দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মাত্র কয়েকদিন আগেই আমেরিকা ও অন্যান্য পাশ্চাত্য দেশ আফগানিস্তানে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছিল, কেউ কাবুল বিমান বন্দরের কাছে যাবেন না। কারণ সেখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্যি করে বৃহস্পতিবার বিস্ফোরণ ঘটল কাবুল বিমান বন্দরের কাছে। তাতে শিশু সহ অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিমান বন্দরের তালিবান রক্ষীরাও আহত হয়েছে।
বিদেশি নাগরিকদের উদ্ধারকাজ চলছিল। সেই সময়ই আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠল কাবুল বিমানবন্দর চত্বর। মার্কিন সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরেই বিস্ফোরণটি ঘটে। প্রাথমিকভাবে এটি একটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের কথা স্বীকার করা হয়েছে পেন্টাগনের পক্ষ থেকেও। যদিও বিস্ফোরণের তীব্রতা কতটা ছিল তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর আশঙ্কা ইতিমধ্যেই করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা গিয়েছে। যাদের মধ্যে এক শিশুও শামিল। খবর মিলেছে রয়টার্স সূত্রে এরই মধ্যে দ্বিতীয় বিস্ফোরণেরও খবরও মিলতে শুরু করেছে।
বিস্ফোরণের পর পাগলের মতো ছুটতে থাকা জনতাকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি। যার জেরে গোটা ঘটনায় এখনও পর্যন্ত শিশু-সহ মোট ১৩ জনের প্রাণ গিয়েছে বলে খবর। সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, সাধারণত এই কৌশলে হামলা চালিয়ে থাকে আইএস (ইসলামিক স্টেট)।
সম্প্রতি আমেরিকা দাবি করেছিল, নাগরিকদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলাকালীন কাবুল বিমানবন্দরে হামলা চালাতে পারে আইএস জঙ্গি সংগঠন। তেমন হুমকি-বার্তাও দিয়েছে বলে জানা গিয়েছিল পেন্টাগন সূত্রে। তার পরই এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই অভিযোগের আঙুল আইএসের বিরুদ্ধে। আমেরিকার দাবি, আফগানিস্তানে আইএসের ‘খোরাসান’ শাখা সংগঠন এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি একটি টুইট করে জানিয়েছেন, “কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে একটি বিস্ফোরণের তথ্য আমরা নিশ্চিত করতে পারছি। এই মুহূর্তে হতাহতের সংখ্যা স্পষ্ট নয়। বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেলে পরে জানানো হবে।”
We can confirm an explosion outside Kabul airport. Casualties are unclear at this time. We will provide additional details when we can.
— John Kirby (@PentagonPresSec) August 26, 2021
অন্যদিকে, বিস্ফোরণটিকে আত্মঘাতী বলে মনে করা হচ্ছে কারণ মার্কিন গোয়ন্দা বিভাগের কাছে এই ধরনের হামলার খবর আগে থেকেই ছিল। সূত্রের খবর, কমপক্ষে তিনজন মার্কিন সেনা এই বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে আমেরিকার পক্ষ থেকে। বিমানবন্দরের বাইরে একটি হোটেলের সামনে বিস্ফোরণটি ঘটে বলে জানাচ্ছে সূত্র।
সেই হোটেলেই কয়েকশো মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনা সদস্য এবং আধিকারিকরাও ছিলেন। ফলে তালিবান ইচ্ছাকৃতভাবে আমেরিকান সেনাকে নিশানায় নিয়ে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে থাকতে পারে, এই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে খবর, হামলার চালানোর নেপথ্যে দুই ব্যক্তি ছিল। বিধ্বংসী বিস্ফোরণে একজন নিজেই আত্মঘাতী হয়, আরেকজন এলোপাথারি গুলি চালাতে থাকে। আপতত কাউকে বিমানবন্দরের আশেপাশে ঘেঁষতে মানা করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ আরও একাধিক দেশ যে উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে, তাতে বাধা দিতেই এহেন নাশকতার ছক তালিবান কষেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
VIDEO: People being rushed to the hospital following reported suicide bomber attack at Kabul airport.
— Election Wizard (@ElectionWiz) August 26, 2021
pic.twitter.com/ex74FpusGs
প্রথম বিস্ফোরণের ভয়াবহতা কাটার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আরেকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে খবর। ওই একই হোটেলের সামনেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। অন্যদিকে, একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনার পরই জরুরি বৈঠকে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
অন্যদিকে, তালিবানের পক্ষ থেকে ১৩ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই বিস্ফোরণের পিছনে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-এর হাত রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তালিবানের তরফেও সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। এই বিস্ফোরণে তালিবানি জঙ্গিরাও আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে তালিবানের পক্ষ থেকে।