দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ঝড়ের ধাক্কা অধিকাংশটাই গিয়ে লেগেছে ওড়িশায়। কিন্তু বাংলায় সংকট বাড়িয়েছে জলোছ্বাস। সমুদ্রের নোনাজল ঢুকে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে বুধবার দুপুরে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন আগামী পরশুদিন, শুক্রবার পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যাবেন।
আগামী ২৮ মে দু’দিনের সফরে বেরচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন দুপুরে প্রথমে হিঙ্গলগঞ্জে যাবেন তিনি। ঘুরবেন সুন্দরবন। তার পর সাগরে একটি বৈঠক করবেন। সেখান থেকে চলে যাবেন দিঘায়। ত্রাণের কাজ খতিয়ে দেখতে ২৯ মে দিঘায় একটি বৈঠক করে তার পর কলকাতায় ফিরবেন তিনি।
শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন তিনি। অতি শক্তিশালী ওই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একাধিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভরা কোটালের কারণে জলস্তর বেড়ে গিয়ে সুন্দরবনের একাধিক জায়গা প্লাবিত হয়েছে। সেই সব এলাকাতেই পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দুই চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়ার কয়েকটি ব্লকে। মূলত নদী ও সমুদ্রের জল ঢুকেই বিপত্তি ঘটেছে। উত্তর চব্বিশ পরগনার সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, হাড়োয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর, কাকদ্বীপ, নামখানা, কুলতলি, পাথরপ্রতিমা, রায়দিঘির মতো এলাকার অবস্থা সাংঘাতিক।
সমুদ্রের জল ঢুকে ভেসে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির দুটি ব্লক, রামনগরের দুটি ব্লক, নন্দীগ্রাম এক ও দু’নম্বর ব্লক, সুতাহাটা, হলদিয়ায় নোনাজল ঢুকে গিয়েছে। তা ছাড়া হাওড়ার শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর, সাঁকরাইলের বিস্তীর্ণ এলাকাও প্লাবিত বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে মুখ্যমন্ত্রী যে ব্যাপারে এদিন দুপুরে সতর্ক করেছেন তা হল ভরা কোটাল। তাঁর কথায় আজ রাতের দিকে এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে বান আসবে। তার ফলে জল স্তর পাঁচ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। তাই নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার মানুষজন এখনই যাতে আশ্রয় শিবির ছেড়ে ঘরে ফেরার চেষ্টা না করেন সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন মমতা।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিন লক্ষের মতো বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই দুর্যোগে। ১৪ হাজারের বেশি আশ্রয় শিবির চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। এদিন দুপুর পর্যন্ত এক জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তবে তিনি আশ্রয় শিবিরে এসে মাছ ধরার জন্য জাল ফেলতে গিয়ে মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝড় চলে গেলেও ভরা কোটালই এখন রাজ্য সরকারের সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।