উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল,হাইকোর্টে বড় ধাক্কা খেল রাজ্য

0
1151

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আপার প্রাইমারি তথা উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় রকমের দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল। পরীক্ষার্থীদের একাংশ এ ব্যাপারে দ্বারস্থ হয়েছিলেন আদালতের।
প্রায় আড়াই হাজার পরীক্ষার্থীর দায়ের করা সেই মামলার রায়ে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট চূড়ান্ত রায়ে জানিয়ে দিল, নিয়োগ প্রক্রিয়া পুরোপুরি বাতিল করে একেবারে নতুন করে শুরু করতে হবে। পরে পরীক্ষার্থীদের তরফে আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দাবি ছিল, পরীক্ষার্থীদের ডকুমেন্ট চেক করার স্তর থেকে সমস্ত প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করা প্রয়োজন। আদালত পরীক্ষার্থীদের সেই আবেদনের পক্ষেই রায় দিয়েছে।

তিনি জানান, ২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। মোট ১৪৩৩৯ টি শূন্যপদ পূরণের কথা ছিল। কিন্তু চার বছর হয়ে গেলেও তা সম্পূর্ণ হয়নি। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এদিন নির্দেশ দিয়েছেন, গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে। এ ব্যাপারে যে প্যানেল হয়েছে তাও বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
হাইকোর্টের এও নির্দেশ সমস্ত প্রক্রিয়াটি নতুন করে ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু করতে হবে। ৫ এপ্রিলের মধ্যে ডকুমেন্ট চেক ইত্যাদি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ১০ মের মধ্যে ইন্টারিভিউ নেওয়া শেষ করতে হবে। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। তিনি জানান, যাঁরা যোগ্য তাদের সিলেকশন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। যাঁরা যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নির্বাচিত হয়েছিলেন তাঁদের বাদ দিতে হবে।

হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া গাইডলাইনে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সমস্ত রকম প্রক্রিয়া শেষ করে নিয়োগ করতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে৷২০১৪ সালে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। সে সময় শূন্যপদ ছিল ১৫ হাজারের মতো। পরীক্ষার্থী ছিলেন ৫ লক্ষ ৪৩ হাজার। কিন্তু লোকসভা ভোটের জন্য ওই বছর মার্চে পরীক্ষাগ্রহণ থমকে যায়। শেষমেশ ২০১৫-র অগস্টে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট) হয়।

২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের ডকুমেন্ট ভেরিভিকেশনের জন্য না ডেকে অপ্রশিক্ষিতদের ডাকা হয়েছে বলে কয়েকশো প্রার্থী হাইকোর্টে মামলা করেন। এই মামলার শুনানিতে টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (টেট), শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং বিএড বা ডিএলএড প্রশিক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট নম্বরের ভিত্তিতে উচ্চ প্রাথমিকে কর্মপ্রার্থীদের মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে বলে সম্প্রতি নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

একুশ সালে বিধানসভা ভোট আসন্ন বাংলায়। তার আগে হাইকোর্টের এই রায় বর্তমান সরকারের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন অনেকেই। এমনিতেই অনেকেরই ধারনা তৈরি হয়েছে যে বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষক নিয়োগে বড় রকমের দুর্নীতি হয়েছে। টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া, নির্দিষ্ট যোগ্যতা ছাড়াই চাকরি দেওয়া এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ রয়েছে বিরোধীদের। আদালতের এদিনের রায়ের পর সেই ধারনা আরও মজবুত হল বলেই পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত।

Previous articleস্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়ে ‘কড়া’ প্রত্যাঘাত মুখ্যসচিবের!
Next articleভেন্টিলেশন থেকে বেরিয়ে স্ত্রী-মেয়ের সঙ্গে কথাও বললেন বুদ্ধদেব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here