দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন কেন্দ্রের কাছ থেকে স্পষ্ট করে সব কিছু জেনে তারপর রাজ্য সরকার ঘোষণা করবে কী কী খুলবে এবং কবে থেকে খুলবে। বুধবার নবান্নে ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন কোন কোন এলাকায় আগামী সোমবার থেকে কী ধরনের দোকান খোলা যাবে।
ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, রং , হার্ডওয়ার, স্টেশনারি, বই, মোবাইল ও ব্যাটারি চার্জের দোকান, লন্ড্রি, চা-পাতা, পান-বিড়ির দোকান খোলা যাবে সোমবার থেকে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, একটি রাস্তার উপরে এ ধরনের কোনও ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন’ দোকান থাকলে, অর্থাৎ একটাই দোকান থাকলে তা খোলা যাবে। কিন্তু কোনও মার্কেট কমপ্লেক্স খোলা যাবে না। মদের দোকান, টেলারিংয়ের দোকান, চায়ের দোকান খোলায় অনুমতি মিলছে না এক্ষুণি।
সব জায়গায় সোশ্যাল ডিসট্যান্স-এর শর্ত কঠোর ভাবে মানতে হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এলাকায় এলাকায় পুলিশ ঠিক করে দেবে কোন দোকান খুলবে বা খুলবে না। যে দোকানে প্রচুর ভিড় হয় সেই সমস্ত দোকান খুলতে এক্ষুণি অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর কথায়, পাড়ায় পাড়ায় ছোট ছোট দোকান খোলা যাবে। সাধারণত, কোনও একরকমের দোকান পাড়ায় একটিই থাকে। যেমন, মোবাইল রিচার্জের দোকান, ব্যাটারি চার্জের দোকান ইত্যাদি। আবার চায়ের দোকান খুললেও সেখানে বসে চা খাওয়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চায়ের দোকানে বসে আড্ডা মারা যাবে না। চা-সিগারেট কিনে বাড়িতে এসে খান অসুবিধে নেই। কিন্ত ভিড় করা যাবে না।” হকার্স কর্ণার বা ফুটপাথের দোকান এই মুহূর্তে খোলা যাবে না বলেও পরিষ্কার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন মেনে বাংলায় সেলুন, বিউটিপার্লার, স্পা খোলায় ছাড় দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওখানে বেশি মাখামাখি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সেলুন খুলতে আপাতত অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না।”
এরই পাশাপাশি গ্রিন জোনে কারখানা চালু রাখার অনুমতি দিচ্ছে সরকার। তবে সেখানেও কারখানার ভিতর শ্রমিকদের সোশ্যাল ডিসট্যান্স কঠোর ভাবে বজায় রাখতে হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। গ্রিন জোনে চালানো যাবে বেসরকারি বাস। তবে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় সেই বাস যেতে পারবে না। থাকতে হবে জেলার সীমানার মধ্যে। ২০ জনের বেশি যাত্রী বাসে ওঠানো যাবে না। এর বাইরে গেলে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
কেন্দু পাতা, তালপাতার মতো বনজ সম্পদ বিক্রি করা যাবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, জঙ্গলমহলের মানুষের অসুবিধে হলে সরকার তাঁদের থেকে কেন্দুপাতা কিনে নেবে।
স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কন্টেইনমেন্ট জোনে সম্পূর্ণ লকডাউন চলবে। সেখানে এসব কিছুই কার্যকর হবে না। অরেঞ্জ জোনের জেলায় স্থানীয় প্রশাসনের উপর কী খুলবে খুলবে না তা ঠিক করার ভার দিয়েছে নবান্ন। রাজ্য সরকার আরও বলেছে, গ্রিন জোন যদি অরেঞ্জ জোন হয় বা অরেঞ্জ জোন যদি রেড জোনে পরিণত হয় তাহলে সিদ্ধান্ত বদল হবে।
রেস্টুরেন্টগুলো হোম ডেলিভারি করতে পারে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে সোমবার থেকে কলকাতায় অল্প সংখ্যায় হোম ট্যাক্সি সার্ভিস চালু করা হবে। তবে ট্যাক্সির সামনে শুধু চালক বসবেন। পিছনে দুজনের বেশি যাত্রী বসতে পারবেন না।