দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের নিয়ম না মেনে হাসপাতাল চলছে তার নিজের নিয়মে। বেসরকারি হাসপাতালে এই কার্ডের কোনও গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না। এমন অভিযোগের ভিত্তিতেই এবার পদক্ষেপ করল সরকার। সাতটি বেসরকারি হাসপাতালকে ধরানো হল শো-কজ নোটিস।
এদিন রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন শো-কজ করেছে সাতটি বেসরকারি হাসপাতালকে। অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও একাধিক রোগী ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। এই সমস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে আগামী ৩ নভেম্বরের জবাব দিতে হবে কেন তাঁরা এভাবে সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করেছে।
মঙ্গলবারই স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে অ্যাডভাইজরি জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সমস্ত সরকারি হাসপাতালগুলিতে ভর্তির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড লাগবেই। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও এই নিয়ম মানতে হবে, না হলে লাইসেন্স বাতিল হতে পারে।
সোমবার উত্তরকন্যার প্রশাসনিক সভা থেকে হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, শোনা গেছে অনেক বেসরকারি হাসপাতালই নাকি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিচ্ছে না। সেইসব হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে চিহ্নিত করার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করার কথাও বলেন। প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কড়াকড়ি করার কথা বলার পরদিনই নয়া অ্যাডভাইজারি জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
গত দেড় মাসে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডকে অবহেলাজনিত মোট ১০টি অভিযোগ জমা পড়েছে স্বাস্থ্য কমিশনে। তার মধ্যে সাতটি মামলার শুনানি হবে আগামী ৩ নভেম্বর।
প্রসঙ্গত,সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোনও রোগীর যদি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না-থাকে, হাসপাতালই তা তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে সোমবারেই তাঁর সরকারের কড়া অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রকল্প নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের জন্য দু’টি নতুন অ্যাডভাইজ়রি বা পরামর্শ-নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে সরকারি হাসপাতালের তরফে রোগীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়ে দেওয়ার নির্দেশের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে জানানো হয়েছে, রোগী প্রকল্পের কোন প্যাকেজের আওতায় চিকিৎসা পাবেন, তা দ্রুত ঠিক করতে হবে। তার জন্য রোগ নির্ণয়ের খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
অন্য দিকে, সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে এ বার থেকে স্বাস্থ্যসাথী, রাজ্য বা কেন্দ্রের হেল্থ স্কিম, ইএসআই প্রকল্প— যে-কোনও একটি কার্ড দেখাতে হবে। কার্ড আনতে ভুলে গেলে আধার কার্ডের নম্বর দিয়ে স্বাস্থ্যসাথী ওয়েবসাইট থেকে প্রকল্পের ‘ইউআরএন নম্বর’ সংগ্রহ করা হবে। যাঁদের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার কোনও কার্ড নেই, তাঁরা অন্য সরকারি পরিচয়পত্র জমা দেবেন। পিপিপি মডেলের পরীক্ষা কেন্দ্রেও একই নিয়ম বহাল থাকবে।