দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ একুশ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেস করেছেন, ভেবেই তাঁর লজ্জা লাগছে৷ এ দিন কলকাতায় বিজেপি অফিসের সামনে সাংসদ সুনীল কুমার মণ্ডলের গাড়ি ঘিরে তৃণমূলের বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনায় এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ বিজেপি নেতার আরও বলেন, সিপিএমের ছেঁড়া চটি পরেই একুশ বছর কাটিয়ে দিয়েছে তৃণমূল৷
এ দিনই হেস্টিংস-এ বিজেপি-তে যোগদানকারী নতুন নেতাদের নিয়ে কলকাতা হেস্টিংস-এর বিজেপি অফিসে বৈঠক ডাকা হয়েছিল৷ বিজেপি-তে যোগদানকারী নেতাদের সংবর্ধনারও ব্যবস্থা করা হয়৷ কিন্তু এ দিন হেস্টিংস-এ বিজেপি অফিসের অদূরেই পথসভার জন্য মঞ্চ তৈরি করে তৃণমূল৷ সেখানে জড়ো হন তৃণমূল কর্মী- সমর্থকরা৷ এ দিন সকালে বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য সাংসদ সুনীল মণ্ডল হেস্টিংস-এ পৌঁছন৷ তাঁর গাড়ি বিজেপি অফিসের কাছে যেতেই পথ আটকান তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা৷ রাস্তায় শুয়ে পড়ে সাংসদের গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করা হয়৷ এই ঘটনা দেখে এগিয়ে আসেন বিজেপি কর্মীরা৷ দু’ পক্ষে শুরু হয় হাতাহাতি৷ কোনওক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ৷ দু’ পক্ষকে সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশবাহিনী৷
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপি অফিসে শুভেন্দু অধিকারী পরে বলেন, ‘আজকে আমাদের জন্য এখানে সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ কিন্তু তার আগে যে আচরণটা ঘটল, তাতে আমার ভাবতে লজ্জা লাগছে যে একুশ বছর ধরে আমি তৃণমূল দলটা করেছি৷ সত্যিই লজ্জা লাগছে৷ এই কালচার থেকে বাংলাকে বের করে আনতে হবে৷ ২১ বছর ধরে বাংলায় ফর দ্য পার্টি, অফ দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি ব্যবস্থা চলছে৷ ৩৪ বছর ধরে সিপিএম আমলেও তাই হয়েছে৷ সিপিএম-এর ছেঁড়া চটি পরেই আমরা একুশ বছর কাটিয়ে দিলাম৷ একমাত্র বিজেপি-ই পারে ফর দ্য পিপল, অফ দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে৷’
বিজেপি-তে যোগ দিয়ে দলের সংবর্ধনা সভায় শুভেন্দু অধিকারী এদিন জানিয়ে দিলেন, বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর হাতে বাংলা তুলে দেওয়াই তাঁর এবং তাঁদের সকলের প্রধান লক্ষ্য। কারণ, শুভেন্দুর কথায়, ‘‘যাতে বাংলা এবং কেন্দ্রে একই সরকার থাকে। তাতে একদিকে যেমন বাংলা কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সহায়তা পাবে, তেমনই রাজ্যের বেকার সমস্যার সমাধান হবে।’’
এদিন শুভেন্দু বলেন, “দল ইতিমধ্যেই আমাকে সুযোগ দিয়েছে পূর্ব বর্ধমানে পূর্বস্থলীতে বক্তব্য রাখার। আগামী দিনের কাজের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া শুরু করেছে। আমি সেগুলো পালন করব। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আদর্শে সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করব।”
এই প্রসঙ্গে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের কথাও তুলে আনেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেছি। তিনি আক্ষেপ করেছেন। দল নির্বিশেষে ভারতের সব রাজ্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু এই রাজ্যে সেটা হয়নি। তাই এই রাজ্যের ৭৩ লক্ষ কৃষক সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।”
এ দিনও নিজের পুরোন দলকে কোম্পানি বলে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু৷ দাবি করেছেন, যে কোনও মূল্যে বাংলাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে তুলে দিতে হবে৷সোনার বাংলা গড়ার কথাও শোনা যায় বিজেপি নেতার মুখে৷ যতদিন তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেননি, সরাসরি পুরোন দলকে আক্রমণ করেননি শুভেন্দু অধিকারী৷ কিন্তু বিজেপি-তে যোগদানের পর থেকেই রাখঢাক না করেই তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু৷ নিশানা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও৷ এ দিনও সেই ধারাই অব্যাহত রাখলেন তিনি৷