দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এসএসসি গ্রুপ ডি নিয়োগে দুর্নীতি মামলার শুনানি আজ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। স্কুল সার্ভিস কমিশনে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে কিনা জানতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে সিবিআই তদন্ত তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে রাজ্য। আজ সেই মামলার রায় ঘোষণা হবে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টে নাগাদ নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথি রাজ্যকে জমা করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। আজ শুনানির সময় সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ চাইবে রাজ্য সরকার। ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আবেদন গ্রহণ করবে নাকি তদন্তপ্রক্রিয়ার নির্দেশ বহাল থাকবে সেটাই এখন দেখার।
হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতি বিষয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। সিঙ্গল বেঞ্চ জানায়, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের হলফনামা থেকেই বোঝা গেছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারও এর সঙ্গে জড়িত। যেহেতু গোটা ব্যাপারটাই রাজ্যের, তাই সিবিআই এই মামলার অনুসন্ধান করবে। তবে এখনই কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না, বা কারও বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা যাবে না। আগামী ২১ ডিসেম্বর সিবিআই রিপোর্ট পেশ করবে আদালতে। তার ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে আদালত।
সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে এসএসসির হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কিশোর দত্ত। তাতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মামলা দায়ের করতেই পারেন। কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চ যা রায় দিয়েছে তার সার্টিফায়েড কপি ছাড়া আবেদন করা যাবে না। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের সার্টিফায়েড কপি জমা করে বিকেল ৩টে নাগাদ ফের আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতিরা। সেইসব নথি দেখেই আজকের রায় ঘোষণা করা হবে।
আর্থিক বিষয় কতটা জড়িত বা কোন অদৃশ্য হাত এই নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির পিছনে রয়েছে তা খুঁজে বের করবে সিবিআই। এর পরেই রাজ্যের হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) বলেন, সিবিআই তদন্তের অনুমতি দেবেন না। বরং বিষয়টা রাজ্য পুলিশের হাতেই থাক। রাজ্য পুলিশ তদন্তে গাফিলতি করেছে এমন প্রমাণ নেই। তাছাড়া সিবিআই তদন্ত একটানা চলতে চলতে একটা সময়ে থেমে যায়। আদালতের কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করানোর আর্জিও রাখেন তিনি।
২০১৯ সালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও প্রচুর নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। কর্মী নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগে মামলা দায়ের হয় আদালতে। প্রাথমিক ভাবে ওই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল কমিশনের বিরুদ্ধে। গতকাল এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলার সময় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ জানায়, কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে তা হলফনামা থেকেই স্পষ্ট।