দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নভেম্বর এই অনুষ্ঠানের জন্য ছাপানো আমন্ত্রণপত্র ঘিরেই নতুন করে রাজনৈতিক জল্পনা দানা বাঁধছে। পুরুলিয়া জেলার শুভেন্দু অনুগামীদের ছড়িয়ে দেওয়া সেই আমন্ত্রণপত্রে প্রাধান্য পেয়েছে গেরুয়া রং। সঙ্গে বাড়িত পাওনা রাজস্থানি পাগড়ি মাথায় শুভেন্দু অধিকারীর ছবি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় শুভেন্দুর রাজনৈতিক পরিচয়ের কোথাও উল্লেখ নেই সেই আমন্ত্রণপত্রে।
তৃণমূল নেতা এবং রাজ্যের মন্ত্রীর বাইরে বেরিয়ে কেবল দাদা হিসাবেই তুলে ধরা হয়েছে একদা নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রধান কাণ্ডারীকে। তবে কেবল পুরুলিয়া নয়, মেদিনীপুরেও গত শনিবার শুভেন্দুর অনুগামীরা তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় সুচারু ভাবে সরিয়ে রেখে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল।
শুভেন্দুর অনুগামীরা দাদার নামে প্রচার করে চলেছেন। এখানে কোনও দলের উল্লেখ থাকছে না। এইসব নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে বিস্তর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যদিও পুরুলিয়ার অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক গৌতম রায় বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূলেরই সৈনিক। কিন্তু দলের নামে কর্মসূচি করলে দলের অনুমতি নিতে হয়। সরাসরি দল করেন না, এ রকম অনেকেই ইচ্ছে থাকলেও সেখানে যেতে পারেন না। তাই দাদার ফ্যান ক্লাবের সদস্যেরা এই নামে আয়োজন করেছেন। এই ব্যানার বিভিন্ন ব্লকেও লাগানো হচ্ছে।’’
পুরুলিয়ার অনুষ্ঠানে শুভেন্দুও থাকতে পারেন বলে জানাচ্ছেন তাঁর অনুগামীরা। এই নিয়ে অবশ্য মুখ খোলেননি রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী। শুভেন্দু ও তাঁর অনুগামীদের কার্যকলাপ নিয়ে কোনও টু–শব্দ করেনি তৃণমূলও। । এই পরিস্থিতিতে মেদিনীপুরে রুটিন সাংবাদিক বৈঠকের তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাশিস চৌধুরী বলেছেন, ‘আমি শুনেছি শুভেন্দু অধিকারী নিজেই ঘোষণা করেছিলেন— আমাদের দলের একজনই নেত্রী, আমি তাঁর সৈনিক। এরপর আর কী কথা থাকতে পারে।’
শুভেন্দুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা চললেও তৃণমূল নেত্রী কখনই এই নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। তবে এবার ‘অধিকারী গড়ে’ এসে পরিবহণমন্ত্রীকে কিছুটা যেন কটাক্ষই করলেন রাজ্যের আরেক ক্ষমতাশালী মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সম্প্রতি দীঘাতে এসে ফিরহাদ এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘পথ ভাবে আমি দেব, রথ ভাবে আমি, মূর্তি ভাবে আমি দেব– হাসে অন্তর্যামী।’’ রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, তৃণমূলে যে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা, তাঁর ঊর্ধ্বে কেউ নন, তা বোঝাতেই রবীন্দ্র-কবিতার এই লাইন ব্যবহার করেছেন ফিরহাদ।
সম্প্রতি দলীয় ব্যানারে কোনও কর্মসূচিতে শুভেন্দুকে তেমনভাবে দেখা যায়নি। বেশিরভাই একক জনসংযোগ কর্মসূচি করেছেন তিনি এবং তাঁর অনুগামীরা। এদিকে ছেলেকে নিয়ে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে কাঁথির সাংসদ তথা শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীরও। সূত্রের খবর, বিজয়ার পরও তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে কথা হয়নি শিশির অধিকারীর। এমনকি ফিরহাদের মন্তব্য নিয়েও জবাব দিয়েছেন শিশির অধিকারী।