এক বুধে এসেছিল আমপান, কাল বুধবার নিসর্গ আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা মুম্বাইতে

0
1444

দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ দেশব্যাপী করোনা মহামারীর এমন শোচনীয় দশার মধ্যেই কলকাতার পর এবার মুম্বাই বাণিজ্যনগরীতে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ৷

পূর্বাভাস সঠিক হলে আগামী কাল, বুধবার বিকেলের পর দমন ও মহারাষ্ট্রের হরিহরেশ্বরের মাঝামাঝি কোনও তট দিয়ে আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে ঢুকতে পারে। সোমবার রাত পর্যন্ত যা ইঙ্গিত, ঘূর্ণিঝড় সরাসরি আঘাত হানতে পারে মুম্বইতেই। ফলে ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটার গতিবেগের ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা বাণিজ্যনগরীতে। যে মহানগরে করোনা আক্রান্ত ৪১ হাজারেরও বেশি! ভয়ানক দুশ্চিন্তা ধারাভির মতো ঘিঞ্জি বস্তি নিয়ে!

সতর্কবার্তা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে প্রশাসন। সোমবার প্রস্তুতি বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মহারাষ্ট্র ও গুজরাটকে প্রয়োজনীয় কেন্দ্রীয় সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন। নিচু এলাকা থেকে লোক সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দুই রাজ্যেই। গুজরাটের সুরাট, ভারুচ-সহ পাঁচটি জেলায় এনডিআরএফের ১১টি দল মোতায়েন করা হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের মুম্বই, পালঘর, থানে, রত্নগিরি, রায়গড়, সিন্ধুদুর্গ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে মহারাষ্ট্র প্রশাসনও। মোতায়েন করা হয়েছে এনডিআরএফের ১০টি দল। দুই রাজ্যই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে।

বিশ্বব্যাপী মহামারীর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের মতো কোনও দুর্যোগ হাজির হলে পরিস্থিতি কতটা খারাপ হয়, তা ক’দিন আগেই চাক্ষুষ করেছে পশ্চিমবঙ্গ। এখনও বিপর্যস্ত জেলার বহু জায়গায় বিদ্যুৎ ফেরেনি। দফারফা হয়েছে সামাজিক দূরত্বের। বেশ কয়েকদিন ব্যাহত হয়েছে করোনা পরীক্ষা। ঘটনাচক্রে আমপান সুন্দরবনে আছড়ে পড়েছিল বুধবার। তার ঠিক দু’সপ্তাহ পর আবার এক বুধবারই দুর্যোগের মুখোমুখি দেশের পশ্চিম উপকূল। আরও একটি বিষয় কাকতালীয়। ২০০৪ সাল থেকে উত্তর ভারত মহাসাগরীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু হয়। প্রথম নামটি বাংলাদেশের দেওয়া। সেই ঘূর্ণিঝড় ‘অনিল’ গুজরাটে আছড়ে পড়েছিল। উম্পুনের হাত ধরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম তালিকা শেষ হওয়ার পর ১৬৯টি নামের দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করে মৌসম ভবন। প্রথম নামটি বাংলাদেশেরই দেওয়া নিসর্গ’। তারও সম্ভাব্য অভিমুখ গুজরাট-মহারাষ্ট্র!

গত কয়েক বছর ধরেই আরব সাগর অতিমাত্রায় সক্রিয়। গত বছর পাঁচটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছিল শুধু আরব সাগরেই। জুনে ঘূর্ণিঝড় ‘বায়ু’ ও অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় ‘মহা’র প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টি হয় গুজরাটে। এ বার ইতিমধ্যেই ওমান উপকূলে একটি গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেটি দুর্বল হওয়ার আগেই গভীর নিম্নচাপ পরিণত হয়েছে গোয়া লাগোয়া আরব সাগরের অন্য নিম্নচাপটি। আজ, মঙ্গলবার সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তার পরও শক্তি বাড়িয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। আমপানের মতো শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত না-থাকলেও, নিসর্গ উপকূলে ঢোকার সময় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ তো বটেই, কোথাও কোথাও চরম ভারী বৃষ্টিও হতে পারে। যেমন হয়েছিল কলকাতায়। স্থলভাগে ঢোকার পর নিসর্গ শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপ রূপে মধ্যপ্রদেশে পৌঁছতে পারে। ফলে উত্তর ও মধ্য ভারতেও বৃষ্টিবাদলার সম্ভাবনা।

Previous articleময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে শ্বাসরোধেই মৃত্যু জর্জ ফ্লয়েডের
Next articleকরোনা পরিস্থিতি পেরিয়ে ফের দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করাই লক্ষ্য, বললেন মোদী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here