দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যে নতুন করে আরও ১১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৯ জন। শনিবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে এই তথ্য জানান রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। এর পাশাপাশি রাজ্য সরকার করোনা মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তাও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, এ রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
মুখ্যসচিব বলেন—
• করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে ৭ পরীক্ষা কেন্দ্র
• এর মধ্যে ৫টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি পরীক্ষা কেন্দ্র
• রাজ্যে ৫০ হাজার মাস্ক বিতরণ করা হবে
• কলকাতার ৪ ও রাজ্যের ৫৫ হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা হবে
• রাজ্যে ৫০ হাজারের বেশি হোম কোয়রান্টিনে রয়েছেন
• রাজ্যে মোট ৫১৬টি কোয়রান্টিন সেন্টার খোলা হয়েছে
• সরকারি কোয়রান্টিনে রয়েছেন ২ হাজার ৬২৬ জন
• ৩ হাজার ৩৬ জন হোম কোয়রান্টিন থেকে মুক্ত
• প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, তা কার্যকরী করাই লক্ষ্য
• প্রতি দিন সাংবাদিক বৈঠক হবে
• আমাদের সংখ্যা দেখবেন না কেন্দ্রীয় সরকারের সংখ্যা মানবেন তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।
স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন—
যে সব করোনা রোগীরা চিকিৎসাধীন তাঁরা কেউ আশঙ্কাজনক অবস্থায় নেই
• চিকিৎসকরা বিষয়টি হাল্কাভাবে দেখছেন না
• করোনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা জটিলতা নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন
• যাঁরা অন্যান্য অসুখে ভুগছেন তাঁদের সতর্ক থাকতে হবে
• রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে
• আক্রান্তের না বাড়াটাই অস্বাভাবিক
রাজ্যে এখন করোনা অ্যাক্টিভের সংখ্যা ৪৯ জন। অর্থাৎ মোট ৪৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস সক্রিয় রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যা ৮ থেকে ১১ বেড়ে হয়েছে ৪৯। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জন হলেন কালিম্পংয়ের একটি পরিবারের সদস্য। বাকি ৫ জন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দা। শনিবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই তথ্য দিয়েছেন মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা।
তিনি আরো জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে রাজ্যে ৫টি সরকারি ও দু’টি বেসরাকারি পরীক্ষাকেন্দ্রে নমুনা পরীক্ষা চলছে। রাজ্যে ৫১৬টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হয়েছে। শীঘ্রই আরও ৫০ হাজার মাস্ক সরবহার করা হবে। মুখ্যসচিব আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত কারও মৃত্যু হয়নি। হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ৩ হাজার ৩৬ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারি কোয়ারেন্টাইন থেকে ৩ হাজার ৩৮৬ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
নবান্ন এই পরিসংখ্যান দিলেও গতকাল রাতে ও আজ সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিন জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬৩ জন। এ ব্যাপারে মুখ্যসচিবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি বলছি, আজ ১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন, অতএব এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত অ্যাকটিভ ৪৯ জন এবং গত ২৪ ঘন্টায় কারও মৃত্যু হয়নি অর্থাৎ রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ৩। এবার আপনি আমাদেরটা মানবেন নাকি অন্যটা (কেন্দ্রীয় সরকার) মানবেন সেটা আপনার ইচ্ছে।”
এর পরে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে প্রশ্ন করা হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েবসাইটে যে তথ্য দিচ্ছে তার সঙ্গে রাজ্যের তথ্য মিলছে না। তবে কি কেন্দ্র রাজ্যের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়িয়ে দেখাচ্ছে? আপনারা কি এর জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলবেন? জবাবে মুখ্যসচিব বলেন, “কেউ বাড়িয়ে দেখাচ্ছে বা কমিয়ে দেখাচ্ছে এমনটা হচ্ছে না। কমিয়ে বা বাড়িয়ে দেখানোর কোনও বিষয় নেই। আমি মনে করি না কেউ কমিয়ে বা বাড়িয়ে দেখায়। আপনারা যখন বলছেন তখন, আমাদের রাজ্যের পক্ষে যাঁরা বুলেটিন পাঠান তাঁদের সঙ্গে আমি কথা বলব।”
করোনা সংক্রমণ নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে বুলেটিন প্রকাশ করে গত ক’দিন সেটা বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মুখ্যসচিব বলেন, সেটা যাতে নিয়মিত প্রকাশ করা হয় সেটা তিনি দেখবেন।