দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে হাজিরা দেবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই উদ্দেশে রবিবারই দিল্লি উড়ে গেলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
রাজনৈতিকভাবে লড়তে না পেরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি করছে মোদী সরকার। দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে ফের আক্রমণাত্মক তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ।
এদিন বিমানবন্দরে ঢোকার আগে আরও একবার সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। তিনি বলেন, ‘কেউ বলছে ১০০ কোটির স্ক্যাম, কেউ বলছে ১০০০ কোটি। আমি আগেও বলেছি আমার পিছনে ইডি সিবিআই লাগানোর দরকার নেই। দস পয়সার দুর্নীতিও যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে, ফাঁসির মঞ্চে আমি মৃত্যুবরণ করতে রাজি আছি। আজও সেই একই কথাই বলছি। যে কোনও তদন্তের সামনাসামনি করতে আমি প্রস্তুত।
কলকাতার ব্যাপারে দিল্লি ডেকে পাঠিয়েছে বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিষেক। তিনি আরও বলেছেন, বিজেপি প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতিতে নেমেছে। মানুষ ওদের জিততে দেয়নি। তাই তারা অন্য পথ অবলম্বন করছে।
এদিন বিমানবন্দর থেকে অভিষেক আরও বলেন, যে কোনও বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা মিনিট পাঁচেকের জন্যেও যদি তাঁর সঙ্গে বসেন, গত পাঁচ বছরে কোন কেন্দ্রীয় সংস্থা কীভাবে কাজ করেছে আমি সব দেখিয়ে দেব। আমি যদি প্রমাণ করতে না পারি রাজনীতি ছেড়ে দেব। তাঁর কথায় যাঁরা টাওয়ালে হাত মুড়ে টাকা নিয়েছেন, টিভিতে দেখা গেছে, চার্জশিটে তাঁদের নাম থাকে না। বিজেপির এই রাজনীতি মানা যায় না, বলেন অভিষেক।
আর্থিক দুর্নীতির মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা নারুলাকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। কিন্তু রুজিরা ইডিকে চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁর পক্ষে এখন এত স্বল্প নোটসে দিল্লি যাওয়া সম্ভব নয়। ইডি চাইলে কলকাতায় তাঁকে জেরা করতে পারে। তবে অভিষেক কাল ইডির কাছে হাজিরা দিচ্ছেন।
কয়লা কাণ্ডে অভিষেক ও তাঁর স্ত্রীকে ডেকে পাঠানোর ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে মমতা তোপ দেগে বলেন, ‘দিল্লি যখন রাজনীতিতে পারে না, তখন এজেন্সি লেলিয়ে দেয়।’ মমতা কার্যত হঁশিয়ারি দিয়ে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বলেছিলেন, ‘আমাকে একটা ইডি দেখালে আমি বস্তা ভরে তথ্য দেব। রাজনীতি করলে রাজনৈতিক সৌজন্য রেখে করুন।
অভিষেকের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হলে রাজনৈতিকভাবে করুন।’ অমিত শাহকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘এত প্রতিহিংসা পরায়ণ রাজনীতি আগে দেখিনি। মনে রাখুন অমিত শাহ এটা চলতে পারে না।’ কয়লা কাণ্ড প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘কয়লা চুরিতে শুধু তৃণমূলকে ধরলে হবে। কয়লা তো কেন্দ্রের বিষয় রাজ্যের নয়। BJP নেতাদের নিয়ে সিবিআই তদন্তে যাচ্ছে কেন? প্রচারে এসে আসানসোলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা কয়লা মাফিয়ার হোটেলে এসে ওঠে।
এদিন বিজেপিকে সরাসরি আক্রমণ করে অভিষেক সংযোজন করেন, ‘হেরে গেছে বলে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করতে পেরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে এখন প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতিতে নেমেছে এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে পিছনে রেখে রাজনৈতিক চরিতার্থ করা ছাড়া আর কোন কাজ নেই বিজেপি নেতাদের। তাঁদের বলব আপনাদের যে কোনও নেতা আসুন না আমার সাথে যে কোন চ্যানেল ঠিক করুন, আমার সঙ্গে বসুন, কোন কেন্দ্রীয় সংস্থা পাঁচ বছরে কীভাবে কাজ করেছে, ভারতবর্ষের কী করুণ পরিণতি সাত বছরে আপনাদের শাসন কালে, আমি যদি তা প্রমাণ করতে না পারি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখব না।’