দেশের সময় ওয়েবডেস্ক:সঙ্গীত শিল্পী মহম্মদ আজিজের প্রয়াণেশোকে বিহ্বল তাঁর জন্মস্থানের মানুষ।অশোকনগরে সঙ্গীত শিল্পী মহম্মদ আজিজের অকাল প্রয়াণে শোকে বিহ্বল শিল্পীর জন্মস্থান উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের মানুষ। গত বুধবার তাঁর ছবিতে মালা দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন এলাকায় তাঁর পরিচিত মানুষ এবং গুনগ্রাহীরা।
কর্মসূত্রে মহম্মদ আজিজের পরিবার অশোকনগরের হরিপুর এলাকায় পোষ্ট অফিসের পাশে একটি টিনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সেই বাড়িতেই ১৯৫৪ সালের ২ জুলাই তাঁর জন্ম হয়। এরপর এই এলাকাতেই তাঁর বেড়ে ওঠা। তিনি যখন সবে যৌবনে পা দিয়েছেন, তখন নকশাল আন্দোলনে উত্তাল বাংলা। এমন একটি অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে একদিকে বেড়ে ওঠা অন্যদিকে সঙ্গীত চর্চা চালিয়ে যাওয়া। যে ভাড়াবাড়িতে পরিবারের সঙ্গে মহম্মদ আজিজ ওরফে মন্না থাকতেন, তার থেকে কিছুটা দূরে প্রফুল্লনগর এলাকার একটি বাড়ির দোতলার ঘরে তিনি সঙ্গীত চর্চা করতেন। এখানকার বিবেকানন্দ সংঘের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। ক্লাবের খেলাধুলো, পুজো থেকে জলসা সব অনুষ্ঠানেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করতেন তিনি। এই বাড়ি থেকেই ওই সময় তিনি বিভিন্ন জলসায় গান গাইতে যেতেন। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তাঁরা অশোকনগরের ভাড়া বাড়িতেই থাকতেন। পরবর্তিতে তাঁরা কলকাতায় চলে গেলেও জন্মস্থানের প্রতি তাঁর টান ছিল অসীম। সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার পরেও অনেকবার বিশেষ করে এইসব দিকে সঙ্গীতানুষ্ঠান করতে এলে নিজের পুরনো এলাকায় এক চক্কর ঘুড়ে যেতে ভুলতেন না। মহম্মদ আজিজের থেকে বছর দুয়েকের ছোট, ওই এলাকার বাসিন্দা উত্তমকুমার মিত্র খুব কাছ থেকে আজিজকে দেখেছেন। এদিন তিনি জানালেন, ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ ছিল মুন্নার। সঙ্গীত চর্চার সুবিধার জন্য আলাদা করে বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিয়মিত গানের রেওয়াজ করতেন। ওই সময় প্রচুর জলসায় গান গাইতেন। পাশাপাশি, ক্লাবের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। খুবই মিসুকে ছিলেন। পরবর্তিতে তাঁকে বিবেকানন্দ সংঘের উপদেষ্টা হিসেবে সাম্মানিক পদ দেওয়া হয়। এদিন হরিপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, পরিবারের সঙ্গে মহম্মদ আজিজ যে বাড়িতে থাকতেন অর্থাৎ যে বাড়িতে তাঁ জন্ম সেই টিনের বাড়ির অস্তিত্ব এখন সেভাবে নেই। যদিও যে দোতলা ভাড়াবাড়িতে তিনি সঙ্গীত চর্চা করতেন, সেই বাড়িটি এখনও সেভাবেই আছে। শুধু বাড়ির সদস্য বদল হয়েছে। তাঁর অকাল প্রয়াণের খবর এসে পৌঁছাতেই শোকে বিহ্বল হয়ে পরেন অশোকনগরের হরিপুর, প্রফুল্লনগরের মানুষ। তাঁর স্মৃতিতে বুধবার বিকেলে তাঁর ছবিতে মাল্যদান করে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান বিবেকানন্দ সংঘের সদস্যরা।
————————————
***