২০২০ সালে জিডিপি–তে ভারতকে পিছনে ফেলবে বাংলাদেশ,আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে দেশ, সতর্কবার্তা আইএমএফ-এর

0
902

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং বিশ্ব ব্যাঙ্ক আশঙ্কা করেছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (‌আইএমএফ)‌–এর বার্তা আরও চাপ বাড়াল। রিপোর্টে তারা জানাল, ২০২০ সালে ভারতে জিডিপি–র হার সঙ্কুচিত হতে পারে ১০.‌৩ শতাংশ। তার জেরে জিডিপি–র নিরিখে ভারতকে পিছনে ফেলবে বাংলাদেশও। 

জুনে আইএমএফ ভারতীয় অর্থনীতির সঙ্কোচন নিয়ে যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, তার তুলনায় এখনকার রিপোর্ট আরও নেতিবাচক। জুনে আইএমএফ ইঙ্গিত দিয়েছিল, এই সঙ্কোচন কমতে পারে ৪.‌৫ শতাংশ। এখন তাদের ধারণা, এই সঙ্কোচন হবে ১০.‌৩ শতাংশ। এ দিন তারা জানিয়েছে, সঙ্কোচনের সেই হার এতটা বাড়াতে হয়েছে এপ্রিল–জুন ত্রৈমাসিকে জিডিপি–র নিম্নগমন দেখে। ওই ত্রৈমাসিকে জিডিপি ২৩.৯ শতাংশ তলিয়ে গেছে। এর আগে বিশ্ব ব্যাঙ্ক বলেছিল, করোনা রুখতে দীর্ঘ লকডাউনই বিপর্যস্ত করেছে ভারতের চাহিদা–জোগান।

আইএমএফ মনে করছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে করোনার কারণে সবথেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছে ভারতই। ২০২১ সালের ৩১ মার্চে শেষ হচ্ছে চলতি অর্থবর্ষ। এই অর্থবর্ষে ভারতের পার ক্যাপিটা জিডিপি কমতে পারে ১,৮৭৭ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় এক লক্ষ ৩৭ হাজার ৬৬০ টাকা। সেখানে বাংলাদেশের পার ক্যাপিটা জিডিপি বাড়তে পারে ১,৮৮৮ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় এক লক্ষ ৩৮ হাজার ৪৮১ টাকা। 

তবে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারত ২০২১ সালে এই ধাক্কা অনেকটাই সামলে নেবে বলে মত তাদের। বৃদ্ধির হার হবে ৮.‌৮ শতাংশ। 

আইএমএফ–এর এই রিপোর্টের নিয়ে এদিন খোঁচা দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। টুইটারে লিখেছেন, ‘‌৬ বছর বিজেপি–র হিংসাত্মক সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের কৃতিত্ব। বাংলাদেশও টপকে যাচ্ছে ভারতকে।’

গোটা বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দা আসতে চলেছে বলেই জানিয়েছেন আইএমএফ-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে জিডিপি কমতে পারে ৪.৪ শতাংশ। কারণ এর আগে এই ধরনের কঠিন পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়নি বিশ্বকে। সবথেকে খারাপ অবস্থা হতে পারে প্রায় ৯ কোটি মানুষের। তাই প্রতিটি দেশকে এই মুহূর্তে তাদের জনগণকে আর্থিক সাহায্য করতে হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি।

আইএমএফ-এর তরফে জানানো হয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে শুধুমাত্র বৃদ্ধি দেখবে চিন। তারা সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই প্রায় ১.৯ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধি পাবে তাদের। জুন মাসে তা ১ শতাংশ বাড়বে বলে পূর্বাভাস করেছিল আইএমএফ। অর্থাৎ তা আরও বাড়ছে।

অবশ্য পরের বছর থেকে ফের প্রতিটি দেশে আর্থিক বৃদ্ধি দেখা যাবে বলেই জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড। জানানো হয়েছে বিশ্বে আর্থিক বৃদ্ধি হতে পারে প্রায় ৫.২ শতাংশ। ভারতেও আর্থিক বৃদ্ধি হবে বলেই জানানো হয়েছে। তবে যতদিন না সেটা হচ্ছে ততদিন দেশের মানুষকে সাহায্য করার কাজ সরকারকেই করতে হবে এমনটাই জানিয়েছেন গীতা গোপীনাথ।

ভারতের অর্থনীতিতে সবথেকে খারাপ সময় আসা এখনও বাকি, এমনটাই জানাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড বা আইএমএফ। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বা বিশ্ব ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস অনুযায়ী ভারতের অর্থনীতি যতটা ধাক্কা খাবে বলে মনে হচ্ছিল তার থেকেও খারাপ অবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে আইএমএফ। এই সংস্থা জানিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে ভারতে জিডিপি কমতে পারে ১০.৩ শতাংশ।

বিশ্ব ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস ছিল চলতি আর্থিক বছরে দেশের জিডিপি কমতে পারে ৯.৬ শতাংশ। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছিল, ৯.৫ শতাংশ সঙ্কোচন হতে পারে দেশের জিডিপিতে। এমনকি মঙ্গলবার কেন্দ্রের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কে ভি সুব্রহ্মণ্যন জানান, ভারতের জিডিপি সংকোচনে তাঁদেরও আন্দাজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতোই। কিন্তু আইএমএফ অন্য কথা বলছে। তারা জানাচ্ছে চলতি আর্থিক বছরে তা ১০.৩ শতাংশ কমতে পারে।

চলতি বছর জুন মাসে আইএমএফ বলেছিল, চলতি আর্থিক বছরে ভারতের জিডিপি ৪.৫ শতাংশ কমতে পারে। কিন্তু তারপরেও ভারতের জিডিপি অনেকটাই সংকুচিত হয়েছে। এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিকে দেশের জিডিপি আগের বছরের তুলনায় ২৩.৯ শতাংশ কমেছে। তার প্রধান কারণ দেশের বেকারত্ব বৃদ্ধি। লকডাউনের ফলে এত যুবক কাজ হারিয়েছেন, তার প্রভাব দেশের অর্থনীতির উপর পড়েছে। এখনও পর্যন্ত ৭০ লাখের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত। এখনও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি সরকার। এইসব কারণে জিডিপি এতটা কমেছে।

আইএমএফ জানিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে ভারতে জিডিপি কমার ইঙ্গিত অনেক বেশি। তার প্রধান কারণ হল এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিকে ২৩.৯ শতাংশ জিডিপি কমা। এতটা খারাপ অবস্থা হবে তা আশা করতে পারেনি তারাও।

অন্যদিকে বিশ্বব্যাঙ্ক জানিয়েছে, এর আগে ভারতের আর্থিক অবস্থা কোনও দিনই এতটা খারাপ হয়নি। তাই এই অবস্থা উদ্বেগ তৈরি করেছে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে। কী ভাবে এই অবস্থা কাটিয়ে ওঠা যাবে তা নিয়েই চিন্তা করছেন তাঁরা। করোনা সংক্রমণ ও তার জেরে লকডাউন যে অর্থনীতিতে এত বড় প্রভাব ফেলবে তা ভাবতে পারেননি তাঁরাও। 

এমনকি যদি সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসে তাহলে তা ভারতের জিডিপির উপর আরও বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেরকম হলে দেশের আর্থিক অবস্থা হবে আরও খারাপ।

Previous articleভারী বৃষ্টি নয় আর্দ্রতায় বাড়বে অস্বস্তি, জানাল হাওয়া
Next articleবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হায়দরাবাদ, ভেসে যাচ্ছে মানুষ,গাড়ি, দেওয়াল ভেঙে মৃত ৯, রয়েছে দু’মাসের এক শিশুও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here