দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বড় কোনও অঘটন না ঘটলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে দ্বিতীয় বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই, ইলেকটোরাল ভোটে সে ইঙ্গিত ছিলই। কার্যক্ষেত্রে ঘটলও তাই। কয়েক দিনের টানটান উত্তেজনার পর ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনই শেষ পর্যন্ত চ্যালেঞ্জটা জিতে নিলেন। রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পর্যুদস্ত করে তিনিই আমেরিকার ৪৬ তম প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাট চ্যালেঞ্জার জোবাইডেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটেলগ্রাউন্ড পেনসিলভেনিয়া নিশ্চিত করার পরেই তাঁকে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তুলে ধরে মার্কিন মিডিয়া। আমেরিকার ইতিহাসে জো বাইডেনই প্রবীণতম প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৭৭ বছর।
হোয়াইট হাউসের দখল নেওয়ার জন্য ২৭০টি ইলেকটোরালের দরকার ছিল। সংবাদ সংস্থা বিবিসি সূত্রে খবর, ২৮৪টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। পেনসিলভেনিয়া জয়ের পরই প্রেসিডেন্টের আসন নিশ্চিত করেন বাইডেন।
১৯৯০ সালের পর ডোনাল্ড ট্রাম্পই প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হতে ব্যর্থ হলেন। বর্তমান ফল অনুয়ায়ী রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প ২১৪টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন।
২৫৩ ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে এদিন শুরু থেকেই এগিয়ে ছিলেন জো বাইডেন। ট্রাম্পের ভোট ছিল ২১৪টি। জর্জিয়ায় ভোট পুনর্গণনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ট্রাম্প শিবির নতুন করে আশা দেখতে শুরু করেছিলেন। তবে, বাইডেন ও তাঁর সমর্থকরা পেনসিলভেনিয়ার দিকেই তাকিয়ে ছিলেন।
পেনসিলভেনিয়া ডেমোক্র্যাটদের দুর্গ হিসেবেই পরিচিত। বাইডেন জানতেন সেখান থেকে ২০টি ইলেকটোরাল ভোট জিতে নিতে পারলে, ট্রাম্পের আশার শেষ বেলুনও চুপসে যাবে। শেষ পর্যন্ত বাইডেনকে নিরাশ করেনি পেনসিলভেনিয়া। কাঙ্ক্ষিত ২০টি ইলেকটোরাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পরেই ট্রাম্পের জন্য সব আশার পরিসমাপ্তি। দ্বিতীয় বার হোয়াইট হাউস দখল, তাঁর জন্য অধরা মাধুরী হয়েই থেকে গেল।
America, I’m honored that you have chosen me to lead our great country.
— Joe Biden (@JoeBiden) November 7, 2020
The work ahead of us will be hard, but I promise you this: I will be a President for all Americans — whether you voted for me or not.
I will keep the faith that you have placed in me. pic.twitter.com/moA9qhmjn8
পরাজয়ের আশঙ্কা যে ডোনাল্ড ট্রাম্প করেননি, তা নয়। একের পর এক রাজ্যে পিছিয়ে পড়ে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়তে থাকেন ট্রাম্প। ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে ভোটে গণকারচুপির অভিযোগ এনে তিনি ক্ষান্ত হননি। নিজেকে তিনি বৈধ ভোটে জয়ী হিসেবেও ঘোষণা করেন। তাঁর অভিযোগ, আমেরিকার নির্বাচনকেই ‘চুরি’ করা হয়েছে। অভিযোগ করেন, একাধিক জায়গায় ট্রাম্প শিবিরের পর্যবেক্ষরা গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে পর্যন্ত পারেননি। তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সেই সুযোগে ভোট গণনায় কারচুপি করা হয়েছে।
ট্রাম্পের মূলত অভিযোগ ছিল অ্যাবসেন্টি ব্যালট ভোট ও ই-পোস্টালে। কারণ, অ্যাবসেন্টি ব্যালট ভোট ও ই-পোস্টালের গণনা শুরু হতেই ট্রাম্প ক্রমশ লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়তে থাকেন। ভোটগণনা বন্ধ করার দাবিও জানান। একাধিক রাজ্যের সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলাও ঠোকে ট্রাম্প শিবির। কিন্তু, তার পরেও শেষ রক্ষা হল না।পেনসিলভেনিয়ার দৌলতে শেষ মুহূর্তে ট্রাম্পের মুখের গ্রাস ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন জো বাইডেন। প্রত্যাশা মতো কমলা হ্যারিসই ভাইস প্রেসিডেন্ট।