লকডাউন ২: মদ বিক্রির উপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করল মোদী সরকার কী করা যাবে, কী করা যাবে না, কেন্দ্রের নতুন নির্দেশিকা দেখুন

0
2601

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লকডাউনে মদ বিক্রি করা যাবে কি যাবে না তা নিয়ে গোড়া থেকেই ধোঁয়াশা ছিল। বিশেষ করে কেরল, পাঞ্জাবের মতো কিছু রাজ্য হোম ডেলিভারি ব্যবস্থা চালু করে দেওয়ায় অন্য রাজ্য থেকেও দাবি উঠেছিল।

কিন্তু বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দেওয়া হল, লকডাউন চলাকালীন মদ বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে। যে হেতু বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের আওতায় কেন্দ্র এই নির্দেশ জারি করেছে, তাই তা সব রাজ্যকেই বলবৎ করতে হবে।


কয়েক দিন আগেই দেখা গিয়েছিল, লকডাউনে অসমে মদ বিক্রিতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে বিজেপি সরকার সেই ছাড় দিতেই মদের দোকানের বাইরে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। শহর এলাকায় সোশাল ডিস্টেন্সিং বজায় থাকলেও শহরতলি বা জেলায় কেউই তার তোয়াক্কা করেনি। ফলে এ ব্যাপারে আর কোনও বিভ্রান্তি বা যদি-কিন্তুর অবসর না রেখে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল কেন্দ্র।

পর্যবেক্ষকদের অনেকে অবশ্য মনে করছেন, এই ঘোষণার ফলে দোকান থেকে মদ বিক্রি হবে না ঠিকই। কিন্তু লুকিয়ে, চোরাপথে মদ বিক্রির আশঙ্কা বেড়ে গেল। তা ছাড়া অনেকের এও মত হল, সরকার নিয়ন্ত্রিত ভাবে মদ বিক্রিতে ছাড় দিতে পারত। কারণ, প্রায় সব রাজ্য সরকারেরই রাজস্ব আদায়ের একটা বড় অংশ আসে মদ বিক্রি থেকে। লকডাউনের ফলে এমনিতে রাজ্যগুলির রাজস্ব সংকট তৈরি হয়েছে।

মদ বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ থাকলে আরও ক্ষতি হবে।
তবে নর্থ ব্লকের কর্তাদের বক্তব্য, লকডাউনের উদ্দেশ্য হল সংক্রমণ যাতে আর না ছড়ায় তার ব্যবস্থা করা। যথা সম্ভব সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করে দেওয়া। তাতে খুব বেশি ছাড় দিলে লকডাউনের উদ্দেশ্যই সিদ্ধ হবে না। এমনিতেই যা আর্থিক ক্ষতি হওয়ার তা হয়েছে। আরও উনিশ দিন মদ বিক্রি বন্ধ থাকলে বাড়তি সংকট হবে না।

করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়িয়েছে কেন্দ্র। আপাতত ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে এই লকডাউনের মেয়াদ। এই পরিস্থিতিতে কী কী করা যাবে, আর কী কী করা যাবে না, তা নিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই নির্দেশিকায় পাবলিক স্পেস, ওয়ার্ক স্পেস ও উৎপাদনকারী সংস্থাতে কী কী সতর্কতা নিতে হবে তা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।

পাবলিক স্পেসে কী ধরনের সতর্কতা নিতে হবে

বর্তমানে করোনা সংক্রমণ রুখতে পাবলিক স্পেস বা প্রকাশ্যে সবথেকে বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। এই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে

  • রাস্তায় বেরলেই মুখ ঢাকতে হবে। কাজের জায়গাতেও যেন কোনওভাবেই নাক-মুখ খোলা না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • যাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত কিংবা পরিবহণের দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে, যেভাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক নির্দেশ দিয়েছে, সেভাবে যেন সামাজিক দূরত্ব সবসময় বজায় থাকে।
  • প্রকাশ্যে কোথাও যাতে ৫ জনের বেশি জমায়েত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান, যেমন বিয়ে কিংবা শ্রাদ্ধর ব্যাপারে জেলাশাসক নজর রাখবেন। তাই এই ধরনের কোনও অনুষ্ঠান হলে জেলাশাসককে খবর দিতে হবে।
  • প্রকাশ্যে থুতু ফেলা দন্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচনা করা হবে।
  • মদ, গুটখা কিংবা তামাক জাতীয় দ্রব্য বিক্রি করার ক্ষেত্রে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
  • প্রত্যেকটি অফিসে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যানিটাইজারেরও ব্যবস্থা করতে হবে।
  • কাজের জায়গায় একটা শিফটের সঙ্গে অন্য শিফটের অন্তত ১ ঘণ্টা পার্থক্য থাকতে হবে। লাঞ্চের সময়েও যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • ৬৫ বছরের বেশি বয়সের বৃদ্ধ ও যাঁদের হৃদযন্ত্র, ফুসফুস বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা বাড়ি থেকে কাজ করলেই ভাল।
  • সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের কর্মচারীদের আরোগ্য সেতু অ্যাপ ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
  • প্রত্যেকটি শিফটের আগে কাজের জায়গা যাতে ভাল করে স্যানিটাইজ করা হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • বেশি কর্মীদের নিয়ে বৈঠক এড়াতে হবে
  • উৎপাদনকারী সংস্থাতে কী সতর্কতা নিতে হবে
  • মাঝেমধ্যেই কারখানা পরিষ্কার করতে হবে। কর্মীদের নির্দেশ দিতে হবে মাঝেমধ্যেই হাত ধোয়ার।
    • কোনওভাবেই যেন এক শিফটের সঙ্গে অন্য শিফট মিলে না যায়। লাঞ্চের সময়েও যাতে ক্যান্টিনে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
    • যাতে কর্মীরা নিজেদের ও পরিবারের শরীর ভাল রাখেন, সেই ব্যাপারে তাঁদের ট্রেনিং দিতে হবে।
Previous articleলকডাউনের মধ্যেই ২০ এপ্রিল থেকে ছাড় মিলবে কৃষি সহ বেশকিছু ক্ষেত্রে,জানুন কেন্দ্রের নির্দেশিকা
Next articleসীমান্ত লাগোয়া অবরুদ্ধ গ্রামে ত্রাণের আশ্বাস নিয়ে পৌঁছলেন দুই মন্ত্রী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here