দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাত পোহালেই শেষ হবে একুশের নির্বাচন। তার ক’দিন বাদেই ফল ঘোষণা। এমন প্রেক্ষাপটে ফের তৃণমূলে ভাঙন। নির্বাচনের আবহেই তৃণমূল ছাড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। জানা যাচ্ছে, তৃণমূল নেতৃত্বকে ই-মেল করে দলত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন উপেন। কয়েকদিন ধরেই সিএএ ইস্যুতে তৃণমূলের সঙ্গে মতান্তর হয়েছিল তাঁর। তার জেরেই উপনের তৃণমূলত্যাগ কিনা, সে নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। যদিও তৃণমূল ত্যাগের সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছেন উপেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা আসনে তৃণমূলের টিকিটে জয় পান উপেন। সিবিআই -র অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিককে মন্ত্রী করেছিল মমতা সরকার। ২০০২ সালে সিবিআই -এর অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর হিসেবে অবসর নিয়েছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ভোটের মুখে শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। অন্যদিকে, লক্ষ্মীরতন শুক্লা দল থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। শুভেন্দু, রাজীবের পাশাপাশি বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তী, প্রবীর ঘোষাল-সহ একঝাঁক তৃণমূল নেতারা বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। যা ঘিরে উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি।
তৃণমূলত্যাগীদের বিঁধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘যাঁরা তৃণমূলে থেকে তৃণমূলের খারাপ করেন, তাঁদের দলে থাকার প্রয়োজন নেই।তৃণমূল তাঁরাই করবেন, যাঁরা মানুষের কাজ করবেন। শান্তি, স্বস্তিতে থাকতে গেলে তৃণমূলই আপনাদের ভালো বন্ধু। তৃণমূলে কেউ অন্যায় করলে আমি গার্জেন হিসেবে রয়েছি। একদম কানমূলে দেব। দরকার হলে গালে থাপ্পড় দেব। অন্যায় আমি বরদাস্ত করব না। তাই দু-একজন ভয় পেয়ে পালিয়েছে। ভাবছে আমি টিকিট দেব না। কেন দেব?’ দলত্যাগীদের উদ্দেশ্যে তৃণমূল সুপ্রিমো এও বলেছিলেন, ‘তৃণমূল টিকিট দেবে না। তাই ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। কেন টিকিট দেব?’
৩৪ বছরের বাম শাসনের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার ক্ষমতা দখল করতেই তাঁর সঙ্গে হাত মেলান ২০০২ সালে সিবিআই-এর অতিরিক্ত ডিরেক্টর পদে বসা উপেন বিশ্বাস। লালুপ্রসাদকে পশুখাদ্য মামলায় জেলে পাঠানো উপেন বিশ্বাস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলেই দলের অন্দরের খবর। সেই তিনিই তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে চিঠি পাঠিয়ে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন, সরে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের কোর কমিটি থেকেও। স্বাভাবিক ভাবেই উপেন বিশ্বাসের দলত্যাগ নিয়ে আলোড়ন পড়েছে ঘাসফুল শিবিরে।
প্রসঙ্গত, ভোটে দাঁড় করিয়ে বিধায়ক করার পাশাপাশি উপেন বিশ্বাসকে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যান দফতেরর মন্ত্রীও করেছিলেন মমতা। পরে, ভোটে হারলে তাঁকে এসটি-এসসি কমিশনে ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদমর্যাদার দায়িত্বও দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। দলের সিবিআই বিষয়ক পরামর্শদাতার দায়িত্বও ছিল উপেন বিশ্বাসের হাতে। বুধবার সমস্ত দায়িত্বই ছেড়ে দিলেন তিনি।
কিন্তু ভোটের একদম শেষপ্রান্তে এসে কেন দল ছাড়লেন তিনি? সূত্রের খবর, আপাতত প্রাথমিক ভাবে ‘পারিবারিক’ কারণই সামনে এনেছেন তিনি। তবে, বিজেপিতে তাঁর যোগদানের কোনও সম্ভাবনা আছে কিনা, সেই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে।