দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: সময়ে আন্দাজ করা গিয়েছিল, সেই সময়েই শুরু হয়েছে ল্যান্ডফল। এর সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে নানা ক্ষয়ক্ষতির খবর আসতে শুরু করেছে। ঘরবাড়ি ভাঙছে, উপড়ে পড়ছে গাছপালা, উপকূল এলাকায় বাড়ছে জলোচ্ছ্বাস, প্রবল বেগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার এক দিক দিয়ে স্থলভাগে ঢুকে পড়ছে ঘূর্ণিঝড় আমপান (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন)। দুপুর থেকেি ঝড়ের দাপটে বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর আসতে শুরু করেছে। কোথাও গাছ ভেঙে পড়ছে। কোথাও আবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচাবাড়ি।
এই সাইক্লোন একটা বিশাল স্ট্রাকচার। এর একটি আই তথা চোখ রয়েছে। তার বাইরে রয়েছে ওয়াল ক্লাউডের আস্তরণ। তার বাইরে একটা আউটার পেরিফেরি থাকে। প্রথমে ফরওয়ার্ড সেকশন যাবে। তার পর আই তথা চোখ যাবে। তার পর শেষ অংশটা আছড়ে পড়বে মাটিতে। তাই অন্তত চার ঘণ্টা ধরে চলবে এই ল্যান্ডফল। এমনটাই জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঝড়ের দাপট থেকে রক্ষা পায়নি শহর কলকাতাও। বিকাল ৪টে নাগাদ শহরে ঝড়ের দাপট ১০০ পেরিয়ে যায়। যদিও তার ঢের আগে থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গাছ ভেঙে পড়তে শুরু করে। ভেঙে পড়ে রাস্তার পাশের বাতিস্তম্ভও। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে গাড়ির উপর একটি বড় গাছ ভেঙে পড়ে। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই।
দিঘা ও সাগরদ্বীপের উপকূল এলাকায় ঢেউয়ের উচ্চতা বাড়ছে দ্রুত। সেইসঙ্গে ঝড়ের গতিবেগও বাড়ছে তুমুল ভাবে। ঝড়ের ধাক্কায় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে প্রচুর গাছ উপড়ে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে কাঁচা ঘরবাড়িও ভেঙেছে বেশ কিছু। ঝড়ের প্রভাবে গাছ পড়েছে কলকাতাতেও। তবে এখুনি সেই কাজ সরাতে বারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যবাসীকে বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করেছেন তিনি।
নামখানা, নারায়ণপুর, কাকদ্বীপে বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে পড়েছে, উড়ে গেছে টিনের চাল। উপড়ে পড়েছে গাছ। কেউ হতাহত হয়েছে কিনা, এখনও জানা যায়নি। উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, বসিরহাটে রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে সুপার সাইক্লোন।
এই অবস্থায় এই তিন জেলার জেলাশাসককে প্রতি মুহূর্তে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা ছাড়া যেখানে ঝড়ের দাপট বেশি হচ্ছে সেখানে প্রয়োজন মতো বিদ্যুতের সংযোগ ছিন্ন করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এক নজরে ঝড়ে কোথায় কি হলো:—
• নিউ আলিপুর, শেক্সপীয়র সরণী, ময়দান, পশ্চিম বন্দর, বালিগঞ্জ, হেস্টিংস, কসবা, চেতলা, টালিগঞ্জ, ট্যাংরা, হরিদেবপুর, একবালপুর, উল্টোডাঙা, গড়িয়াহাট, বেনিয়াপুকুর থানা এলাকায় গাছ পড়ে বিপত্তি দেখা দিয়েছে।
• কলকাতার ২৭টি জায়গায় গাছ পড়েছে, সে গুলি সরানোর প্রক্রিয়া চলছে।
• বিকাল ৪টেয় কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ১০০ ছাড়াল।
• দুপুর ৩টে নাগাদ নামখানার নারায়ণপুরে একটি বাড়ির উপর গাছ ভেঙে পড়ে।
• ঘূর্ণিঝড় আমপানের প্রভাবে জলের তোড়ে ভেসে গেল হাওড়া ফেরিঘাট।
সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে গাড়ির উপর গাছ পড়েছে, কেউ হতাহত হননি
• মহিষাদলে গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ
• কলকাতার গড়িয়াহাটে গাছপালা ও সিগনাল পোস্ট ভেঙে পড়েছে।
• এগরায় কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়ল। বাড়ির বাসিন্দাদের সরানো হল অন্যত্র।
• প্রবল ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ল ফ্রেজারগঞ্জেও।
• কাকদ্বীপে বেশ কিছু কাঁচাবাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে।
• গাছ ভেঙে পড়েছে কলকাতার রাস্তাতেও, তবে তড়িঘড়ি তা সরিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা।
• দিঘায় একাধিক জায়গায় রাস্তার উপর গাছ ভেঙে পড়েছে।
• প্রবল ঝড়ে গাছপালা ভেঙে পড়ল বকখালিতে।