বিশেষ প্রতিবেদন
দেশের সময়ঃ-যতোই হম্বি তম্বি করুক না কেন এ রাজ্যে আসন্ন লোকসভায় যে বিজেপি কোন সুবিধা করতে পারবে না,তা জানিয়ে দিল বিজেপিরই অন্দরমহলের পর্যবেক্ষণ।সম্প্রতি বিজেপির দিল্লীর নেতাদের উদ্যোগে একদল পর্যবেক্ষক গোটা রাজ্যের বুথ ধরে ধরে পর্যালোচনা করে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে তাতে পরিষ্কার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে গোটা রাজ্যে বিজেপির সংগঠনের যা অবস্থা তাতে কোন ভাবেই লোকসভায় ভাল ফল প্রত্যাশা করা যায় না।এই রিপোর্টে বলা হয়েছে আগামি লোকসভায় এ রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে কোনটাই বিজেপির পক্ষে নিশ্চিত নয়।প্রসঙ্গত গত ২০১৪ লোকসভায় এ রাজ্য থেকে বিজেপি ২টি আসন জিতেছিল,এবার সে দুটি জেতাও খুবই মুশকিল।আশঙ্কা এ রাজ্যে বিজেপি লোকসভায় এবার শূণ্য হয়ে যেতে পারে।সূত্রের খবর দলের এই সমীক্ষায় এ রাজ্য নিয়ে একেবারে হতাশ হয়ে পড়েছেন অমিত শাহরা।অমিত শাহ মাত্র কয়েক মাস আগেও এ রাজ্যে এসে হুঙ্কার দিয়েছেন তারা রাজ্য থেকে তৃণমূলকে এবার উচ্ছেদ করে ছাড়বেন।অমিত শাহ এটাও বলেছিলেন যে এবার এ রাজ্যে বিজেপি ২২ থেকে ২৩টা আসন জিতবে।অমিত শাহের সেই প্রত্যাশা কতটা বাস্তব তা যাচাই করতেই দিল্লি থেকে একদল তরুণ প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে রাজ্য জুড়ে সমীক্ষা চালানো হয়।সপ্তাহ খানেক আগে সেই সমীক্ষার রিপোর্ট কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পেশ করেছেন সেই প্রতিনিধি দল।আর তাতেই ধরা পড়েছে রাজ্য বিজেপির এই ভয়াবহ পরিণতি হতে যাওয়ার পূর্বাভাস।সূত্র বলছে এই সমীক্ষা নিয়ে অমিত শাহ রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এক মাত্র মকুল রায় ছাড়া এই সমীক্ষাকে কেউই গুরুত্ব দিতে রাজি হননি।দিলীপ ঘোষদের বক্তব্য আচমকা এরকম রিপোর্টে কিছুই ধরা পড়া না,তারা রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে টক্কর দিতে তৈরি,লোকসভায় বিজেপি তৃণমূলের চেয়েও বেশী আসন পাবে বলে অভিমত দেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি।শোনা যাচ্ছে দিলীপবাবুর সুরে সুর মিলিয়েছেন রাজ্যের বেশীরভাগ বিজেপি নেতাই।তবে কোন যুক্তিতে তৃণমূলের চেয়ে রাজ্যে বিজেপি বেশী আসন পাবে তার কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেন নি দিলীপবাবুরা।তবে এটাও শোনা যাচ্ছে মুকুল রায় কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছেন,রাজ্যে সংগঠন যে অবস্থায় রয়েছে তাতে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের সমীক্ষা মিলে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব নয়।মুকুল রায় তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে জানান এ রাজ্যে ভোট করতে হয় একেবারে তৃণমূল স্তরের সংগঠন সাজিয়ে,এলাকায় এলাকায় শাসক দলের সঙ্গে টক্কর দেবার মত লোকবল না থাকলে এ রাজ্যে শুধু মানুষের ভোটে গদি উল্টে যাবে তেমনটা হবার নয়।এ রাজ্যে ভোটে কেউ জাতায় না,জিতে নিতে হয়।আর তার জন্য প্রতিটি ব্লকে ব্লকে সংগঠন দরকার,যা বিজেপির এই মূহুর্তে নেই।কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের সমীক্ষার সঙ্গে নাকি এই বক্তব্যের মিল দেখতে পেয়েছেন অমিত শাহরা।এরপর মকুল রায়কে নিজের মত করে একটি সমীক্ষা চালাতে বলেছেন অমিত শাহ।মুকুল রায় তার একান্ত অনুগতদের নিয়ে সেই পর্যবেক্ষণের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।সুত্র মারফত সর্বশেষ যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তা হোল,মুকুল রায়ের এই রিপোর্র্ট দেখেই এ রাজ্য সম্পর্কে চূড়ান্ত কৌশল নির্ধারণ করবেন অমিত শাহ।এমনটাও হতে পারে যদি দেখা যায় যে তৃণমূলকে টক্কর দেওয়া যাবে না তা হলে মমতার সঙ্গে গোপন সমঝোতা যেমন আছে তাকে আর দৃঢ় করার চেষ্টা হবে বলে খবর।যদিও মমতার সঙ্গে সমঝোতার বিষযটি কেউই স্বীকার করছে না,তবে মমতা য়ে ভাবে আবার কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে ফেডারেল ফ্রন্টের কথা বলতে শুরু করেছেন তাতে বিজেপির উতসাহিত হবার যথেষ্ট কারণ আছে।এতে বিজেপি বিরেধী ভোট যে ভাগ হবে তাতে যে বিজেপির সুবিধা তাও বিলক্ষণ জানে বিজেপি।তাই সব ঠিক চললে এ রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলের কথার লড়াই হবে কাজে সত্যি সত্যি লড়াই যে হবে না তা বলাই বাহুল্য।এ রাজ্যে কোন আসন না পেলেও বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে থেকে প্রধান বিরোধী দল হতে চাইবে,মমতারও তাতে আপত্তি থাকবে না কারণ এ রাজ্যে বিজেপি প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠলে মুসলিম ভোট এককাট্টা হয়ে তার দিকেই পড়বে।তাই মুখে বিজেপি তৃণমূল কুস্তি চলতে থাকবে আর গোপনে গোপনে মোদী দিদির দোস্তিও থাকবে।তবে সবটাই এখন নির্ভর করছে মুকুল রায়ের পর্যবেক্ষণ রিপোর্টের উপর।অন্তত সূত্রের খবর তেমনটাই।