দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে কিছু বললেই এজেন্সির ভয় দেখানো হচ্ছে বলে ফের একবার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর আহ্বানে নিট-জয়েন্ট পরীক্ষা স্থগিত করার ইস্যুতে সাত অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়েছিলেন। সেই বৈঠকেই এজেন্সি লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন মমতা। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কিছু কথা বলতে গেলেই এজেন্সির ভয় দেখায়। জনগণের বিরুদ্ধে কিছু করলে আমি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বলবই। তাতে যদি আমায় গ্রেফতার করে করুক!”
এদিন সনিয়ার ডাকা বৈঠকে বাংলা ছাড়াও ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, ছত্তীসগড়, পাঞ্জাব, পুদুচেরি এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। জয়েন্ট এবং নিট পরীক্ষা ইস্যু হলেও, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অন্যান্য ইস্যুতেও সরব হন অবিজেপি সরকারগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা। এবং তার সুর বেঁধে দেন মমতাই।
এদিনও আর্থিক পাওনা নিয়ে রাজ্যগুলির প্রতি যে কেন্দ্র বঞ্চনা করছে সে ব্যাপারেও সরব হন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য থেকে সব টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে আর রাজ্যকে এক পয়সা দিচ্ছে না। রাজ্যগুলো টাকা পাবে কোথা থেকে? টাকা কি আকাশ থেকে পড়বে?”
সমসস্যার মুখে দাঁড়িয়েও কথা বলা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন মমতা। তাঁর কথায়, “দুর্ভাগ্যজনক অবস্থার মধ্যে আমরা রয়েছি। আমরা গুরুতর সমস্যার মুখে। কিন্তু আমরা বলতে পারছি না। বললেই এজেন্সি লাগিয়ে দিচ্ছে। ভয় দেখাচ্ছে। এটা গণতন্ত্র বলে না।”
কেন্দ্রীয় প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর নাম নিয়েও তোপ দাগেন মমতা। তাঁর কথায়, “রাজীব গান্ধী মারা যাওয়ার পর আমি যখন কেন্দ্রের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণমন্ত্রী ছিলাম তখন রাজীব খেলরত্ন পুরস্কার চালু করেছিলাম। ইন্দিরাজির নামে শুধু আবাস যোজনা রয়েছে। আর এখন সবেতে প্রধানমন্ত্রীর নাম। কিন্তু টাকা কেন্দ্র আর রাজ্য ফিফটি ফিফটি দেয়! এমন একটা ভাব করছে যেন রাজ্য সব ফালতু কাজ করে আর যা করছে কেন্দ্র!” সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পরেছে বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সম্প্রতি ফেসবুককে গেরুয়া নিয়ন্ত্রণের যে অভিযোগ উঠেছে তারঅ উল্লেখ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা এদিন বলেন, “ফেসবুক থেকে ফেক নিউজ—সর্বত্র কণ্ঠরোধ চলছে।”
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর এ হেন বক্তব্য রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, “যারা চুরি-জোচ্চুরি করেছে তারাই কেবল এজেন্সিকে ভয় পায়। মুখ্যমন্ত্রী বোধহয় সেসব কিছু আন্দাজ করেই আগাম গান গেয়ে রাখলেন।”
বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “কণ্ঠরোধের কথা মুখ্যমন্ত্রীর মুখে মানায় না। কেন্দ্রে যেমন বিজেপি কণ্ঠরোধ করছে, এজেন্সিকে রাজনৈতি স্বার্থে ব্যবহার করছে সেই একই কাজ বাংলার মাটিতে মুখ্যমন্ত্রীর দল করছে। বিরোধীদের শায়েস্তা করতে পুলিশ পাঠিয়ে মিথ্যে মামলা দিচ্ছে। আর বাংলায় সংবাদমাধ্যমের কতটা স্বাধীনতা রয়েছে তা তো আরামবাগ টিভির সম্পাদক সফিকুল ইসলামকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে।”