দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ উচ্চ প্রাথমিকের জট কাটছে না। ফের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে উচ্চ আদালতে অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। উচ্চ প্রাথমিকে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া চলতেই পারে তবে কাউকে নিয়োগপত্র দেওয়া যাবে না।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ঘোষণা করেছিলেন, আগামী ১৯ জুলাই থেকে কাউন্সেলিং শুরু হবে এবং ৪ আগস্টের মধ্যে সেই প্রক্রিয়া শেষ হবে। তবে এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগপত্র দেওয়া যাবে না। চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া যেতেই পারে। তবে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সেই তথ্য হাইকোর্টে জমা দিতে হবে। যেখানে সেই সকল প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, লিখিত এবং ইন্টারভিউ নম্বর লেখা থাকবে।
অভিযোগ উচ্চ প্রাথমিকের যে চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের সেই তালিকায় অস্বচ্ছতা রয়েছে।
বলা হয়েছে উচ্চ প্রাথমিকের চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সমস্ত চাকরিপ্রার্থীর পার্সোনালিটি টেস্ট করতে হবে। এছাড়া কে কত নম্বর পাচ্ছেন তার তথ্য নথিভুক্ত করার ব্যবস্থাও রাখা দরকার। স্বচ্ছ পদ্ধতিতে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, চাকুরি প্রার্থীদের যোগ্যতার মান বিচার না করেই মেধাতালিকা প্রকাশ করেছে এসএসসি। সুবীর স্যান্যাল জানিয়েছেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী মেধাতালিকায় প্রার্থীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা জারি রয়েছে। এসএসসির তরফে কিছুদিন আগে ইন্টারভিউয়ের জন্য যে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠে। তারপর হাইকোর্ট থেকে ওই মেধাতালিকায় স্থগিতাদেশ জারি করে আবার নতুন করে চাকরিপ্রার্থীদের নাম ও নম্বরসহ মেধাতালিকা প্রকাশ করতে বলা হয়।
হাইকোর্টের কথা মতোই নতুন মেধাতালিকা প্রকাশ করে এসএসসি। সেখানে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পাওয়া প্রার্থীদের নাম এবং প্রাপ্ত নম্বরের উল্লেখ করা হয়। এমনকি যাঁরা সুযোগ পাননি দেওয়া হয় তাঁদের তথ্যও।
এরপর স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগে সবুজ সংকেত দেয় হাইকোর্ট। সেই মতো ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার তোড়জোড়ও শুরু হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ে ফের স্থগিতাদেশ জারি করল হাইকোর্ট।
এর আগে একক বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী যে সকল চাকরিপ্রার্থী কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন সেই নিয়ে কমিশন কী পদক্ষেপ নিয়েছে সেটিও জানাতে হবে। ১২ সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত তথ্য দিতে হবে হাইকোর্টকে এরপরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে হাইকোর্ট। এখন দেখার এই জল কতদূর গড়ায়।