লড়াই শেষ: উন্নাওয়ের দগ্ধ ধর্ষিতার মৃত্যু হল শুক্রবার রাতে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে

0
738

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত বৃহস্পতিবার সকালে উন্নাওয়ের ধর্ষিতাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। নব্বই শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে লখনউয়ের হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছিলেন তিনি। তারপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয় তাঁকে। কিন্তু চিকিৎসকরা শত চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচাতে পারলেন না। শুক্রবার রাত ১১টা ৪০মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় উন্নাওয়ের নির্যাতিতা তরুণীর।


হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট সুনীল গুপ্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, লখনউয়ের কিং জর্জেস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে প্রথমে ভর্তি ছিলেন দগ্ধ তরুণী। অবস্থা ক্রমে খারাপ হওয়ায় সফদরজং হাসপাতালে তাঁকে উড়িয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। সেখানেই ডাক্তার শালাব কুমারের পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি।

নির্দিষ্ট একটি আইসিইউ তৈরি করা হয়েছিল তাঁর জন্য। সফদরজং হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান শালাব কুমার জানিয়েছেন, তরুণীর ক্ষত দ্রুত বাড়ছিল। শুরু থেকেই তাঁর অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। শুক্রবার রাত ১১টা ১০ মিনিট নাগাদ হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। তরুণীকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।

উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে গত মার্চে পাঁচ জন মিলে ধর্ষণ করে বছর তেইশের ওই তরুণীকে। ধর্ষিতার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। বাকি দু’জন এখনও ফেরার। গত সপ্তাহে জামিনে ছাড়া পায় অভিযুক্তরা। বৃহস্পতিবার এই ধর্ষণের মামলায় শুনানির জন্য তরুণী যখন আদালতে যাচ্ছিলেন, তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়ায় পাঁচ অভিযুক্ত। তরুণী সেই সময় ছিলেন রেল গেটের কাছে। তাঁকে টেনে হিঁচড়ে পাশের ধান ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সেখানেই তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টায় অভিযুক্ত পাঁচজনের তিনজন ধর্ষণে অভিযুক্ত। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরেই তারা তরুণীর খোঁজে গ্রামের আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এদিনও আদালতে যাওয়ার নির্যাতিতার পিছু নেয় তারা। রেল গেটের কাছে নির্জন জায়গা দেখে সেখানেই তরুণীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে।

সেদিন গায়ে আগুন লাগা অবস্থাতেই এক কিলোমিটার ছুটেছিলেন ওই তরুণী। তারপর এক পথচারীর মোবাইল নিয়ে ফোন করেন পুলিশে। ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। রবীন্দ্র প্রকাশ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী এমনটাই জানিয়েছেন পুলিশকে। তাঁর কাছেই প্রথম সাহায্য চান উন্নাওয়ের নির্যাতিতা। রবীন্দ্রর ফোন থেকেই ১১২ ডায়াল করে পুলিশকে খবর দেয় তরুণী।

৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে প্রথমে লখনউয়ের হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন তরুণী। ওই অবস্থাতেই তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিতে পাঁচ অভিযুক্তের নাম বলেন তিনি। নারকীয় এই ঘটনায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। নির্যাতিতার বয়ান সংগ্রহ করার পরেই অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ৩০৭, ৩২৬, ৫০৬ ধারায় মামলাও দায়ের করা হয়।

Previous articleবাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল তৃণমূল নেতার
Next articleফের নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগ খোদ কলকাতায়,একের পর এক ধর্ষণের বিভীষিকা, গায়ে আগুন, মৃত্যু, বিচার চাইছে গোটা দেশ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here