উল্টোপুরাণ: মকর সংক্রান্তিতে কমে গেল ঠান্ডা! গঙ্গাসাগর সহ কলকাতার বিভিন্ন ঘাটে চলছে পূণ্যস্নান

0
456

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পৌষ সংক্রান্তিতে তীব্র কামড় বসায় শীত। এমনটাই নাকি প্রকৃতির নিয়ম, লোকমুখেও তেমনই শোনা যায়। সংক্রান্তির দিনে গঙ্গাসাগর থেকে আসা ঠান্ডা হাওয়াতেই নাকি হাড়কাঁপানো ঠান্ডা বাড়ে রাজ্যজুড়ে। কিন্তু এবার হল উলটপুরাণ। আজ, পৌষ সংক্রান্তির দিন ঠান্ডা বাড়ার বদলে বরং উষ্ণতার পারদ চড়ে গেল সবাইকে অবাক করে দিয়ে।


রাত বাড়তে না বাড়তেই জনস্রোত আছড়ে পড়ল গঙ্গাসাগরে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ যোগ দিচ্ছেন পুণ্যস্নানে। বুধবার সারাদিন চলবে স্নান। সাগর মেলাকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে তৈরি প্রশাসনও। পুণ্যার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই কারণে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স সহ সমস্ত পরিষেবার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, এবছর গঙ্গাসাগরে পুণ্যার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩৫ লক্ষ।
পুণ্য অর্জনের জন্য মঙ্গলবার বিকেল থেকেই সাগরে জমছিল ভিড়। অস্থায়ী শেডগুলিকে তিলমাত্র জায়গা নেই। খোলা আকাশের নিচেও পুণ্যার্থীদের ভিড় ছিল। অনেকেই গভীর রাতের প্রথম স্নান করার জন্য বসেছিলেন সাগরের তীরে। তবে অন্য বছরের মতো এবছর পুণ্যস্নানের মাহেন্দ্রক্ষণ নিয়ে মতবিরোধ নেই। পঞ্জিকা মতে, ১৪ তারিখে গভীর রাত থেকে শুরু হয়ে তা চলবে ১৫ তারিখ ১২টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত।


গঙ্গাসাগরে পূণ্যস্নানের জন্য বিদেশ থেকেও এসেছেন তীর্থযাত্রীরা। সাগরসঙ্গমে স্নান সেরে কপিল মুনি মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। রাতের অন্ধকার বা ভোরের কুয়াশা, কোনও কিছুই দমাতে পারছে না তাঁদের। ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই সাগরে স্নান করছেন তাঁরা। মেলা থেকে স্নান সেরে ফিরেও গিয়েছেন অনেকে। পুরো মেলা পরিচালনার জন্য সাগরে উপস্থিত রয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, যুবকল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং বিদুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। গঙ্গাসাগরে জায়গায় জায়গায় চলছে নজরদারি।

শীত কমে যাওয়ায় মানুষের ঢল নেমেছে পূণ্যস্নানে, এদিকে কলকাতা সহ জেলার বিভিন্ন নদীর ঘাটেও চলছে মকর সংক্রান্তির পূণ্যস্নান। বাবুঘাট, জাজেস ঘাট , ইছামতীর ঘাট সহ অন্যান্য ঘাটে পূণ্যস্নান করছেন হাজার হাজার মানুষ।

দিন কয়েক ধরেই জাঁকিয়ে পড়েছিল ঠান্ডা। ক্রমেই দাপট বাড়াচ্ছিল শীত। কিন্তু এই জোরদার ঠান্ডা অনেকটাই কমে গেল পৌষ সংক্রান্তির দিনে। শহর কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে গেল প্রায় দেড় ডিগ্রি। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবারই এই তাপমাত্রা ছিল ১২। কয়েক দিন ধরেই স্বাভাবিকের চেয়ে দু-এক ডিগ্রি নীচেই ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বুধবার থেকেই বদলে গেল অঙ্ক।

শুধু কলকাতা নয়, দক্ষিণবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতেও বেড়েছে তাপমাত্রা। আগামী দিনগুলিতেও তাপমাত্রা আরও বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে। উত্তর ভারতে একের পর এক পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ধেয়ে আসার প্রভাব পড়বে দক্ষিণবঙ্গে। বৃষ্টির সম্ভাবনা আপাতত না থাকলেও, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পৌঁছতে পারে ১৬-১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৩০ ডিগ্রিও।


কিন্তু এবার হল উলটপুরাণ। আজ, পৌষ সংক্রান্তির দিন ঠান্ডা বাড়ার বদলে বরং উষ্ণতার পারদ চড়ে গেল সবাইকে অবাক করে দিয়ে।

Previous articleভারত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে , অসৎ স্বার্থে যত অশান্তি, দাবি মোদীর
Next articleডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে আসছেন ,নিরাপত্তা-প্রস্তুতি শুরু উচ্চ পর্যায়ে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here