেশবাসী অনেকটাই আস্থা পাবেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
দেশে করোনার টিকাকরণ কর্মসূচির সূচনাকালে প্রধানমন্ত্রী দেশের বৈজ্ঞানিক এবং গবেষকদের কৃতজ্ঞাতা জানান। তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন তৈরি হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু দেশের বৈজ্ঞানিকরা দিন-রাত এক করে পরিশ্রম করেছেন। ওঁদের প্রশংসা প্রাপ্য। ৩ কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে ভারত সরকার বিনামূল্যে টিকা দেবে। করোনা বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া কর্মীদের আগে টিকা দিয়ে দেশ ঋণ শোধ করবে। দ্বিতীয় দফায় ৩০ কোটি মানুষ টিকা পাবেন। ধীরে ধীরে সব দেশবাসীকেই টিকা দেওয়া হবে।’
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ রয়েছে। এক মাসের মধ্যেই এই দুটি ডোজ নিতে হবে। ভ্রান্তির কোনও স্থান নেই। প্রথম ডোজ দু’সপ্তাহের মধ্যেই কাজ করবে। আপনারা করোনার সময়কালে ধৈর্য দেখিয়েছিলেন, টিকা দেওয়ার সময় সেই একই ধৈর্য প্রদর্শন করুন।’
টিকাকরণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘কোউইন’ অ্যাপটি। প্রতিষেধক নেওয়ার আগে তাতে নাম এবং পরিচয় নথিভুক্ত করতে হচ্ছে প্রাপকদের। প্রতিষেধক নেওয়ার পর কোনওরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি-না, তাও এই অ্যাপে নথিভূক্ত করা যাবে। কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় এই ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা যাবে সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যও মিলবে কোউইন-এ।