একুশ দিন সম্পূর্ণ লকডাউন বনগাঁ শহর

0
4285

দেশের সময়, বনগাঁ: করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবারে বনগাঁ পৌরসভা এলাকায় কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করল প্রশাসন৷ আগামী ২১ দিনের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন চালু হয়ে গেল বনগাঁ শহরে৷ রবিবার বিকেল থেকেই নতুন নিয়ম কার্যকরী হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে৷

দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হয়ে গেলেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বনগাঁ শহরেও প্রায় সমস্ত বাজার বড় বড় দোকানগুলিতে প্রতি মুহূর্তেই ভিড় করছেন ক্রেতারা কোনরকম সামাজিক দূরত্ব না মেনেই প্রতিদিন এইভাবে বাজার দোকানে ভিড় হওয়ায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন৷ নানা নির্দেশিকা জারি করেও কোনোভাবেই এই ভিড় বন্ধ করা যাচ্ছিল না অবশেষে নবান্নের নির্দেশে কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হলো জেলা প্রশাসন ।

এ ব্যাপারে শনিবার সন্ধ্যায় বনগাঁর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন পুরসভা ও পুলিশ সভাপতিত্বে একটি জরুরি বৈঠক করেন মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় পরে তিনি জানান রবিবার বিকেল পাঁচটার পর থেকে আগামী ২১ দিন বনগাঁ শহরের সমস্ত হাট বাজার দোকান বন্ধ থাকবে শুধুমাত্র হাতেগোনা কয়েকটি বড় ওষুধের দোকান খোলা থাকবে৷

যশোর রোডে ওষুধের দোকানে ভিড়।

ইতিমধ্যেই বনগাঁ হাসপাতাল কালীবাড়ি এলাকায় এক গৃহবধূর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, প্রশাসনের বক্তব্য এই ঘটনার পরেও যেভাবে মানুষ বাজার দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন তাতে যে কোনো সময় সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়ে যেতে পারে সেই আশঙ্কায় সংক্রমণ আটকাতে বনগাঁ শহরের যশোর রোড, চাকদা রোড, বাগদা রোড মূলত এই তিনটি রাস্তা সহ সংলগ্ন পুরসভার ১, ২, ৪, ১০, ১৩, এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কে কন্টাইন্মেন্ট জনের মধ্যে রাখা হয়েছে ৷

এইসব এলাকার বাসিন্দারা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া এখন থেকে আর বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না বিশেষ জরুরী প্রয়োজন হলে বনগাঁ থানা পৌরসভা এবং মহাকুমা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে তাঁদের প্রয়োজনীয়তার কথা জানাতে হবে সেখান থেকেই বাইরে বের হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে এর পাশাপাশি এখন থেকে বনগাঁ পৌরসভার সমস্ত ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বাড়ি একটি করে বিশেষ অনুমতি পত্র পৌঁছে দেয়া হচ্ছে৷

যেখানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ক্রয় সহ বিশেষ জরুরী প্রয়োজনে পরিবারের একজন নির্দিষ্ট করা সপ্তাহের মাত্র দুদিন রাস্তায় বের হতে পারবেন এদিকে শুধু যশোররোডের হাতেগোনা কয়েকটি ওষুধের দোকান বাদ দিয়ে বাকি এলাকায় ওষুধের দোকান বন্ধ থাকার নির্দেশ জারিকরায় চিন্তিত ওষুধ ব্যবসায়ীরা তাঁদের দাবি দোকান খোলা রাখলে সমস্ত ওষুধের দোকানে খোলা রাখতে হবে প্রয়োজনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সময় বেঁধে দেওয়া হোক এ ব্যাপারে তারা রবিবার মহকুমা শাসকের সঙ্গে দেখা করে তাদের দাবি জানান ।

বনগাঁ মহাকুমা পুলিশের আধিকারিক অশেষ বিক্রম দস্তিদার জানান করোনা পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে আমরা বাধ্য হয়েছি সাময়িকভাবে কিছু সমস্যা হলেও বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে মানুষ আস্তে আস্তে ধাতস্থ হয়ে যাবেন বাজার বন্ধ থাকলেও পাড়ায়-পাড়ায় সবজি মাছ বিক্রেতারা সাইকেল রিক্সা করে তাঁদের সবজি নিয়ে পৌছে যাবেন সেখান থেকেই সব কিছু সংগ্রহ করতে পারবেন বাসিন্দারা ,পাশাপাশি মুদি দোকান সহ অন্যান্য দোকান গুলিকে হোম সার্ভিস চালু করার জন্য বলা হয়েছে ৷ দেখুন ভিডিও:

এদিকে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে বিরোধিতা করে কংগ্রেস এবং সিপিএম এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে বিরোধীদের কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে রাতারাতি সিদ্ধান্ত নিয়ে তালাগু করার এই চেষ্টা প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের দিক নির্দেশ করছে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলে এমন সিদ্ধান্ত কার্যকরী করা সঠিক হচ্ছে না৷

বনগাঁয় ত্রাণের লাইনে অসুস্থ হয়ে পড়লেন এক বৃদ্ধা।

টানা লকডাউনের জেরে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের,বহু মানুষ যশোর রোড সহ বিভিন্ন রাস্তায় তীব্র গরম আর রোদের তাপে অসুস্থ হ’য়ে পড়ছেন ত্রাণের লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে৷তবু আরও ২১ দিনের লকডাউনের কথা মাথায় রেখে তাঁরা শরীরের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে,খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন এভাবেই৷

খবর পেয়ে নিউমার্কেট এলাকায় ছুটে যান পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য,নিজেই ভিড় সামলে ত্রাণ তুলে দেন দুর্গতদের হাতে,এদিন ৩নং ওয়ার্ডের বহু মানুষ ত্রাণ সংগ্রহ করেন যশোররোডের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে,তবে এখানে প্রাচীন শিশু গাছের ছায়ায় কিছুটা হলেও স্বস্থি ছিল জানান অনেকেই।-ছবি দেশের সময়৷
ত্রাণের অপেক্ষায় বনগাঁযশোর রোডে।
বনগাঁ নিউমার্কেট ব্যাবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে এদিন প্রায় ১২০০ গরীব মানুষের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়- দেশের সময়৷
Previous article১৭মে-র পর লকডাউন কি উঠবে?উঠলে কীভাবে! কাল মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর
Next articleছড়িয়ে আছে রুটি…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here