‘কন্ডোম পাওয়া গিয়েছে পৌষ মেলার মাঠে,বিস্ফোরক বিবৃতি বিশ্বভারতীর

0
456

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে যখন বিশ্বভারতী ফুটছে তখনই একটি বিস্ফোরক প্রেস বিবৃতি সামনে এল শনিবাসরীয় দুপুরে। যে বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার তথা জনসংযোগ আধিকারিক লিখেছেন, পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার অন্যতম কারণ বহিরাগতদের আনাগোনা। শুধু তাই নয়। ওই মাঠের একটি নির্দিষ্ট অংশে কী কী কাজ কারবার চলে তাও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

বিশ্বভারতীর লেটার হেডে ছাপা বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “পৌষ মেলার মাঠে বিপজ্জনক কাজকর্ম চলে। সেখান থেকে পাওয়া গিয়েছে মদের বোতল এবং ব্যবহার করা কন্ডোম।” শুধু তাই নয়। পৌষ মেলার একটি অংশ যৌনক্রিয়ার মৃগয়া ক্ষেত্রেও পরিণত হয়েছে বলে ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাত আটটার সময় মাঠ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও গভীর রাত পর্যন্ত নেশার ঠেক চলে। সেখানে গাঁজার মতো নিষিদ্ধ নেশাও চলে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই সমস্ত কারণেই যে মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া জরুরি সেটাই বলা হয়েছে বিশ্বভারতীর ওই প্রেস বিবৃতিতে।

প্রসঙ্গত এই যে বিবৃতি এটি গত ১৯ অগস্টের। কিন্তু সেদিন সংবাদমাধ্যমকে এটি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। হঠাৎই এদিন সেটি একটি সূত্র মারফত বাইরে চলে আসে। কেন এমন লেখা হল, ১৯ তারিখ কেন এটি সংবাদমাধ্যমেরব প্রতিনিধিদের দেওয়া হল না সে ব্যাপারে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী কারও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনে আপডেট করা হবে।

একইসঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাত আটটার সময় মাঠ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও গভীর রাত পর্যন্ত নেশার ঠেক চলে। সেখানে গাঁজার মতো নিষিদ্ধ নেশাও চলে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই সমস্ত কারণেই যে মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া জরুরি সেটাই বলা হয়েছে বিশ্বভারতীর ওই প্রেস বিবৃতিতে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বিবৃতির মূল লক্ষ্য এক শ্রেণির ছাত্রছাত্রী। তা ছাড়া স্থানীয় কিছু অংশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। যদিও এই বিবৃতিকে ‘বোগাস’ বলে কটাক্ষ করেছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, “উনি (পড়ুন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী) ২০১৮-তে ভিসি হয়েছেন। এতদিন কী করছিলেন? যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নিই যে এগুলো সত্যি কথা, এসব আটকানোর সম্ভাব্য উপায় কী হতে পারে? সে বিষয়ে উনি ছাত্র অধ্যাপক আশ্রমিকদের সাথে কোনো আলোচনা করেছিলেন কি?” তিনি আরও বলেন, “এসব বোগাস কথা৷ জেএনইউ-তেও আরএসএস কল্কে না পেয়ে ‘ব্যবহৃত কন্ডোম’-এর গল্প শুনিয়েছিল। এসব বলে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি সম্বন্ধে মানুষের মন বিষিয়ে দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন ভিসি। বিশ্বভারতীতে কেউ ওঁর সঙ্গে নেই।”

বিশ্বভারতীর এহেন বক্তব্য নিয়ে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সচিব সুনীল সিং বলেন, ‘‌‘‌এত নিরাপত্তারক্ষী এবং পুলিশ থাকার পরও কেউ কী ভাবে ওই ধরনের বেআইনি কাজ হয়?‌ স্থানীয়রা যাঁরা মেলাপ্রাঙ্গনে পাঁচিল দেওয়ার বিরোধিতা করেছেন, তাঁদের নামে মিথ্যে বলা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে এজন্য ক্ষমা চাইতে হবে।’‌’

পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড বেঁধে গিয়েছিল বিশ্বভারতীতে। ঠিকা সংস্থার যন্ত্রপাতি ভাঙচুর, নির্মীয়মাণ পাঁচিল, গেট লণ্ডভণ্ড করার মতো নজিরবিহীন তাণ্ডবের ছবি ধরা পড়ে শান্তি নিকেতনে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত দাবি করেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন রাজ্যপাল। পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বৈঠবিশক ডাকেন। কিন্তু সেই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ যাননি। গত দু’দিন-তিনদিন ধরে বিশ্বভারতীতে নতুন করে কোনও গণ্ডগোল না হলেও পরিস্থিতি একই জায়গায় রয়েছে। তবে এই বিবৃতিতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের।

Previous articleপাঞ্জাবে ভারত–পাক সীমান্তে খতম ৫ অনুপ্রবেশকারী
Next articleদাউদের বাড়ি করাচির ক্লিফটনে,অবশেষে স্বীকারোক্তি পাকিস্তানের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here