দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। বর্ষা শুরুর পথ চেয়ে রয়েছেন অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে আজকের জন্য সেভাবে কোনও ভরসার কথা শোনাল না আবহাওয়া দফতর। বরং আজ রবিবার চড়তে পারে তাপমাত্রার পারদ। উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিন উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং নদিয়া জেলাগুলিতে বিকেলের দিকে হতে পারে বৃষ্টিপাত। চলতি বছর যথাসময়ে প্রবেশ করবে বর্ষা, জানাচ্ছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। কেরালায় মৌসুমী বায়ু ঠিক সময়ে প্রবেশ করলেও বাংলায় বর্ষা প্রবেশের সঠিক সময় এখনও জানায়নি আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আবহাওয়াবিদদের কথায়, কেরলে বর্ষা ঢোকার সঙ্গে কলকাতায় বর্ষা ঢোকার কোনও সম্পর্ক নেই। কেরলে যদি বর্ষা ঢুকতে দেরিও করে, তাহলে বাংলায় তার কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মত আবহবিদদের।
২৬ মে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর। তার আগে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সচিব রাজীব গৌবা। বিপর্যয়ের আগেই যাতে সব প্রস্তুতি সেরে ফেলা যায় সেই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে যাতে কোনও ভাবেই কোভিড কেয়ার সেন্টার ও হাসপাতালগুলিতে সমস্যা না হয় সে দিকে বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল ও অন্য আধিকারিকরা। বিপর্যয়ের আগেই উপকূলের নিচু এলাকাগুলি থেকে মানুষকে বার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। খাবার, জল, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যাতে অভাব না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে কমিটিকে। কেন্দ্র জানিয়েছে, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৬৫টি দলকে মোতায়েন করা হয়েছে এই দুই রাজ্যে। এ ছাড়া আরও ২০টি দল তৈরি রয়েছে। প্রয়োজন পড়লে তাদের কাজে নামানো হবে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনীকেও তৈরি রাখা হয়েছে। প্রয়োজন পড়লে তারাও উদ্ধার কাজ ও অন্যান্য সাহায্যে নেমে পড়বে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, এই মুহূর্তে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করছে। নিম্নচাপের গতি প্রকৃতির দিকে নজর রেখেছে নৌবাহিনী। হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যান্ড ডিজাস্টার রিলিফ (এইচএডিআর)-এর আওতায় নৌবাহিনীর ৪টি জাহাজকে তৈরি রাখা হয়েছে। পশিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে যেখানে ক্ষয়ক্ষতি হবে সেখানে ত্রাণ ও অন্য সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছে যাবে এই জাহাজগুলি। এ ছাড়া বিশাখাপত্তনমে আইএনএস ডেগা ও চেন্নাইয়ে আইএনএস রজলিকে তৈরি রাখা হয়েছে। প্রয়োজন পড়লে নৌবাহিনীর বিমানে করে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে আনার কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
বাংলায় বর্ষা ঢোকার স্বাভাবিক সময় সাধারণত ৮ জুন।তবে জলপাইগুড়িতে ৭ জুন এবং কলকাতায় ১২ জুন প্রবেশ করতে পারে বর্ষা জানা গিয়েছে এমনটাই। অন্যদিকে, দেশে বর্ষা কেমন হবে, এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়া মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের তরফে জানানো হয়েছে, এবছর স্বাভাবিক বর্ষাই হবে দেশে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয় বর্ষা। রবিবার রাজ্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৪ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৯.২ ডিগ্রি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ। আজ শহর কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩৬ ডিগ্রির কাছাকাছি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ৩০ ডিগ্রির কাছাকাছি।
একদিকে যখন অস্বস্তি বৃষ্টি করছে তাপমাত্রার বৃদ্ধি, তেমনই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উদ্বেগ বাড়াচ্ছে প্রশাসনের। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শনিবার সকালে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এরপর তা উত্তর -উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে।বুধবার সকালে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে পৌঁছবে এই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। বুধবার সন্ধ্যায় আছড়ে পড়তে পারে ইয়াস। তবে গত বছরের ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় আমফানের থেকে যশের দাপট কম হওয়ার সম্ভাবনা। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, রাজ্যে ৪০-৪৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। মঙ্গলবার হাওয়ার বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৭০ কিমি।