অভিনন্দন: পাঁচটা বাজতেই কাঁসর-ঘণ্টা-উলু-শঙ্খ ধ্বনিতে সরগরম গ্রাম থেকে শহর

0
2379

দেশের সময়: কাঁটায় কাঁটায় পাঁচটা বাজল, একসঙ্গে চারদিক থেকে বেজে উঠল নানা রকম শব্দ! কেউ ঘণ্টা, কেউ কাঁসর, কেউ বা সত্যিই থালা আর চামচের যুগলবন্দি! সেই সঙ্গে শাঁখের আওয়াজ, উলুধ্বনি! কেউ বা বাজালেন বাঁশিও! পাড়া থেকে পাড়া যেন সরগরম হয়ে উঠল অভিনন্দনের আওয়াজে।

বনগাঁয় ছবি তুলেছেন সোমা দেবনাথ৷

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশে ভাষণে দেশবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, রবিবার যেন সকাল সাতটা থেকে রাত ন’টা কেউ বাড়ি থেকে না বেরোন নিজের ইচ্ছেয়। জনতা কার্ফু পালন করার কথা বলেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে আবেদন করেছিলেন, এই দিনই বিকেল পাঁচটায় জরুরি পরিষেবার সঙ্গে জড়িত যে সব স্বাস্থ্যকর্মী ও অন্যান্য কর্মীরা আছেন, তাঁদের অভিবাদন জানাতে যেন সকলে হাততালি দেন, কিছু বাজিয়ে শব্দ করেন।

আবেদন রক্ষা করেছিল দেশবাসী। সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা ছিল কার্যত সুনসান। যানবাহন প্রায় চলেইনি। খুব বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেরোননি কেউ। তবে কাঁটায় কাঁটায় বিকেল পাঁচটা বাজতেই যে তাঁর কথা শুনে পাড়ায় পাড়ায় ঘণ্টাধ্বনি-শঙ্খধ্বনি শোনা যাবে, তা হয়তো অনেকেই আশা করেননি। দিনভর সোশ্যাল মিডিয়াতেও অবশ্য এ নিয়ে বহু পরিকল্পনা চোখে পড়েছে। কেউ জানিয়েছেন ঘণ্টা বাজাবেন, অন্যরাও যেন বাজান। কেউ জানিয়েছেন গান গাইবেন, তালি দেবেন।


সবটা মিলে গেল পাঁচটা বাজতেই। জানলায়, ব্যালকনিতে, বারান্দায় বেরিয়ে এলেন মানুষ। যার যেমন ইচ্ছে, শব্দ করে অভিবাদন জানালেন জরুরি পরিষেবাদাতাদের। মিনিট কুড়ি পরে অবশ্য আবার সব শান্ত হয়ে যায়। কোনও কোনও জায়গায় উৎসাহ বেশি থাকায় কেউ কেউ বাজিও ফাটিয়েছেন বলে শোনা গেছে।

বস্তুত, বিকেল বেলা ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে গানবাজনা করার কোনও বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি না থাকলেও, গৃহবন্দি দশায় এ যেন এক ধরনের মুক্তি। পারস্পরিক বিনিময়। বেশ কয়েক দিন ধরেই ইতালির নানা শহরের আনাচকানাচে এমনটা দেখা যাচ্ছে। তাঁরা বেরিয়ে এসে গান গাইছেন, হাততালি দিচ্ছেন, পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিবাদন জানাচ্ছেন। এরকম বেশ কিছু ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।


এবার তেমনই এক নজির গড়ে উঠল ভারতবর্ষ জুড়েও। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সাড়া দিলেন মানুষ। আগেও নয়, পরেও নয়, ঠিক পাঁচটাতেই। এমন শৃঙ্খলা বড় দেখা যায় না বহু ঘনজনসংখ্যার এই দেশে। অথচ এই করেনাভাইরাস আক্রমণের আশঙ্কার মুখে দাঁড়িয়ে, সবাই যেন নিজে থেকেই জোট বাঁধলেন শুভ ইচ্ছেদের বিনিময় করে নিতে।

Previous articleকিছুক্ষণের মধ্যেই বাংলার সব পুরসভা এলাকা লক ডাউন, ঘোষণা করতে পারে নবান্ন
Next articleঅভিনন্দনের আওয়াজ: করোনার বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ে জয়ের সূচনা, দেশবাসীকে ধন্যবাদ মোদীর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here